কুলদীপ যাদব। —ফাইল চিত্র।
এক বার বলছেন বিশ্বকাপে পাশে চাই যুজবেন্দ্র চহালকে, আবার বলছেন রবীন্দ্র জাডেজাকেই পছন্দ। শেষ পর্যন্ত কুলদীপ যাদব বিশ্বকাপে কাকে পাশে পাবেন, নির্বাচকেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তার থেকেও বড় প্রশ্ন, কুলদীপ নিজে কি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাবেন?
বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে জুটিতে সাত উইকেট তুলে নিয়েছেন কুলদীপ। প্রথম একদিনের ম্যাচে ভারতকে জেতানোর পরেই আড্ডা মারতে বসে যান দুই স্পিনার। সেখানেই কুলদীপ জানিয়ে দেন, আগামী দিনেও এই ভাবেই জুটি বেঁধে বিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে চাইছেন তিনি। কুলদীপ বলেন, “আশা করব আগামী দিনেও আমরা এই ভাবে বল করব এবং জুটিতে উইকেট নেব।”
তার আগে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কিন্তু কুলদীপ বলেছিলেন, চহালের মতো সিনিয়র পাশে থাকলে অনেক সুবিধা হয়। দরকারে পরামর্শ পাওয়া যায়। তখন কুলদীপের বক্তব্য ছিল, ‘‘আমরা (তিনি ও চহাল) পাঁচ-ছ’বছর একসঙ্গে খেলেছি। একসঙ্গে খেলে ভাল ফল পেয়েছি। আমরা পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করি।’’
‘কুল-জা’ (কুলদীপ-জাডেজা) জুটির আড্ডার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেখানে জাডেজাও বলেন, তিনি খুশি কুলদীপের সঙ্গে বল করে। তিনি বলেন, “আমরা বুঝতে পারছিলাম এই পিচে স্পিনারেরা সাহায্য পাবে। এক জন স্পিনার বল করতে শুরু করলেই সেটা বুঝতে পারে। নিজেরা ব্যাট করার সময়ও বুঝতে পারছিলাম যে, এই পিচে ব্যাট করা কতটা কঠিন। বল ঠিক মতো ব্যাটে আসছিল না, প্রচণ্ড স্পিন করছিল। তাই আমাদের দু’জনের বোলিং আক্রমণ আরও শক্তিশালী হয়ে গিয়েছিল। জুটিতে উইকেট তুলছিলাম আমরা।”
কুলদীপের চুলের স্টাইলের প্রশংসা করেন জাডেজা। কুলদীপ বলেন, “আমি জাডেজার ভক্ত। ওর থেকেই শিখেছি চুলের এই স্টাইল। আমার খুব প্রিয় মানুষ ও।” বৃহস্পতিবার তাঁরা দু’জন মিলে সাতটি উইকেট নেন। এক দিনের ক্রিকেটে একটি ম্যাচে ভারতের বাঁহাতি স্পিনার জুটির এটাই সেরা বোলিং। কুলদীপকে জাডেজা বলেন, “বোলিং করতে এসেই ঝটপট চার উইকেট তুলে নিলে। মাত্র তিন ওভারে কাজ শেষ।” কুলদীপ হাসতে হাসতে কৃতিত্ব দেন বাকি বোলারদের। তিনি বলেন, “পেসারেরা শুরুটা খুব ভাল করেছিল। প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে মুকেশ (কুমার) খুব ভাল বল করল। তুমি এসে উইকেট নিতে শুরু করে দিলে। আমিও তাই এসে যে ক’টা উইকেট পড়েছিল, তুলে নিলাম। জুটিতে যেমন বোলিং হওয়া উচিত, তেমনই হয়েছে।”
শুধু নিজেদের বোলিং নয়, বিরাট কোহলির ক্যাচেরও প্রশংসা শোনা যায় ‘কুল-জা’ জুটির মুখে। জাডেজার বলে রোমারিয়ো শেফার্ডের ক্যাচ নিয়েছিলেন বিরাট। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়িয়েছিলেন। এক হাতে ক্যাচ ধরেন তিনি। খুব নিচু বল যে ভাবে ধরলেন, তা বিরাটের পক্ষেই সম্ভব বলে মনে করছেন জাডেজা। তিনি বলেন, “অন্যেরা বল করার সময় আমি ক্যাচ নিই। বিরাটকে আমার বলে এমন ক্যাচ ধরতে দেখে দারুণ লাগল। দুর্দান্ত ক্যাচ ছিল। শুভমনও খুব ভাল ক্যাচ নিয়েছে।”
জাডেজা শুধু বল হাতে নয়, ব্যাট হাতেও ভারতীয় দলে বড় ভূমিকা নেন। তাঁর জায়গা দলে পাকা। দ্বিতীয় স্পিনার হিসাবে লড়াই চলছে কুলদীপ, চহাল এবং অক্ষর পটেলের মধ্যে। কুলদীপ যদি প্রতি ম্যাচেই এই ভাবে উইকেট নেন তাহলে বাকিদের বেশ চাপে ফেলে দেবেন। যদিও কুলদীপ মনে করেন তাঁর সঙ্গে চহালের দলে ঢোকা নিয়ে কোনও লড়াই নেই। তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতা থাকা সব সময় ভাল। আমার সঙ্গে চহালের একটা প্রতিযোগিতা রয়েছে। বিশেষ করে এক দিনের ক্রিকেটে। আমরা অবশ্য এটা নিয়ে ভাবি না। আমরা এক সঙ্গে অনুশীলন করি। আলোচনা করি। চহালের মতো সিনিয়র পাশে থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আমাকে প্রচুর পরামর্শ দেয় চহাল। বিশ্বকাপের দলে থাকা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনও লড়াই নেই।” কুলদীপ না মানলেও এই ‘কুল-চা’ জুটির সঙ্গে এখন বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার লড়াই চলছে ‘কুল-জা’ জুটির।