প্রথম বার বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই নজর কেড়ে নিলেন মেঘনা সিংহ। বাংলার পেসার ঝুলন গোস্বামীর সঙ্গে পেস আক্রমণ শুরু করছেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি উইকেট পেয়েছিলেন। উইকেট পেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও।
২৭ বছরের মেঘনার জন্ম উত্তরপ্রদেশের বীজনরে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় দলে অভিষেক হয় মেঘনার।
মেঘনার বাড়ি থেকে তাঁর ক্রিকেট শেখার জায়গা ছিল ২৩ কিলোমিটার দূরে। প্রতি দিন বাবার সঙ্গে সেখানে গিয়ে ক্রিকেট শিখতেন মেঘনা।
এখনও অবধি একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেটা ছিল গোলাপি বলের টেস্ট। সেই ম্যাচে দু’টি উইকেট নেন মেঘনা।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয় দলে এখনও তাঁর অভিষেক না হলেও এক দিনের ক্রিকেটে আটটি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন মেঘনা। এক দিনের ক্রিকেটে ৬টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশ রাজ্য দল ছাড়াও রেলের হয়েও খেলেছেন মেঘনা। ২০২১ সালে তাদের হয়ে ঝাড়খণ্ডকে ফাইনালে হারিয়ে মেয়েদের এক দিনের ক্রিকেটের ট্রফি জেতেন তিনি। ম্যাচে ২২ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নিয়েছিলেন মেঘনা।
শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক স্টেফানি টেলরকে আউট করেন মেঘনা। সেই সঙ্গে নিয়েছেন কাইসিয়া নাইটের উইকেটও।
মেঘনার ঠাকুরদা ছিলেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর। ঠাকুমা এবং বাবা, দু’জনেই নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেছেন। মেঘনার মা একজন আশাকর্মী। তিন বোনও আছে মেঘনার। নিম্নবিত্ত পরিবারের এক মাত্র স্বপ্ন মেঘনা।
বিশ্বকাপের আগে মেঘনার মা রিনা সিংহ বলেন, “বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ দেখার জন্য আমরা ভোরবেলা উঠে পরতাম। আশা করি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ঝুলনের সঙ্গে ভারতের বোলিং শুরু করবে মেঘনা।”
মেঘনা যে বিশ্বকাপ খেলবেন তা বিশ্বাস করতেই পারছিলেন তাঁর মা। কিন্তু ভারতের জার্সি পরে মেয়েকে খেলতে দেখে গর্বিত গোটা পরিবার। মায়ের আশা, মেঘনার সাফল্যই পাল্টে দেবে তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি।
ভারত এ দলের হয়েও খেলেছেন মেঘনা। তাঁর কোচ লক্ষরাজ ত্যাগীর মতে মেঘনার সুইং খেলতে বিপদেই পড়বেন বিপক্ষের ব্যাটাররা।
ত্যাগী বলেন, “মেঘনার শেখার ইচ্ছেটাই ওকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয়। মিডল লেগের মাঝে গুড লেংথে বল ফেললে মেঘনাকে খেলা খুব কঠিন।”