২০২৮ সালের অলিম্পিক্সে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করতে মরিয়া আইসিসি। ছবি: টুইটার।
অলিম্পিক্সে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করতে চেষ্টার খামতি রাখছে না ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সই পাখির চোখ আইসিসি কর্তাদের। অলিম্পিক্সে কী ভাবে ক্রিকেট আয়োজন সম্ভব, সেই প্রস্তাবও দেওয়া হল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে।
আগামী অক্টোবরেই চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা ক্রিকেটের অলিম্পিক্স ভাগ্য। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি জানিয়ে দেবে কোন কোন নতুন খেলা ২০২৮ সালের গেমসে জায়গা পাবে। লড়াই কঠিন হলেও আশাবাদী আইসিসি কর্তারা। লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ছ’টি দলকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা আয়োজনের। পুরুষ এবং মহিলা উভয় বিভাগেই বিশ্বের সেরা ছ’টি দল অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। আইসিসির ক্রমতালিকার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দিনে বেছে নেওয়া হবে অংশগ্রহণকারী দলগুলিকে।
আমেরিকায় ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার কাজ আগেই শুরু করেছে আইসিসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের সঙ্গে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক করা হয়েছে আমেরিকাকেও। আইসিসি কর্তাদের আশা, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারে। কিন্তু তার আগেই ঠিক হয়ে যাবে ২০২৮ সালের গেমসে ক্রিকেট থাকবে কি না। আগামী অক্টোবরে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নতুন খেলা অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে। প্রতিযোগিতা আয়োজন নিয়ে আইসিসির প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছে জমা পড়েছে। যদিও এ নিয়ে কিছু জানাননি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তারা।
খেলার সময়ের জন্য আগেই এক দিনের ক্রিকেট নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তারা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের সময় নিয়ে অবশ্য তাঁদের আপত্তি নেই। খরচের কথা মাথায় রেখে শুরুর দিকে দলের সংখ্যা কম রাখতে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির পক্ষ থেকে। অলিম্পিক্সের মোট প্রতিযোগীর সংখ্যা কমাতে চাইছে তারা। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সব মিলিয়ে প্রতিযোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১১ হাজার মতো। ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক্সে সেই সংখ্যা কমিয়ে সাড়ে ১০ হাজারের মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খেলার সংখ্যা বাড়লেও ২০২৮ সালের গেমসেও প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়াতে নারাজ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তারা। খরচে লাগাম টানার পাশাপাশি প্রতিযোগিতার মান বাড়ানোও লক্ষ্য তাঁদের। সে কারণে অলিম্পিক্সে হয় এমন প্রতিটি খেলার সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে প্রতিযোগিতা আয়োজনের নতুন পরিকল্পনা জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য নতুন খেলার নিয়ামক সংস্থাগুলিকেও একই অনুরোধ করা হয়েছে।
২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে মহিলাদের টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা হয়েছে। আইসিসি প্রাথমিক ভাবে দু’টি মাঠে প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু খরচে লাগাম টানতে একটি মাঠেই সব ম্যাচ আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। ১০ দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা শেষ করা হয়। দিনে দু’টি করেও ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল।
২০২৮ গেমসে জায়গা পেতে ক্রিকেটকে লড়াই করতে হচ্ছে বেসবল, ফ্ল্যাগ ফুটবল, ল্যাক্রোস, ব্রেক ডান্স, ক্যারাটে, কিক বক্সিং, স্কোয়াশ এবং মোটর স্পোর্টসের সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তারা ২০২৮ গেমসের জন্য ২৮টি খেলাকে চূড়ান্ত করেছেন। আরও সর্বোচ্চ চারটি খেলা তাঁরা অন্তর্ভুক্ত করবেন।