মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ফাইল ছবি
কমনওয়েলথ গেমসে পুরুষদের ক্রিকেট কবে জায়গা পাবে, নিশ্চয়তা নেই এখনও। কিন্তু সেই কমনওয়েলথ গেমসের সঙ্গেও যোগাযোগ পাওয়া গেল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। সোমবার লন বোলের ফাইনালে উঠেছে ভারতের মহিলা দল। তার পরেই দলের সদস্য লাভলি চৌবে জানালেন, ধোনি লন বল খেলা খুবই ভালবাসেন। অস্ট্রেলিয়ায় গেলেই লন বল খেলেন। এমনকি ভারতের লন বল দলের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।
সোমবার কমনওয়েলথের ইতিহাসে প্রথম বার লন বলে পদক নিশ্চিত করেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডকে সেমিফাইনালে হারিয়ে তারা উঠে গিয়েছে ফাইনাল। রুপো নিশ্চিত। সেই দলে রয়েছেন লাভলি। এ ছাড়াও রুপা রানি তিরকে, পিঙ্কি এবং নয়নমণি সাইকিয়া রয়েছেন। চার মহিলা মিলে কামাল করে দিয়েছেন অখ্যাত এই খেলায়। লাভলি এবং রুপা আবার ধোনির রাজ্য ঝাড়খণ্ডেরই মেয়ে।
ধোনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ লাভলি। বলেছেন, “রাঁচীতে আমাদের যিনি কোচ তাঁকে চেনেন ধোনি। বছরে দু’বার আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। যেখানে অনুশীলন করি তার কাছেই একটা মন্দির রয়েছে। ধোনি সেখানে গেলে ফেরার পথে আমাদের সঙ্গে দেখা করে যান। আমাদের খেলা নিয়েও অনেক আলোচনা হয়। এমনকি, অস্ট্রেলিয়ায় গেলে ধোনি নিজেও লন বোল খেলেন।”
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলতে গেলে পকেটের পয়সা খরচ করেই যেতে হয় লাভলিদের। কমনওয়েলথে আসার জন্য জাতীয় সংস্থা খরচ দিয়েছে। কিন্তু সংস্থার তরফে কোনও সাহায্য বা অর্থ, কোনওটাই পান না এই খেলার সঙ্গে যুক্ত ক্রীড়াবিদরা। লন বোল দলের নেতা হলেন লাভলি। ৩৮ বছরের এই খেলোয়াড় ঝাড়খণ্ড পুলিশে কর্মরত। রুপা থাকেন রাঁচীতে। ক্রীড়া বিভাগের সঙ্গে যুক্ত। দিল্লির মেয়ে পিঙ্কি আরকে পুরমের একটি স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক। নয়নমণি অসমের বনবিভাগে কাজ করেন।
ফাইনালে উঠে লাভলি বলেছেন, “আমাদের কাছে এই প্রতিযোগিতা অলিম্পিক্সের সমান। কারণ অলিম্পিক্সে এই প্রতিযোগিতা নেই। চার বছর আগে এক পয়েন্টের জন্য পদক হারিয়েছিলাম। এ বছর ইতিহাস তৈরি করলাম। আশা করি এ বার স্বীকৃতি মিলবে।” লাভলি এক সময় ১০০ মিটারের স্প্রিন্টার ছিলেন। নয়নমণি ছিলেন ভারোত্তোলক। নিজেদের খেলায় চোট পাওয়ায় দু’জনেই লন বোল বেছে নেন।
ফাইনালে ওঠার পর দেখা যায় দলের খেলোয়াড়রা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন। দলের ম্যানেজার অঞ্জু লুথরা পরে বললেন, “আমি ওদের মায়ের মতো। ২০০৯ থেকে এই দলের সঙ্গে যুক্ত। পদক জেতার খুবই দরকার ছিল। আগে দেশে ফিরলেই শুনতে হত, ‘তোমরা কী এমন করেছ?’ এ বার অন্তত বলতে পারব, আমরা কারওর চেয়ে কম নই।”