যুযুধান: কার হাতে উঠবে কাপ? ফাইনালের আগে দুই নেতা। আইসিসি
আটবার ফাইনাল খেলে চারবার বিশ্বসেরা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ভারত। আজ, শনিবার স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে পঞ্চম খেতাবের লক্ষ্য নামছেন যশ ধুলরা। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। স্পিন অস্ত্রেই অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে সেমিফাইনালে ধরাশায়ী করেছে ভারতীয় দল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও একই মন্ত্রে বিশ্বাস রাখছেন যশ ধুলরা।
ফাইনালের দু’দিন আগে প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন যশরা। জ়ুম কলের মাধ্যমে বিরাটের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান ভিভিএস লক্ষ্মণ, যিনি এই মুহূর্তে দলের সঙ্গেই রয়েছেন অ্যান্টিগায়। ২০০৮ সালে ভারতীয় দলকে ট্রফি তুলে দেওয়া বিরাটের থেকে নানা মূল্যবান পরামর্শ পেয়ে চাঙ্গা ভারতীয় শিবির। সূত্রের খবর, যশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং বিরাট। তিনি যে ভাবে আগ্রাসী ভঙ্গি অবলম্বন করে দলকে নেতৃত্ব দিতেন, যশের মধ্যেও নাকি সেই আগ্রাসন খুঁজে পেয়েছেন। যদিও বর্তমান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক এমনিতে শান্ত। ঝলমলে সেঞ্চুরি উপহার দিয়ে সেমিফাইনালে কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে বার করে এনেছেন। তাঁর কাছ থেকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের আশায় রয়েছেন লক্ষ্মণরা। করোনা-জয়ী যশ এবং শেখ রশিদের ২০৪ রানের জুটির পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় ভারতীয় দল, সমর্থকেরাও।
ম্যাচের আগের দিন ইংল্যান্ডের প্রত্যেকটি ম্যাচের ভিডিয়ো দেখেন ক্রিকেটারেরা। তা দেখেই বুঝে ফেলেন, স্পিনের বিরুদ্ধে তারাও দুর্বল। তাই ভিকি অস্তোয়াল, কৌশল তাম্বে ও নিশান্ত সিন্ধুর কাঁধেই থাকছে ভারতকে জেতানোর মূল দায়িত্ব। সেই সঙ্গেই বঙ্গ-পেসার রবি কুমারের সুইং ও রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকরের গতি দিয়ে বিপক্ষকে চূর্ণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় দলের।
ভারতীয় ক্রিকেটারেরা ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছেন ক্রিকেটবিশ্বে। শেষ ম্যাচে যশ ধুল ও শেখ রশিদের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন মাইকেল ভন থেকে ব্র্যাড হগ। যুবরাজ সিংহও লিখেছেন, ‘‘কাপ এ বার নিয়ে ফেরো।’’ প্রাক্তন ক্রিকেটারদের প্রশংসায় উদ্বুদ্ধ প্রত্যেকে। শেষ ম্যাচ এমন ভাবে খেলতে চান, যাতে তাঁদের মনে রাখে ক্রিকেটবিশ্ব।
ভারতীয় ওপেনারদের শেষ ম্যাচের ভূমিকা নিয়ে যদিও সন্তুষ্ট নয় দল। অতি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করছিলেন অঙ্গক্রিশ রঘুবংশী ও হর্নুর সিংহ। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে তিনের আশেপাশে ছিল রানরেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দশ ওভারে দ্রুত রান তোলার লক্ষ্য রয়েছে ভারতীয় দলের। যাতে পরের দিকের ব্যাটাররা চাপে না পড়ে যান।
ইংল্যান্ড দলও অন্যতম শক্তিশালী। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে ২৪ বছর বিশ্বকাপ পায়নি তারা। সেমিফাইনালে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হারের মুখ থেকে ফিরে এসেছে ইংল্যান্ড। তার মূল কারণ ব্যাটিং বিপর্যয়। অধিনায়ক টম প্রেস্ট রান না পাওয়ায় দ্রুত উইকেট হারায় তারা। প্রেস্টই তাদের ব্যাটিং বিভাগের স্তম্ভ। এখনও পর্যন্ত ২৯২ রান করেছেন এই প্রতিযোগিতায়। বাঁ-হাতি পেসার জোশুয়া বোডেন পেয়েছেন ১৩টি উইকেট। ইংল্যান্ড শিবিরে তাঁরাই মুখ্য তারকা।
তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন রেহান আহমেদ। ইংল্যান্ডের লেগস্পিনার বিস্মিত করেছেন যুব ক্রিকেটারদের। তাঁর মূল শক্তি গুগলি। লেগস্পিন সে ভাবে ঘোরে না। রান আটকানোর ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের প্রধান অস্ত্র রেহান। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের নেটে বল করতে গিয়ে বেন স্টোকস, অ্যালেস্টেয়ার কুককে আউট করেছিলেন তিনি। আজ ভারতের বিরুদ্ধে দেশকে ট্রফি তুলে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নামছেন তিনিও। ট্রফি যে দলই পাক না কেন, বিশ্বকাপ জুড়ে সবচেয়ে বেশি প্রশিংসিত হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরাই। অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে অনেকেই ভবিষ্যতে সিনিয়র দলে সুযোগ পাবেন।