এই মাঠেই বৃহস্পতিবার শুরু বিশ্বকাপ। ছবি: পিটিআই।
চার বছরের অপেক্ষা শেষ। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এক দিনের বিশ্বকাপ। আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে খেলবে গত বারের দুই ফাইনালিস্ট নিউ জ়িল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড। বেশি বাউন্ডারি মেরে গত বারের বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। নিউ জ়িল্যান্ড এ বার বদলা নিতে মরিয়া। তবে দুই দলই চোটের কারণে একাধিক ক্রিকেটারকে পাবে না।
আধুনিক ক্রিকেটে এই ফরম্যাট গুরুত্ব প্রায় হারিয়েই ফেলেছে। এখন আর মোটেই আগের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় দেখা যায় না। বরং টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই নজর দেশগুলির। এ বছর তবু অনেক দেশই বিশ্বকাপের কথা ভেবে এক দিনের ক্রিকেট খেলার দিকে জোর দিয়েছে। তবু সেই সংখ্যা প্রয়োজনের থেকে যথেষ্ট কম।
এ বারই প্রথম একক ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে ভারত। বস্তুত, ১৯৮৩ সালের পর এই প্রথম কোনও দেশ একক ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। ফলে এই বিশ্বকাপ আগেরগুলির থেকে আলাদা। পুরস্কারমূল্যের অঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়াও দর্শকদের সেরা মানের অভিজ্ঞতা দিতে মরিয়া আয়োজকেরা। বিশ্বকাপের সূচি দেরিতে প্রকাশ, পাকিস্তানের আসা নিয়ে টালবাহানা ইত্যাদি বেশ কিছু জায়গায় ঠোক্কর খেতে হলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের ঘণ্টি বেজে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার আমদাবাদে নিরাপত্তার কোনও ত্রুটি থাকছে না। খলিস্তানিদের হুঁশিয়ারি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়েছে। তাই মোতেরা স্টেডিয়ামে হাজির থাকবে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ। বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। মাঠে ১৬ জন আইপিএস অফিসার থাকবেন। রাস্তায় প্রচুর ট্র্যাফিক পুলিশ রাখা হচ্ছে। স্টেডিয়ামের ভেতরে এবং বাইরে নিরাপত্তার আলাদা আলাদা ব্যবস্থা। কুইক রেসপন্স টিম, বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিজ়পোসাল টিম তৈরি থাকবে। মোতেরার আশপাশ দিয়ে যাওয়া সব গাড়ি পরীক্ষা করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নামার আগে দুই দলই বেশ চিন্তায়। নিউ জ়িল্যান্ডের দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে আগেই চিন্তা ছিল। সেই তালিকায় যোগ হল টিম সাউদির নাম। এ দিকে, ইংল্যান্ড না-ও পেতে পারে বেন স্টোকসকে। আইপিএলে খেলতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন উইলিয়ামসন। বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কি না, সন্দেহ ছিল। কিন্তু বুধবার ক্যাপ্টেন্স ডে-তে হাজির ছিলেন তিনি। যদিও নিজের খেলা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারলেন না। তবে সাউদি যে নেই, সেটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথাম।
উইলিয়ামসন সম্পর্কে লাথাম বলেছেন, “কেন দলে থাকলে আমরা যে আরও শক্তিশালী হব তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সব দলই ওকে চাইবে। বিশ্বকাপে খেলার জন্যে গত চার-পাঁচ মাসে প্রচুর পরিশ্রম করেছে ও। অস্ত্রোপচারের পর ছ’মাস কেটেছে। নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপে কোনও না কোনও সময় যে ওকে দেখা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।”
সাউদি সম্পর্কে লাথামের মন্তব্য, “দু’সপ্তাহ আগে বুড়ো আঙুলে চোট পেয়েছিল সাউদি। দ্রুত সুস্থ হচ্ছে। কিন্তু ইংল্যান্ড ম্যাচে ওর খেলার সম্ভাবনা নেই। ওর অস্ত্রোপচারের পর দু’সপ্তাহ কেটেছে। আশা করি ওকেও বিশ্বকাপে কখনও দেখা যাবে।”
এ দিকে, গত বার বিশ্বকাপের নায়ক ছিলেন বেন স্টোকস। তিনিও হয়তো প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন না। দীর্ঘ দিন ধরেই হাঁটুতে চোট রয়েছে তাঁর। তাই নিয়েই অ্যাশেজ়ে খেলেছেন। বিশ্বকাপে খেলার জন্যে অবসর ভেঙেছেন একটাই শর্তে, বল করবেন না। কিন্তু শুধু ব্যাট করার জন্যেও যে ফিটনেস দরকার সেটাও নাকি তাঁর নেই। সোমবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচেও খেলেননি।
ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক বাটলার বলেছেন, “স্টোকসের কোমরে হালকা চোট রয়েছে। আশা করা যায় বৃহস্পতিবার সকালে ভাল খবর পাব। ফিজিয়োদের সঙ্গে প্রচুর পরিশ্রম করছে স্টোকস। তবে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক, সেটা ঠিকই হবে। কারণ আমরা ঝুঁকি নিতে চাই না।”