ম্যাঞ্চেস্টারের মাঠে শতরান পন্থের। ছবি: রয়টার্স
রোহিত শর্মা, শিখর ধবন, বিরাট কোহলীরা ব্যর্থ হলেই ম্যাচ হারবে ভারত! তরুণ ক্রিকেটাররা ভারতকে ম্যাচ জেতাতে পারেন না? সব সমালোচনার উত্তর দিলেন ঋষভ পন্থ। রবিবার ম্যাঞ্চেস্টারে তাঁর শতরান বুঝিয়ে দিল ভারতের পরের প্রজন্ম ম্যাচ জেতাতে জানে। সঙ্গী হলেন অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য। রবিবার ভারত জিতল পাঁচ উইকেটে। এক দিনের সিরিজে জয় ২-১ ব্যবধানে।
টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠান রোহিত। শূন্য রানে জনি বেয়ারস্টো এবং জো রুটকে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুটা ভালই করেছিলেন মহম্মদ সিরাজ। চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া যশপ্রীত বুমরার জায়গায় তাঁকে দলে নেয় ভারত। ইংল্যান্ডকে শুরুতে ধাক্কাটা দিয়েছিলেন তিনিই। শুরু থেকেই ম্যাঞ্চেস্টারের পিচে সুইং পাচ্ছিলেন সিরাজরা। মহম্মদ শামি যদিও উইকেট নিতে পারেননি। তাঁকে প্রথম ওভারেই তিনটি চার মারেন জেসন রয়।
বেন স্টোকস এবং জেসন রয় ইনিংস গড়ার কাজটা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ান হার্দিক পাণ্ড্য। দু’জনকেই ফিরিয়ে দেন তিনি। শর্ট বল করে ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের লোভ দেখান তিনি। তাতেই উইকেট দিয়ে বসেন স্টোকসরা। ইংল্যান্ডের প্রথম দিকের ব্যাটাররা দ্রুত ফিরে গেলেও অধিনায়ক জস বাটলার ক্রিজে আঁকড়ে পড়ে রইলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন মইন আলি। দু’জনে যোগ করেন ৭৫ রান। সেই জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁর বল বুঝতে না পেরে স্টাম্প হন মইন।
লিয়াম লিভিংস্টোন এবং জস বাটলারকে এক ওভারে ফেরান হার্দিক। শেষের দিকে ক্রেগ ওভারটন ৩২ রান করেন। যুজবেন্দ্র চহাল নেন তিন উইকেট। ২৫৯ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
সেই রান তাড়া করতে নেমে ভারতের প্রথম দিকের ব্যাটাররা ফের ব্যর্থ। ধবন আউট এক রানে। রোহিত এবং বিরাট দু’জনেই করেন ১৭ রান। তাঁদের তিন জনকেই ফিরিয়ে দেন রিচি টপলে। সূর্যকুমার যাদবও রান পাননি। তিনি ফেরেন ১৬ রানে। ৭২ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ভারত ফের এক বার হারের ভ্রূকুটি দেখতে শুরু করে দিয়েছিল। সেখান থেকে ভারতকে ম্যাচ জেতালেন হার্দিক পাণ্ড্য এবং ঋষভ পন্থ।
বল হাতে চার উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৫৫ বলে ৭১ রান হার্দিকের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অলরাউন্ডার হার্দিক ভারতের বড় সম্পদ হয়ে উঠছেন। দীর্ঘ দিন পিঠের চোটের জন্য বল করতে পারছিলেন না হার্দিক। তিনি নিয়মিত বল করলে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে ভারসাম্য আনতে পারেন তিনি। রবিবার পন্থের সঙ্গে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন হার্দিক। সেই জুটিই ভারতকে জয় এনে দেয়। হার্দিকের ইনিংস সাজানো ছিল ১০টি চার দিয়ে।
টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচটি শতরান করলেও এক দিনের ক্রিকেটে পন্থের এটাই প্রথম শতরান। সেই শতরান ভারতকে শুধু ম্যাচ নয়, সিরিজ জিতিয়ে দিল। ১১৩ বলে ১২৫ রান করে অপরাজিত রইলেন পন্থ। ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ১৬টি চার এবং দু’টি ছয় মারেন পন্থ। ডেভিড উইলিকে এক ওভারে পাঁচটি চার মেরে ৪২তম ওভারেই ম্যাচ প্রায় শেষ করে দিয়েছিলেন ভারতের উইকেটরক্ষক। শেষ বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক ধরে রাখেন। পরের ওভারের প্রথম বলে জো রুটকে চার মেরে ম্যাচ জেতান ভারতকে।