রবিন মিঞ্জ। ছবি: এক্স।
গত বছর আইপিএলের নিলামে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন রবিন মিঞ্জ। ঝাড়খণ্ডের প্রথম আদিবাসী ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে সুযোগ পান। শুধু তাই নয়, রাতারাতি ৩.৬ কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। সেই রবিনের বাবা বিমানবন্দরে রোহিত শর্মা, বেন স্টোকসদের নিরাপত্তা দেওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকলেন। রোহিতেরা তাঁকে চিনতেও পারলেন না। কিন্তু রবিনের বাবা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে তাকলেন তাঁদের দিকে। আশা, ছেলেও একদিন এ ভাবেই ভারতের জার্সি পরে খেলতে নামবে।
ফ্রান্সিস জেভিয়ার মিঞ্জের স্বপ্নও ছিল খেলোয়াড় হওয়া। তিনি গ্রামে হকি এবং ফুটবল খেলেছেন। অ্যাথলেটিক্সেও নেমেছেন। দিল্লির সাই-তে ফুটবল শিবিরেও ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামে কোনও স্টুডিয়ো না থাকায় ছবি তুলতে পারেননি। তাই শিবিরে যোগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ছেলে যাতে খেলাধুলো করে তার জন্য শুরু থেকেই জোর দিয়েছিলেন।
ঝাড়খণ্ডের ভূমিপুত্র মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে দেখে ইচ্ছা হয়েছিল ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর। ছোটবেলায় নিজেই কাঠ কেটে ছেলেকে ব্যাট বানিয়ে দিয়েছিলেন। পরে মাথায় আসে কোচিং অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার। সেটাই কাজে লাগে। তবে ছেলের উপরে কোনও দিন চাপ দেননি। না কোনও দিন ছেলের অ্যাকাডেমিতে হাজির হয়েছেন, না তাকে ক্রিকেটার হতে কোনও জোর দিয়েছেন। একটা কথাই বলে দিয়েছিলেন, যা করবে ভালবেসে করবে। সেখান থেকে নিজের জোরেই বড় মঞ্চে জায়গা করে ফেলেছেন রবিন। তাঁকে ধোনি নিজে এতটাই পছন্দ করেন, যে আইপিএল নিলামের আগে কথা দিয়েছিলেন, আর কোনও দল না নিলেও রবিনকে চেন্নাই সুপার কিংস নেবেই। সেটাই হয়েছে।
ছেলে খ্যাতি পেলেও বাবা এখনও পরিচিত নন। বিমানবন্দর থেকে রোহিতেরা বেরনোর সময় ফ্রান্সিসের পাশ দিয়ে গেলেও তাঁকে চিনতে পারেননি। ফ্রান্সিস বলেছেন, “কেন চিনবে? আমি এখানে স্রেফ একজন নিরাপত্তারক্ষী। অনেকের মধ্যে একজন।” বিমানবন্দরে সবার পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা, কাগজপত্র দেখাই কাজ ফ্রান্সিসের। তিনি বলেছেন, “ছেলে আইপিএলের ক্রিকেটার বলে আমি নিজের কাজে ঢিলে দেব না। রবিন আইপিএলে সুযোগ পাওয়ায় আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে বটে। কিন্তু কাল কী হবে কেউ জানে না। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করে কেন এখনও চাকরি করছি। আমি ওদের বলি, যত দিন কাজ করার শক্তি থাকবে করে যাব।”