রবিকে ঘিরে কোহলীদের উচ্ছ্বাস ছবি টুইটার
শেষ ওভার পর্যন্ত নাটক। এক সময়ে ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা ম্যাচ গড়াল শেষ ওভার পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি ভারতেরই। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিল রোহিত শর্মার ভারত। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাল ৮ রানে।
হর্ষল পটেলের শেষ ওভার দেখে এক সময়ে মনে হয়েছিল, ২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই রাত ফিরে আসবে না তো? সে বার বেন স্টোকসকে শেষ ওভারে চারটি ছক্কা মেরে দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। শুক্রবার সে রকমই মনে হচ্ছিল রভম্যান পাওয়েলকে। শেষ ওভারে ২৫ রান দরকার ছিল। এমন অবস্থায় তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে দেন পাওয়েল। কিন্তু বুদ্ধিমান হর্ষল পঞ্চম বলে স্লোয়ার দেন। পাওয়েল এক রানের বেশি নিতে পারেননি। ওখানেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
শুক্রবার শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি ভারতের। প্রথম থেকেই বড্ড বেশি বল নিচ্ছিলেন ঈশান কিশন। ক্রিজে মোটেই স্বচ্ছন্দে লাগছিল না তাঁকে। দ্বিতীয় ওভারে শেলডন কটরেলের বিরুদ্ধে একটি ক্যাচের আবেদন নাকচ করে ডিআরএস। পরের বলেই ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় আকাশে। সেই ক্যাচ ধরতে অসুবিধা হয়নি কাইল মেয়ার্সের।
ব্যাট করতে আসেন বিরাট কোহলী। শুরু থেকেই যথেষ্ট আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছিলেন রোহিতও। কিন্তু ভারত অধিনায়ককে ফিরতে হল অনেকটা ঈশানের মতোই আউট হয়ে। তাঁরও ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায়। ক্যাচ ধরেন ব্রেন্ডন কিং। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সূর্যকুমার যাদবও। ৮ রানের মাথায় তাঁকে ফেরান রস্টন চেজ।
কিন্তু উল্টোদিকে দায়িত্ব নিয়ে নিজের ইনিংস গড়ার কাজ করছিলেন কোহলী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের উপর চড়াও হচ্ছিলেন তিনি। ব্যাট থেকে বেরল কিছু দর্শনীয় শট। ইডেনের সামান্য দর্শকের মন কেড়ে নিলেন কোহলী। ছক্কা মেরে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করলেন। এরপরেই সামান্য মনোযোগের বিচ্যুতিতে উইকেট খোয়ালেন। রস্টনের বল যে এতটা ভেতরে ঢুকে আসবে তা কোহলী বুঝতে পারেননি। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে গলে যাওয়া বল স্টাম্প ভেঙে দিল।
ভারত যে তারপরেও লড়াকু রান তুলল, তার পিছনে অবদান ঋষভ পন্থ এবং বেঙ্কটেশ আয়ারের। আইপিএল-এ কলকাতার হয়ে খেললেও ইডেন গার্ডেন্সের স্বাদ পাননি বেঙ্কটেশ। শুক্রবার বুঝলেন ইডেনের জনতা কতটা আন্তরিক হতে পারে। তাঁর প্রতিটা শটের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন সমর্থকরা। সমর্থন পেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলে বেঙ্কটেশও। পন্থও নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেললেন। ঝোড়ো ২৮ বলে ৫২ রানের ইনিংস ভারতকে পৌঁছে দিল ১৮৬ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম পাঁচ ওভারে উইকেট হারায়নি। কিন্তু যুজবেন্দ্র চহাল প্রথম ধাক্কা দেন। ফেরান মেয়ার্সকে। কয়েক ওভার পরেই বল করতে এসেই রবি বিষ্ণোই ফেরান ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা ব্রেন্ডনকে।
এরপর থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের দাপট শুরু হয়। তার মূলে নিকোলাস পুরান এবং রভম্যান পাওয়েল। সম্প্রতি দু’জনেই আইপিএল নিলামে মোটা দামে বিক্রি হয়েছেন। সেই ছন্দই যেন মাঠে দেখা গেল। তৃতীয় উইকেটে ১০০ রান যোগ করলেন দু’জনে। কোনও ভারতীয় বোলারই তাঁদের সামনে টিকতে পারছিলেন না। এ সময় পুরানের ক্যাচও পড়ে। শেষ পর্যন্ত পুরানকে ফেরান ভুবনেশ্বর। পাওয়েল শেষ চেষ্টা করলেও দলকে জেতাতে পারেননি।
ভারতের ম্যাচ জেতার পিছনে আসল কাণ্ডারি ভুবনেশ্বর কুমারই। ১৯তম ওভারে এসে চার রান দেন। সঙ্গে তুলে নেন পুরানের উইকেট। ওখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।