রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার থেকে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গোলাপি বলের টেস্ট খেলতে নামবে ভারত। দিন-রাতের এই টেস্টে কঠিন পরীক্ষা ভারতের। তিনটি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে রোহিত শর্মাদের সামনে। সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারলে তবেই সিরিজ়ে ২-০ এগোতে পারবে ভারত।
টেস্টে লাল বল ও গোলাপি বলের মধ্যে কিছুটা তফাত রয়েছে। টেস্টের আগের দিন রোহিতও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, গোলাপি বল সামলানো বেশি কঠিন। কিন্তু কেন? লাল বলের তুলনায় গোলাপি বলে সুইং, স্পিন সবই বেশি হয়।
আলোর নীচে বেশি সুইং— গোলাপি বলের উপর অতিরিক্ত পালিশ করা থাকে। তাই আলোর নীচে এই বলের সুইং লাল বলের তুলনায় বেশি হয়। তাই এক বার আলো জ্বলে যাওয়ার পর পেসারদের সামনে ব্যাট করা কঠিন। লাল বলে দিনের প্রথম এক বা দু’ঘণ্টা ব্যাট করা কঠিন। কিন্তু দিন-রাতের টেস্টে নতুন বল সামলে নেওয়ার পরেও দ্বিতীয় ও ত়ৃতীয় সেশনে ব্যাট করা কঠিন হয়। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের সামনে সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে বিরাট কোহলিদের।
স্পিনারদের বল গ্রিপ করার সমস্যা— গোলাপি বল পেসারদের যতটা সুবিধা দেয়, স্পিনারদের পক্ষে কাজ ততটাই কঠিন করে দেয়। বলের পালিশ বেশি থাকায় স্পিনারেরা বল গ্রিপ করতে সমস্যায় পড়েন। ভারতের বোলিং আক্রমণে স্পিনের গুরুত্ব রয়েছে। তাই ওয়াশিংটন সুন্দর, রবিচন্দ্রন অশ্বিন বা রবীন্দ্র জাডেজাদের অ্যাডিলেডে বল করতে সমস্যা হবে। সেই চ্যালেঞ্জ তাঁদের সামলাতে হবে।
বল দেখতে সমস্যা— বলের রং গোলাপি। টেস্টে সাধারণত লাল বলে খেলার অভ্যাস থাকে ব্যাটারদের। সাদা সাইট স্ক্রিন থাকে সামনে। গোলাপি বলেও সাইট স্ক্রিন সাদা থাকে। কিন্তু আলোর নীচে গোলাপি বলের নড়াচড়া ধরতে সমস্যা হয় ব্যাটারদের। সেই একই সমস্যায় পড়েন আম্পায়ারেরাও। তাই তাঁদের কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে আরও সতর্ক থাকতে হয়।
পালিশ বেশি থাকায় গোলাপি বল পুরনো হতে সময় লাগে। টেস্টে বল পুরনো হয়ে গেলে ব্যাটারদের খেলতে সুবিধা হয়। পাশাপাশি পুরনো বলে স্পিনারের বেশি কার্যকরী হন। কিন্তু গোলাপি বলে তা কম হয়। পাশাপাশি গোলাপি বলের ওজন লাল বলের থেকে কিছুটা বেশি হয়। এই সব কারণ ব্যাটারদের বিপক্ষে যায়। সেই কারণে, গোলাপি বলের ক্ষেত্রে ম্যাচের ফলাফল অনেক বেশি হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তিন দিনের মধ্যে খেলার ফয়সালা হয়ে যাচ্ছে।
গোলাপি বলে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড খুব ভাল। ঘরের মাঠে এখনও পর্যন্ত একটি দিন-রাতের টেস্টও তারা হারেনি। উল্টে ভারত এখনও পর্যন্ত মোট চারটি দিন-রাতের টেস্ট খেলেছে। দেশের মাটিতে খেলা তিনটি টেস্ট জিতলেও গত সফরে এই অ্যাডিলেডেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে তারা। সেই ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত, যা টেস্টে এক ইনিংসে সর্বনিম্ন রান। সেই ম্যাচের কথাও মাথায় থাকবে রোহিতদের। ফলে শুক্রবার থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে ভারতের সামনে।