সাক্ষী ধোনি। —ফাইল ছবি
তাঁর জীবনে ব্যক্তিগত পরিসর বলে না কি কিছু নেই। মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে বিয়ে করে কি তবে খুশি নন সাক্ষী ধোনি? জীবন কি তাঁর কাছে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে?
সাক্ষীর কথা শুনে এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে ধোনি ভক্তদের। কারণ, সাক্ষী বলেছেন ভারতে কোনও ক্রিকেটারের স্ত্রী হওয়া মোটেই সহজ নয়। ব্যক্তিগত পরিসর বলে কিছুই থাকে না জীবনে। সাধারণত পারিবারিক জীবন নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেন না ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। নেট মাধ্যমেও অন্য ক্রিকেটারদের মতো দারুণ সক্রিয় নন। ক্রিকেটের বাইরের জীবনকে আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন তিনি। ধোনির ড্রয়িং রুমের খবর যেটুকু পাওয়া যায়, তা সাক্ষীর সৌজন্যেই।
না, স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই সাক্ষীর। তিনি আসলে ক্রিকেটারদের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার বিড়ম্বনার দিকেই আঙুল তুলেছেন। সর্বক্ষণ ক্যামেরার নজরে থাকা, সংবাদ মাধ্যমের আগ্রহ, পরিজনদের ছেড়ে লম্বা লম্বা সফর প্রতিদিনের জীবনকে প্রভাবিত করে বলেই মনে করেন সাক্ষী। তাঁর মতে ভারতে কোনও জনপ্রিয় ক্রিকেটারের জীবনসঙ্গী হওয়া রীতিমতো চ্যালেঞ্জের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সময় ধোনির সঙ্গে প্রায়শই সফর করতেন সাক্ষী। কোনও ক্রিকেটারের স্ত্রী হওয়া এবং এক জন অন্য পেশাদারের স্ত্রী হওয়ার মধ্যে পার্থক্যকেই বোঝাতে চেয়েছন সাক্ষী। তাঁর মতে ভারতে জনপ্রিয় ক্রিকেটারের স্ত্রী হতে গেলে অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হয়। স্বামীকে যতটা সম্ভব চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হয় প্রতিনিয়ত। স্বামীকে নিয়ে গর্বিত সাক্ষী বলেছেন, ‘‘আমরা খুবই গর্বিত যে ওরা এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, যে লক্ষ লক্ষ মানুষ ওদের পছন্দ করেন। ওরা এমন একটা খেলার সঙ্গে জড়িত যেটা অসংখ্য মানুষ ভালবাসেন। বিশেষ করে ভারতে তো বটেই।’’
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ধোনি। এখন শুধু আইপিএল খেলেন। এ বারও তিনি চেন্নাই সুপার কিংসকে নেতৃত্ব দেবেন। আইপিএল-এর এই ফ্র্যাঞ্চাইজিই দলের ক্রিকেটারদের স্ত্রীদের নিয়ে নেট মাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। সেখানেই সাক্ষী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।
সাক্ষীর মতে, যে কোনও খ্যাতনামীর জীবনেই গোপনীয়তা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। জানিয়েছেন বাড়ির বাইরে পা রাখলেই ব্যক্তিগত পরিসর বলে কিছু থাকে না। বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে গেলে পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতো কাটানোর চেষ্টা করলেও সম্ভব হয় না। এ নিয়ে সাক্ষী বলেছেন, ‘‘বাড়ির বাইরে ব্যক্তিগত পরিসর বলেই কিছুই থাকে না। আপনি জানবেনও না কতগুলি ক্যামেরা রয়েছে আপনার চার দিকে। অনেকেই ক্যামেরার সামনে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু সবাই স্বচ্ছন্দ নাও হতে পারে। বিশেষ করে করে প্রকাশ্যে এটা কেউ পছন্দ নাও করতে পারে। তা ছাড়া ক্রিকেটারের স্ত্রী হলে মানুষ সব সময় আপনার সবকিছু বিচার করতে চাইবে। এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও গল্প করলেও মানুষ তা নিয়ে কথা বলবে!’’
আসন্ন আইপিএল-এও ধোনির সঙ্গেই থাকবেন সাক্ষী। স্টেডিয়ামে খেলা দেখতেও যাবেন। নিজের স্বামী এবং সিএসকে-কে উৎসাহ দেবেন। ফলে আবারও ক্যামেরা বন্দি হতে হবে তাঁকে। মাঠে ধোনি এবং সিএসকে-র সাফল্যের সঙ্গেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে সাক্ষীর অস্বস্তি এবং বিড়ম্বনা! উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ধোনির সঙ্গে বিয়ে হয় সাক্ষীর।