আমদাবাদে টেস্টে অষ্টম দ্বিশতরান হাতছাড়া করলেন কোহলি। ছবি: বিসিসিআই
সেই টড মারফিকেই উইকেটটা উপহার দিলেন বিরাট কোহলি। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পড়ে ভিতরের দিকে আসা বলটাকে পুল না করলেও পারতেন কোহলি। ৩৬৪ বলের ইনিংসে একটাই বড় ভুল করলেন। তাতেই শেষ হয়ে গেল টেস্ট ক্রিকেটে কোহলির অষ্টম দ্বিশতরানের আশা।
আমদাবাদের জায়গা হল না দিল্লি, মুম্বই বা হায়দরাবাদের পাশে। জায়গা করে দিতে পারতেন কোহলি। ১৪ রানের জন্য পারলেন না। পিঠের চোটের জন্য ব্যাট করতে নামতে পারেননি শ্রেয়স আয়ার। আগ্রাসী হতে গিয়ে আউট হয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দৌড়ে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট উমেশ যাদবও। উইকেটের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখেছেন কোহলি। উমেশকে আউট হতে দেখে হেসেও ফেলেছেন। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়তো তখনই বুঝে গিয়েছিলেন, এ বার আর হল না।
সত্যিই হল না শেষ পর্যন্ত। মহম্মদ শামি বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের মতো রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করলেন। অচেনা শামিকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করল আমদাবাদের গ্যালারি। বাংলার জোরে বোলার চেয়েছিলেন। চেয়েছিল ভারতীয় সাজঘর। চেয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরাও। ১২০৫ দিন পর টেস্ট শতরান করা কোহলি মাঠ ছাড়ুন দ্বিশতরান করে। ক্রিকেট ঈশ্বর হয়তো চাননি এক বারেই সব কিছু দিতে। তাই ১৪ মাস পর অর্ধশতরান, ৪০ মাস পর শতরান। সে জন্যই হয়তো ৪১ মাস পর অষ্টম দ্বিশতরানটা চাননি তিনি। শনিবার থেকে ব্যাট করা কোহলি আমদাবাদের ২২ গজের প্রতিটি ইঞ্চির সঙ্গে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলীয় বোলারদের এক দমই বিপজ্জনক দেখাচ্ছিল না। মারফির যে বলে আউট হলেন, সেটাও ছিল নির্বিষ। মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। কোহলি সাজাতে পারলেন না দ্বিশতরানের আলোয়।
সাড়ে চারটে নাগাদ কোহলি গ্যালারির ক্রিকেটপ্রেমীদের অভিনন্দন কুড়িয়ে সাজঘরে ফিরলেন। তখন সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে। আর কিছু ক্ষণ পরেই দিনের মতো যুদ্ধ ঘোষণার সমাপ্তি ঘোষণা করতেন দুই আম্পায়ার। তবু ধৈর্য হারালেন প্রাক্তন অধিনায়ক। একটা বেহিসেবি শটে থমকে গেল হিসেব। টেস্ট ক্রিকেটে কোহলির দ্বিশতরানের সংখ্যা আটকে রইল সাতেই।
কোহলি প্রথম দ্বিশতরান করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের মাটিতে। ২০১৬ সালে ২০০ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন নর্থ সাউন্ডে। দ্বিতীয় দ্বিশতরান করেছিলেন একই বছরে ইনদওরে। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছিলেন ২১১ রান। তৃতীয় দ্বিশতরান ২০১৬ সালেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে। করেছিলেন ২৩৫ রান। চতুর্থ দ্বিশতরান ২০১৭ সালে। হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করেছিলেন ২০৪ রান। পঞ্চম দ্বিশতরান সে বছরই নাগপুরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। সেই ইনিংসে করেছিলেন ২১৩ রান। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পরের টেস্টেই কোহলির ব্যাট থেকে এসেছিল ষষ্ঠ দ্বিশতরানের ইনিংস। ঘরের মাঠ দিল্লিতে করেছিলেন ২৪৩ রান। সপ্তম দ্বিশতরান করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পুনেতে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে ২৫৪ রানের অপরাজিত সেই ইনিংসই টেস্টে কোহলির সর্বোচ্চ রান। অর্থাৎ, তাঁর সাতটি দ্বিশতরানের ছ’টিই দেশের মাটিতে।
রবিবার সুযোগ ছিল দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদের পাশে আমদাবাদকে জায়গা করে দেওয়ার। জায়গা করে দিতে পারতেন কোহলি। পারলেন না। বর্ডার-গাওস্কর সিরিজ়ে চতুর্থ বার আউট হয়ে গেলেন মারফির বলে।