জুটিতে লুটি। ভারতের নতুন অধিনায়ক (বাঁ দিকে) সূর্যকুমার যাদব ও নতুন কোচ গৌতম গম্ভীর। ছবি: পিটিআই।
শুরুটা ভাল হল ভারতের নতুন কোচ-অধিনায়ক জুটির। কোচ হিসাবে নিজের প্রথম ম্যাচ জিতলেন গৌতম গম্ভীর। অধিনায়ক হিসাবে প্রথম ম্যাচ জিতলেন সূর্যকুমার যাদব। শ্রীলঙ্কাকে তাদের ঘরের মাঠে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪৩ রানে হারাল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে সূর্যের অর্ধশতরানে ২১৩ রান করে ভারত। সেই রান তাড়া করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ১৯.২ ওভারে ১৭০ রানে অল আউট হয়ে যায় তারা। এই জয়ের ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ১-০ এগিয়ে গেল ভারত।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চরিথ আসালঙ্ক। শুরুটা ভাল করেন ভারতের দুই ওপেনার শুভমন গিল ও যশস্বী জয়সওয়াল। যত দিন যাচ্ছে, বোঝাপড়া ভাল হচ্ছে দু’জনের। পাওয়ার প্লে কাজে লাগান ভারতের দুই ব্যাটার। শ্রীলঙ্কার পেসারদের বলের গতি ব্যবহার করে বড় শট মারতে শুরু করেন দু’জনে। পাওয়ার প্লে-র শেষ বলে আউট হন শুভমন। ১৬ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। দুই ওপেনারের মধ্যে ৭৪ রানের জুটি হয়। পরের ওভারের প্রথম বলেই আউট হন অপর ওপেনার যশস্বী। তিনি করেন ২১ বলে ৪০ রান।
দুই ওপেনার আউট হওয়ার পরে দলের রানকে টেনে নিয়ে যান টি-টোয়েন্টির নতুন অধিনায়ক সূর্যকুমার ও ঋষভ পন্থ। তাঁরাও আক্রমণাত্মক শট খেলছিলেন। শ্রীলঙ্কার স্পিনারেরাও তাঁদের আটকাতে পারেননি। অধিনায়ক হিসাবে নিজের প্রথম ম্যাচেই অর্ধশতরান করেন সূর্য। ২৬ বলে ৫৮ রান করে আউট হন তিনি।
সূর্য আউট হওয়ার পরে দ্রুত উইকেট পড়তে শুরু করে ভারতের। পন্থ এক দিকে টিকে থাকলেও কোনও সঙ্গী পাননি তিনি। হার্দিক পাণ্ড্য (৯), রিয়ান পরাগ (৭) ও রিঙ্কু সিংহ (১) রান করতে পারেননি। পন্থ ৩৩ বলে ৪৯ রান করেন। নীচের সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতায় যত রান হওয়া উচিত ছিল, তত রান করতে পারেনি ভারত। ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান করে তারা। শ্রীলঙ্কার হয়ে মাথিশা পাথিরানা ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন।
২১৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করে শ্রীলঙ্কাও। দুই ওপেনার পাথুম নিসঙ্ক ও কুশল মেন্ডিস বড় শট খেলছিলেন। শিশির পড়ায় বল ধরতে সমস্যা হচ্ছিল ভারতীয় বোলারদের। সেই সুবিধা কাজে লাগান দুই ব্যাটার। প্রতি ওভারে গড়ে ১০ রান করে হচ্ছিল। শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারের মধ্যে ৮৪ রানের জুটি হয়। সেই জুটি ভাঙেন আরশদীপ সিংহ। মেন্ডিসকে ৪৫ রানে ফেরান তিনি।
তার পরেও রান তোলার গতি কমায়নি শ্রীলঙ্কা। একটা সময় দেখে মনে হচ্ছিল জিতে যাবে তারা। কোনও বোলারই উইকেট তুলতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত অক্ষরের বলে আউট হন নিসঙ্ক। ৪৮ বলে ৭৯ রান করেন তিনি। দুই ওপেনার আউট হওয়ার পরে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। নতুন ব্যাটারেরা থিতু হওয়ার সুযোগ পাননি। সুযোগ বুঝে চাপ বাড়ান সূর্য। অক্ষর ও রবি বিষ্ণোইকে টানা বল করান তিনি। সেই পরিকল্পনা কাজে লাগে।
কুশল পেরেরা ২০ রান করে ফেরেন। অধিনায়ক আসালঙ্ক শূন্য রানে আউট হন। ১৭তম ওভারে ফাটকা খেলেন সূর্য। আরশদীপ ও মহম্মদ সিরাজের ওভার বাকি থাকার পরেও পরাগের হাতে বল তুলে দেন তিনি। সেই ওভারে জোড়া উইকেট পড়ে। প্রথমে দাসুন শনাকা রান আউট হন। পরে কামিন্দু মেন্ডিসকে আউট করেন পরাগ। বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছিলেন একের পর এক ব্যাটার। পরের ওভারে ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গকে আউট করেন আরশদীপ। ৭ উইকেট পড়ে যায় শ্রীলঙ্কার।
শেষ তিন ওভারে জিততে ৫১ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। সাত উইকেট পড়ে গিয়েছিল তাদের। সেখান থেকে জেতা প্রায় অসম্ভব ছিল। বাকি ১৮ বলে আউট হয়ে যান বাকি ব্যাটারেরা। চার বল বাকি থাকতে ১৭০ রানে অল আউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৪৩ রানে জিতে মাঠ ছাড়ে ভারত। ১.২ ওভারে ৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন পরাগ। অক্ষর ও আরশদীপ ২টি করে এবং সিরাজ ও বিষ্ণোই ১টি করে উইকেট নেন।