Gautam Gambhir and S Sreesanth

দোষ কার? গম্ভীর-শ্রীসন্থ বিবাদে মুখ খুললেন শ্রী-কে চড় মারা হরভজন, কী বললেন ভাজ্জি

আইপিএলে শ্রীসন্থকে চড় মেরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন হরভজন সিংহ। সেই হরভজন এ বার মুখ খুললেন গৌতম গম্ভীর ও শ্রীসন্থের বিবাদ নিয়ে। কী বললেন ভাজ্জি?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৪৪
Share:

(বাঁ দিক থেকে) গৌতম গম্ভীর, শ্রীসন্থ ও হরভজন সিংহ। —ফাইল চিত্র

গৌতম গম্ভীর ও শ্রীসন্থের বিবাদে এ বার মুখ খুললেন হরভজন সিংহ। ২০০৮ সালের আইপিএলে এই হরভজনই ম্যাচ চলাকালীন চড় মেরেছিলেন শ্রীসন্থকে। মাঠেই শ্রীসন্থের কান্না আইপিএলের অন্যতম সেরা ঘটনা হয়ে রয়েছে। সেই হরভজন এ বার কী বললেন এই বিবাদ নিয়ে?

Advertisement

হরভজন কথা বলতে গিয়ে টেনে এনেছেন শাহরুখ খানের বিখ্যাত সংলাপ। তিনি বলেন, ‘‘বড় বড় শহরে এ রকম ছোট ছোট ঘটনা ঘটতেই থাকে।’’ তিনি হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন যে বড় প্রতিযোগিতায় খেলার মাঠে দুই ক্রিকেটার মাথা গরম করতেই পারেন। সেটা কোনও বড় বিষয় নয়।

সেখানেই থেমে থাকেননি হরভজন। তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে শ্রীসন্থের যা হয়েছিল তা অনেক পুরনো ঘটনা। সেটা নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। আমার বলতে লজ্জা নেই যে সে বার ভুল আমার ছিল। আমি আগেও তা স্বীকার করে নিয়েছি। কিন্তু গম্ভীর ও শ্রীসন্থের ঝামেলার কারণ আমি জানি না। লেজেন্ডস লিগে ভাল ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। সেটা নিয়েই না হয় আমরা আলোচনা করি।’’

Advertisement

গম্ভীর ও শ্রীসন্থের ঝামেলার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে শ্রীসন্থকেই অবশ্য দোষী হিসাবে দেখছেন সমর্থকেরা। সমাজমাধ্যমে এক ক্রিকেটভক্ত ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন। সম্ভবত সেটি দর্শকাসন থেকেই তোলা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, একটি ওভারের শেষে গম্ভীরের দিকে কিছু একটা বলতে বলতে এগিয়ে যাচ্ছেন শ্রীসন্থ। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে দেখে তাঁকে থামাতে এগিয়ে আসেন সতীর্থ এবং আম্পায়ারেরা। এক আম্পায়ার তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু শ্রীসন্থের থামার কোনও লক্ষণই দেখা যায়নি। তিনি ক্রমাগত কিছু বলতে থাকেন গম্ভীরের উদ্দেশে। গোটা ঘটনার সময় গম্ভীরকে এক ভাবে ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। শ্রীসন্থের কোনও কথারই উত্তর দেননি তিনি।

গম্ভীরকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে শুক্রবারই বিপাকে পড়েন শ্রীসন্থ। তাঁকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছে লেজেন্ডস লিগ কমিটি। গম্ভীরের সঙ্গে ঝামেলা সংক্রান্ত যাবতীয় পোস্ট শ্রীসন্থকে প্রতিযোগিতা চলাকালীন মুছে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শ্রীসন্থের অভিযোগ, গম্ভীর তাঁকে ‘ফিক্সার’ বলেছেন। সেই নিয়ে পোস্ট করেছিলেন ভারতের প্রাক্তন পেসার। কিন্তু প্রতিযোগিতা চলাকালীন তাঁর এই পোস্ট নিয়মবিরুদ্ধ বলে জানিয়েছে কমিটি। শ্রীসন্থ পোস্ট মুছলে তবেই তাঁর কথা শোনা হবে বলে জানিয়েছে তারা। শ্রীসন্থ এবং গম্ভীরের মধ্যে মাঠে যে ঝামেলা হয়েছিল, তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন আম্পায়ারেরাও। সেখানে শ্রীসন্থকে গম্ভীর যে ‘ফিক্সার’ বলেছেন তার কোনও উল্লেখ নেই।

অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিযোগিতার প্রধান সৈয়দ কিরমানি। কিরমানি বলেছেন, ‘‘লেজেন্ডস লিগ ক্রিকেট সব সময় চেষ্টা করে মাঠে ক্রিকেটীয় মানসিকতা অক্ষুণ্ণ রাখার। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতার আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য আমরা একটা অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তৈরি করছি। মাঠে বা মাঠের বাইরে অথবা সমাজমাধ্যমে অনুচিত কিছু ঘটলে, তা কঠোর ভাবে মোকাবিলা করা হবে।’’ ভারতের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার আরও বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতার আচরণবিধি অত্যন্ত পরিষ্কার। তাতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, কোনও দল বা খেলোয়াড় সৌজন্য নষ্ট করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ ক্রিকেটের সঙ্গে আমাদের দেশ এবং বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের আবেগ জড়িত।’’

ম্যাচের পরে ইনস্টাগ্রামে লাইভ করেন শ্রীসন্থ। সেখানে তিনি বলেন, “আমি আগে কিছু বলিনি। কোনও ইন্ধন দিইনি। কিন্তু আমাকে বার বার বলতে লাগল, ‘ফিক্সার, ফিক্সার, তুমি ম্যাচ ফিক্সার।’ আমার দিকে তাকিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে হাসছিল। ছাপার অযোগ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এমনকি, আম্পায়ারেরা যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসেছিলেন তখনও একই ভাষায় আমাকে আক্রমণ করেছে। আমি সরে গিয়েছিলাম। তার পরেও থামেনি। ও যদি সবার সঙ্গে লড়াই করতে চায় করুক। আমি কোনও উত্তর দিতে চাই না।”

গম্ভীরও এর পর একটি পোস্ট করেন। তিনি নিজের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, “স্মাইল হোয়েন দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ় অল অ্যাবাউট অ্যাটেনশন” অর্থাৎ, যখন গোটা দুনিয়া দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় তখন শুধু হাসো। সেই পোস্টেই কমেন্ট করেন শ্রীসন্থ। সেখানে আরও বড় অভিযোগ করেন বিশ্বকাপজয়ী পেসার।

শ্রীসন্থ সেখানে লিখেছেন, “তুমি এখন আর শুধু ক্রীড়াবিদ বা কারও ভাই নও, তার থেকে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছ। সব থেকে বড় কথা, তুমি এখন জনপ্রতিনিধি (গম্ভীর পূর্ব দিল্লির সাংসদ)। তার পরেও সব ক্রিকেটারের সঙ্গে ঝগড়া করছ। কী হয়েছে তোমার? আমি হাসিমুখেই সব কিছু দেখছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে ফিক্সার বললে। তুমি কি সুপ্রিম কোর্টেরও উপরে?”

এর পরেই গম্ভীরকে ‘অসভ্য’ বলেন শ্রীসন্থ। তিনি লেখেন, “এই ভাবে কথা বলার কোনও অধিকার নেই তোমার। যা খুশি তাই বলে যেতে পারো না তুমি। আম্পায়ারকেও অশ্লীল কথা বলেছ। তার পরেও তুমি মুখে হাসি রাখার কথা বল? তুমি খুব অহঙ্কারী। তুমি এতটাই অসভ্য যে, কাউকে সম্মান দিতে জানো না। যে তোমার পাশে দাঁড়াল, তাঁকেও কোনও সম্মান দেখালে না।”

গম্ভীরের শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্রীসন্থের স্ত্রী ভুবনেশ্বরী। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভাবতে পারিনি যে শ্রীসন্থের সঙ্গে ভারতের জার্সিতে এত দিন খেলা এক জন ক্রিকেটার এত নীচে নামতে পারবে। আমি অবাক। ক্রিকেট থেকে অবসরের এত বছর পরেও কী ভাবে কেউ এ কথা বলতে পারে? আসলে, পরিবার ও শিক্ষা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের কথা বুঝিয়ে দেয় কে কোন পরিবেশে বড় হয়েছে। আমি খুব অবাক হয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement