শনিবার অর্ধশতরানের পর শ্রেয়স। ছবি পিটিআই
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে গত দু’-তিন বছর ধরেই নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু টেস্ট দলে সুযোগই মিলছিল না। যখন মিলল, সেটাকে দু’হাত বাড়িয়ে কাজে লাগালেন শ্রেয়স আয়ার। অজিঙ্ক রহাণে, চেতেশ্বর পুজারা-হীন ভারতের টেস্ট দলে ক্রমশ নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন শ্রেয়স।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত বছর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে অভিষেক হয়েছিল শ্রেয়সের। আবির্ভাবকে স্মরণীয় করে রাখেন প্রথম ইনিংসে দুরন্ত শতরান করে। বাঘা বাঘা কিউয়ি বোলারকে সামলে তাঁর শতরান মন কেড়েছিল সমর্থকদের। তাতেই থামেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে অর্ধশতরান করেন। টেস্টজীবনের প্রথম ম্যাচেই সেরার খেতাব পকেটে পুরে নেন মুম্বইয়ের এই ক্রিকেটার।
তার পর থেকে প্রতি ম্যাচেই নিয়ম করে তাঁর ব্যাট চলছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এক দিনের সিরিজে সে ভাবে সফল না হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কা সিরিজে দুর্দান্ত খেলেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অর্ধশতরান করে চুনকাম করতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। ছন্দ বজায় রয়েছে টেস্টেও। প্রথম টেস্টে মাত্র ২৭ রান করে আউট হয়ে যান। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর ব্যাটিং আবারও আলোচনার কেন্দ্রে।
বেঙ্গালুরুতে শনিবার থেকে শুরু হওয়া গোলাপি বলের টেস্টে দুর্বল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই নড়বড়ে লাগছিল রোহিত শর্মাদের। ১০ ওভারের মধ্যেই ফিরে যান ভারতের দুই ওপেনার। ২৮তম ওভারে বিরাট কোহলী আউট হওয়ার পর নামেন শ্রেয়স। গোটা পিচে শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের সামলে কার্যত হাঁসফাঁস করেছেন ভারতের ব্যাটাররা। শ্রেয়স কিন্তু সেখানে অবিচল ছিলেন। শ্রীলঙ্কার কোনও বোলারই তাঁকে সে ভাবে চাপে ফেলতে পারেননি। ঠান্ডা মাথায়, ধীরস্থির ভঙ্গিতে নিজের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক।
প্রথম থেকেই তিনি সম্ভবত বুঝতে পেরেছিলেন, এই উইকেটে টিকে থাকার মনোভাব নিয়ে খেলতে গেলে বেশি রান করতে পারবেন না। দলের রানও বাড়বে না। তাই রক্ষণাত্মক মনোভাব না নিয়ে শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরিকল্পনা কাজেও দেয়। বাকি ব্যাটারদের চাপে রাখতে পারলেও প্রথম দিকে ঋষভ পন্থ এবং পরের দিকে শ্রেয়সকে থামানোর কোনও উপায় খুঁজে পাননি লাসিথ এমবুলডেনিয়া, প্রবীণ জয়বিক্রমরা।
একটা সময়ে মাঝের সারির ব্যাটাররা মাঝে মধ্যে দেশ-বিদেশের মাটিতে ভারতকে চিন্তায় ফেলতেন। কিন্তু শ্রেয়স আসায় সেই সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হয়েছে। তিনে হনুমা বিহারিও দলকে নির্ভরতা দিয়েছেন। ফলে এটা বলাই যায়, ভারতীয় দলে ক্রমশ নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছেন শ্রেয়স।