অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে সফল রবি কুমার। —ফাইল চিত্র
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট। ভারতীয় দলে বাঁহাতি পেসারের ফাঁকা জায়গা নিতে পারেন তিনি। তবে এখনই সেই সব নিয়ে ভাবছেন না। বাংলার হয়ে রঞ্জি দলে সুযোগ পাওয়া রবি কুমার এখন মন দিতে চান লাল বলের খেলায়। কটক থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবি জানালেন তাঁর মনের কথা।
প্রশ্ন: অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে কী ভাবে তৈরি করেছিলেন?
রবি: দল হিসাবে আমাদের অনুশীলন খুব বেশি হয়নি। সময় ছিল না বেশি। কিছু ম্যাচ খেলেছিলাম, তার থেকেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলাম। এশিয়া কাপে আমরা শুধু এশিয়ার দলের সঙ্গে খেলেছিলাম। তাই নিজের মানসিকতায় একটা পরিবর্তন এনেছিলাম। অন্য দলগুলির খেলার ধরন দেখেছিলাম। সেই অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করেছিলাম। আলাদা আলাদা ভাবে পরিকল্পনা করেছিলাম দলগুলির জন্য।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভক্ত রবি। তাঁর মতো এক জন ক্রিকেটারের থেকে কী শিখলেন তিনি?
রবি: আমার সে রকম ভাবে কোনও আদর্শ ক্রিকেটার ছিল না। তবে এখন আমি ধোনিকে আদর্শ মানি। সকলের থেকে কিছু না কিছু শেখা যায়। ধোনি যে ভাবে সব পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখে, খুব সহজ ভাবে যে কোনও কাজ করে সেটা আমার ভাল লাগে। ব্যাটার, বোলাররা ভুল করবেই, কিন্তু ওকে কখনও রেগে যেতে দেখিনি। এটা আমার খুব পছন্দ।
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট নেন রবি কুমার। —ফাইল চিত্র
কোন বোলারের খেলা দেখতে পছন্দ করেন তিনি?
রবি: অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের খেলা ভাল লাগে। পাকিস্তানের মহম্মদ আমিরের বোলিংও ভাল লাগে। ভারতীয়দের মধ্যে ইরফান পাঠানের খেলা ভাল লাগত।
ভারতীয় দলে বাঁহাতি পেসারের অভাব। সেই জায়গায় নিজেকে দেখছেন তিনি?
রবি: অবশ্যই সুযোগ রয়েছে আমার সামনে। নির্বাচকরা ডাকলে তবেই খেলার সুযোগ পাব। খেলার সুযোগ পেলে সেটা আমার কাছে ভাগ্যের ব্যাপার। তবে এখন আমি রঞ্জি নিয়ে ভাবছি। এই প্রতিযোগিতায় ভাল খেললে আরও অনেক সুযোগ পাব।
বাংলা দলে মনোজ তিওয়ারি, অভিমন্যু ঈশ্বরণের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী ঈশান পোড়েল রয়েছেন। কী বললেন তাঁরা?
রবি: সকলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কোচ অরুণ লালও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে এখন তো আমরা নিভৃতবাসে, তাই সকলের সঙ্গে কথা হয়নি। অনুশীলন শুরু হলে তখন কথা হবে।
বিশ্বকাপের পর বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কলকাতায় ফেরার পরের দিনই বাংলার হয়ে খেলতে কটক যেতে হয়েছে। বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে কোন রান্নাটা খেতে চাইবেন?
রবি: হ্যাঁ, বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বাড়ি ফিরলেই মায়ের হাতে মটর পনির খেতে চাইব। মাকে বলে রেখেছি। তবে চিকেন তন্দুরি খেতেও ভালবাসি।
ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনীতে কাজ করেন রবির বাবা। ২০০৬ সালে কাশ্মীরে গ্রেনেডে আঘাত লাগে তাঁর। জানতেনই না রবি। কী মনে হয়েছিল সেই সময়?
রবি: বাবা আমাকে বলেইনি এটা। হঠাৎ জানতে পেরেছিলাম। অবাক হয়ে গিয়েছিলাম খুব। আসলে বাবা বাড়িতে কাউকে চিন্তায় ফেলতে চায়নি। সেই জন্যই আমাদের বলেনি। নইলে মা, ভাই, বোন সকলে চিন্তা করত।
বোলার রবি নিজেকে আরও পরিণত করে তুলবেন কী ভাবে? —ফাইল চিত্র
ক্রিকেটের বাইরে রবির পছন্দ ঘুরে বেড়ানো। কোথায় ঘুরতে যেতে চাইবেন তিনি?
রবি: আমি ঘুরতে খুব ভালবাসি। সারা ভারত ঘুরে বেড়াতে চাই। তবে আমার খুব শখ এক বার ইটালি যাওয়া। ভেনিসে যেতে চাই আমি। কখনও সুযোগ পেলে সেখানে যাব। গান শুনতেও ভাল লাগে। ব্যাডমিন্টন খেলতেও বেশ লাগে আমার।
সামনে রঞ্জি। বোলার রবি নিজেকে আরও পরিণত করে তুলবেন কী ভাবে?
রবি: সামনে প্রচুর ম্যাচ রয়েছে। এখন নতুন কিছু শিখতে পারব না। এখন নিজের মানসিকতা ঠিক করতে হবে। যখন খেলা থাকবে না তখন শেখার চেষ্টা করব। এখন আমার লক্ষ্য থাকবে লাল বলে ভাল খেলা। বিশ্বকাপে সাদা বলে খেলেছিলাম। লাইন, লেংথ, মানসিকতা সব আলাদা এখানে। নিজেকে সেই ভাবেই তৈরি করতে চাই এখন এবং ম্যাচে সেটা করে দেখাতে চাই।
আইপিএল-এ ৫৯০ জনের তালিকায় নেই রবি। কী ভাবছেন তিনি?
রবি: আশা করেছিলাম তালিকায় থাকব। কিন্তু ৫৯০ জনের মধ্যে আমি নেই। তাই এখন রঞ্জি নিয়েই ভাবছি আমি।