ক্রিকেট শেখার সময় ভারনন ফিলান্ডারের সঙ্গেও খেলেছিলেন ইসমাইল। তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার আন্দ্রে নেল। মেয়েদের ক্রিকেটে ইসমাইলও নেলের মতো ৮৯ নম্বর জার্সি পরেন। মাঠে নেলের আগ্রাসী মনোভাবের ভক্ত ইসমাইল। ডেল স্টেনকেও পছন্দ তাঁর।
শাবনিম ইসমাইল। ছবি: আইসিসি
শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে তুলে নেন দেশের অন্যতম সেরা পেসার শাবনিম ইসমাইল। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দেন কেন তিনি সেরা। শেষ ওভারে দেন মাত্র তিন রান, নেন একটি উইকেট। ৬ রানে ম্যাচ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে সব চেয়ে বেশি উইকেটের মালকিন ইসমাইল। এক দিনের ক্রিকেটে ১১৬টি ম্যাচ খেলে ১৬৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৯৮টি ম্যাচ খেলে ১১০টি উইকেট নিয়েছেন ইসমাইল। কিন্তু এই ইসমাইলকেই দক্ষিণ আফ্রিকা দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ২০১৪ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বহিষ্কার করেছিল তাঁকে। মদ্যপান করে দুর্ব্যবহার করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম হলেও ইসমাইলের বাবা এবং মা ভারতীয়। ১৯৮৮ সালে তাঁর জন্মের আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান তাঁরা। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান ইসমাইল। আরও ছয় ভাই-বোন আছে তাঁর। স্কুলে থাকাকালীন ক্রিকেট শেখা শুরু করেন ইসমাইল। মেয়েদের কোনও আলাদা দল না থাকায় ছেলে মেয়ে মিলিয়ে দল তৈরি করে খেলা হত। তবে শুরুতে ক্রিকেট নয়, স্কুলে ফুটবল খেলতেন ইসমাইল। ১৬ বছর বয়সে মা এবং ঠাকুরদার কথা রাখতে শুরু ক্রিকেট খেলা।
ব্যাটার হিসেবে বার বার বিপক্ষ বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে ক্রিকেট শেখাই বন্ধ করে দিচ্ছিলেন ইসমাইল। কিন্তু কোচরা তাঁকে বলেন বোলার হিসেবে খেলতে। বোলিং শিখতে শুরু করেন ইসমাইল। তাতেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। ব্যাটার হতে চাওয়া ইসমাইল হয়ে ওঠেন ‘ভয়ঙ্কর’ পেস বোলার। এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন যে, তাঁর ডাক নাম হয়ে যায় ‘দানব’।
ক্রিকেট শেখার সময় ভারনন ফিলান্ডারের সঙ্গেও খেলেছিলেন ইসমাইল। তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার আন্দ্রে নেল। মেয়েদের ক্রিকেটে ইসমাইলও নেলের মতো ৮৯ নম্বর জার্সি পরেন। মাঠে নেলের আগ্রাসী মনোভাবের ভক্ত ইসমাইল। ডেল স্টেনকেও পছন্দ তাঁর।
দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের দলে ইসমাইল প্রথম মুসলিম ক্রিকেটার। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তাঁর। ১৫ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছেন ইসমাইল। ২০০৯ সালে শুরু হয় মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তিনি এমন একজন ক্রিকেটার যিনি সব ক’টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দু’বার এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি রয়েছে ইসমাইলের। এক দিনের ক্রিকেটে এক ইনিংসে ৬ উইকেটও নিয়েছেন তিনি।