(বাঁদিকে) কুলদীপ এবং চহাল। ছবি: টুইটার।
চার মাস পর এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেই চার উইকেট কুলদীপ যাদবের। আসন্ন এক দিনের বিশ্বকাপের দলে থাকার দাবি প্রথম সুযোগেই জোরালো করলেন কুলদীপ। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন ২৮ বছরের বোলার কঠিন লড়াইয়ে ফেলে দিলেন যুজবেন্দ্র চহালকে। তবু বিশ্বকাপে সেই চহালকেই পাশে চাইছেন কুলদীপ। নিজের সাফল্যের কারণও জানিয়েছেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে প্রথম এক দিনের ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনারের বোলিং বিশ্লেষণ ৩-২-৬-৪ (তিন ওভার বল করে দু’টি মেডেন, ছ’রান দিয়ে চার উইকেট)। কতটা দাপুটে বোলিং করেছেন, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। ফর্ম ধরে রাখতে পারলে তাঁকে বাদ দিয়ে বিশ্বকাপের দল নির্বাচন করা কঠিন। কমতে পারে চহালের দলে থাকার সম্ভাবনা। যিনি আবার তাঁর প্রিয় বন্ধু। চহালের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা মানছেন না কুলদীপ। যদিও জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছে সুস্থ প্রতিযোগিতা।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পাওয়া কুলদীপ বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতা থাকা সব সময় ভাল। আমার সঙ্গে চহালের একটা প্রতিযোগিতা রয়েছে। বিশেষ করে এক দিনের ক্রিকেটে। আমরা অবশ্য এটা নিয়ে ভাবি না। আমরা এক সঙ্গে অনুশীলন করি। আলোচনা করি। চহালের মতো সিনিয়র পাশে থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আমাকে প্রচুর পরামর্শ দেয় চহাল। আমরা পাঁচ-ছ’বছর একসঙ্গে খেলেছি। একসঙ্গে খেলে ভাল ফল পেয়েছি। আমরা পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করি। বিশ্বকাপের দলে থাকা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনও লড়াই নেই।’’
ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা একটা সময় স্বপ্ন দেখতেন ‘কুল-চা’ জুটিকে নিয়ে। ফর্ম হারিয়ে মাঝে পিছিয়ে গিয়েছিলেন কুলদীপ। সাদা বলের ক্রিকেটে প্রথম একাদশে অনিয়মিত হয়ে গিয়েছেন চহালও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফরে দু’জনেই দলে রয়েছেন। প্রথম ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে চহালকে কিছুটা হলেও লড়াইয়ে ফেলে দিয়েছেন কুলদীপ। কী ভাবে এই সাফল্য? কুলদীপ বলেছেন, ‘‘বোলিংয়ের ছন্দ নিয়ে দু’বছর ধরে কাজ করেছি। এখন যে ছন্দে বল করছি, সেটা উপভোগ করছি। বলের গতি সামান্য বাড়িয়েছি। ভাল স্পিন করাচ্ছি। গতি এবং স্পিনের মিশেল কার্যকর হচ্ছে। সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটারেরা আমার বল সহজে মারতে পারছে না। বলের লেংথ ঠিক রাখার চেষ্টা করি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘রবীন্দ্র জাডেজা আর আমি উইকেটের সঠিক জায়গায় বল রাখার চেষ্টা করেছি। গত দেড় বছর যে ভাবে বল করছি, ঠিক সে ভাবেই বল করেছি। উইকেট নিয়ে বেশি না ভেবে ঠিক মতো বল করতে পারলে ভাল ফল আশা করাই যায়।’’
বৃহস্পতিবারের পারফরম্যান্স নিয়ে কুলদীপ বলেন, ‘‘অনেকে বলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের উইকেট জোরে বোলারদের স্বর্গ। অথচ আমরা দুই স্পিনার সাত উইকেট নিলাম। ওদের স্পিনারেরাও তিন উইকেট পেয়েছে। উইকেটে স্পিন ছিল। অল্প বাউন্স ছিল। বল করে দারুণ লেগেছে।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে কুলদীপ এবং জাডেজা মিলে নিয়েছেন সাত উইকেট। তবু দলের জোরে বোলারদের প্রশংসা করেছেন বাঁহাতি স্পিনার। কুলদীপ বলেছেন, ‘‘নতুন বলে আমাদের জোরে বোলারেরা দারুণ বল করেছে। মুকেশ কুমার, শার্দূল ঠাকুর এবং হার্দিক পাণ্ড্য দারুণ শুরু করেছিল। উমরান মালিক কয়েক ওভার দুর্দান্ত গতিতে বল করেছে। ওরাই আমাদের কাজ সহজ করে দিয়েছিল। উইকেটে বল ঘুরছিল। আমরা শুধু সঠিক লেংথে বল ফেলার চেষ্টা করেছি। একটা সমস্যাও হয়েছে। খুব জোরে হাওয়া দিচ্ছিল। আমরা মানিয়ে নিতে পেরেছি। সব মিলিয়ে ভাল ফল হয়েছে।’’ কুলদীপের মতে, বৃহস্পতিবারের ম্যাচের সাফল্য আসলে দলগত প্রচেষ্টার ফল।