বিরক্ত সূর্যশেখর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আমস্টারডাম থেকে কলকাতা ফিরছিলেন সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু কলকাতা ফিরতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হল গ্র্যান্ডমাস্টারকে। একে কুয়াশা, তার উপর এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের অব্যবস্থায় ভুগলেন তিনি।
শুক্রবার একাধিক টুইট করে ক্ষোভ উগরে দিলেন সূর্যশেখর। প্রথম টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমস্টারডাম থেকে মুম্বই আসতে আট ঘণ্টা লেগেছিল। কিন্তু আট ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কলকাতা পৌঁছতে পারিনি। দু’বার বিমান ফিরে এল কুয়াশার কারণে। আর কত বার চেষ্টা করা হবে? রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন ভোর ৫টা।’ সূর্য জানিয়েছেন এর মাঝে দু’বার ভুবনেশ্বরে বিমান নেমেছে। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার আগের মুহূর্ত থেকে দু’বার ফিরে আসতে হয়েছে।
কিছু ক্ষণ পর ফের তৃতীয় টুইট করেন সূর্য। তিনি লেখেন, ‘আমদের হয়তো অন্য বিমান দেওয়া হবে। তত ক্ষণ ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরেই থাকতে হবে। এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য এটা কৃতিত্বের কাজ হবে যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা করতে পারে। চূড়ান্ত অদক্ষতা।’ এর পরেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সূর্য। তিনি একটি ছবি টুইট করেন যেখানে দেখা যাচ্ছে অন্য সংস্থার বিমান সেই সময় কলকাতায় নেমেছে। সেই টুইটে সূর্য লেখেন, ‘অন্য বিমান কলকাতায় নামছে, কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়া নামতে পারছে না। যাত্রীরা নিশ্চিত নন কখন কলকাতা পৌঁছনো যাবে। খাবার নেই, কোনও আশা নেই। খুব খারাপ অভিজ্ঞতা।’
পঞ্চম টুইটে সূর্য জানান বিমান চালক মেনে নিয়েছেন নিজের অদক্ষতা। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘বিমান চালক স্বীকার করলেন তাঁদের অদক্ষতার কথা। এই রকম পরিস্থিতিতে বিমান নামানোর দক্ষতা নেই তাঁদের। এখন বিমান উড়ছেই না এবং চালক বলছেন এই অবস্থায় বিমান নামানোর দক্ষতা নেই তাঁর।’ পরের টুইটে সূর্য লেখেন, ‘বিমান চালক সকলের সামনে স্বীকার করেন যে বিমানটি এবং কর্মীরা এই পরিস্থিতিতে বিমান নামাতে দক্ষ নন। সেই সময় অন্য সংস্থার বিমান কলকাতায় নেমেছে। কী হচ্ছে কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।’ সূর্য জানিয়েছেন বিমানচালককে নিরাপত্তাকর্মীরা বার করে নিয়ে যান।
টুইট দেখে সূর্যশেখরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাংলার গ্র্যান্ডমাস্টার বলেন, “বিমানচালক বলেন তাঁদের ক্যাট থ্রি নেই। সেটা আগেই বলতে পারতেন তিনি। মিথ্যা বলার কী প্রয়োজন ছিল। আমি আশা ছেড়ে দিয়েছি। ভুবনেশ্বরে আমার বন্ধুর বাড়িতে চলে এসেছি। রাতে ট্রেনে করে কলকাতা ফিরব।”
পুরো ঘটনায় প্রচণ্ড বিরক্ত সূর্যশেখর। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “ওখানে এমন অনেক যাত্রী ছিলেন যাঁদের ওষুধ প্রয়োজন। কেউ বলছিলেন তাঁর বাড়িতে অসুস্থ পরিজন রয়েছে, কারও বাবা মারা গিয়েছেন। দ্রুত কলকাতা ফেরার প্রয়োজন ছিল অনেকের। আমি নয় খেলা শেষে বাড়ি ফিরছি। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে দ্রুত কলকাতা ফেরা দরকার ছিল।”
সূর্যশেখর বিরক্ত এই আধুনিক সময় দাঁড়িয়ে ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতা যাওয়ার আবহাওয়া কেমন থাকবে তা বলা যাচ্ছে না। তিনি বললেন, “আবহাওয়া কেমন, কলকাতায় নামা যাবে কি না তা না জেনেই কেন দ্বিতীয় বার কলকাতা যাওয়ার জন্য উড়ে যাওয়া হল।” শেষ পর্যন্ত বিমানের আশা ছেড়ে কলকাতা ফেরার জন্য ট্রেন বেছে নিলেন সূর্যশেখর।