ঋষভ পন্থ। নিজস্ব চিত্র।
প্রত্যাশা মতো লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক হলেন ঋষভ পন্থ। সোমবার কলকাতায় দলের নতুন অধিনায়ক হিসাবে পন্থের নাম ঘোষণা করেছেন লখনউয়ের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কা। প্রথম দিনই পন্থ জানিয়ে দিলেন নতুন দলে মানিয়ে নিতে তাঁর কোনও সমস্যা হবে না। আইপিএলে নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি।
দিল্লির হয়ে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলার আগে ঝটিকা সফরে শহরে ঘুরে গেলেন পন্থ। দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রাক্তন অধিনায়কের ঘাড়ে এ বার লখনউয়ের নেতৃত্বের দায়িত্ব। নতুন দল, নতুন মালিক, নতুন মেন্টর মানিয়ে নিতে কি সমস্যা হবে? সঞ্জীব এবং লখনউয়ের মেন্টর জ়াহির খানের পাশে বসে পন্থ বললেন, ‘‘অসুবিধার কিছু নেই। দল, মালিক বা মেন্টর নতুন হলেও কাজটা একই। ক্রিকেট তো আর আমার কাছে নতুন নয়। দলের অনেকেই পরিচিত। জ়াক ভাইয়ের সঙ্গেও খেলেছি। সেই অর্থে মানিয়ে নেওয়ার কিছু নেই। দলের জন্য ২০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করব।’’ লখনউ এখনও আইপিএল জিততে পারেনি। গত বছর ফলাফলও ভাল হয়নি। এ বার কি ভাল কিছু আশা করছেন? পন্থ বলেছেন, ‘‘ভাল কিছুর আশা তো আছেই। আমাদের দলের ভারসাম্য যথেষ্ট ভাল। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে। ভাল তরুণ ক্রিকেটারেরা রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হতে হলে সকলকে সেরাটা দিতে হয়। শুধু তাই নয়, নিজের নিজের ক্ষমতার ২০-৩০ শতাংশ বেশি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে সবাইকে। সেটা করতে পারলে ভাল ফল না হওয়ার কারণ নেই।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘জ়াক ভাই আছে। কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার রয়েছেন। মনে হয় না সমস্যা কোনও সমস্যা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সিনিয়রদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। রোহিত ভাই (রোহিত শর্মা) শিখিয়েছে, কীভাবে সতীর্থদের পাশে দাঁড়াতে। পারফরম্যান্স কখনও ভাল হবে, কখনও খারাপ হবে। শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। এটাই আসল।’’
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস আইএসএলে যেমন দাপট দেখাচ্ছে, আইপিএলে লখনউ তেমন পারছে না। ফুটবল দলের উদাহরণ কি দেবেন পন্থদের? সঞ্জীব বলেছেন, ‘‘শুধু মোহনবাগান নয়, যে কোনও দলের সাফল্যই উদাহরণ হতে পারে। দায়িত্ব নেওয়ার সময় মোহনবাগানও এই জায়গায় ছিল না। আইপিএলে যেমন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বা চেন্নাই সুপার কিংস। এই দুই দলের সাফল্যের ধারাবাহিকতার কথা বলব। রোহিত শর্মা এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দলগুলোকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছে। একটা পদ্ধতি, একটা আবহ তৈরি করেছে। আসলে সব ব্যর্থতা থেকে আমরা শিখি। পড়ে গেলে উঠে দাঁড়াতে হয়। আমরাও উঠে দাঁড়াব।’’ পন্থকে পাশে বসিয়ে প্রথম দিনই এক রকম লক্ষ্য বুঝিয়ে দিলেন কলকাতার শিল্পপতি। পন্থকে অধিনায়ক করার কারণ হিসাবে বলেছেন, ‘‘ওর নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত দক্ষতা রয়েছে। ১০ বছর পর সবাই রোহিত, ধোনির সঙ্গে পন্থকেও আইপিএলের সেরা অধিনায়ক বলবে।’’
লখনউ মেন্টর জানিয়ে দিলেন, অধিনায়ক হিসাবে যথেষ্ট স্বাধীনতা পাবেন পন্থ। চাপ মুক্ত ভাবে খেলতে পারবে। জ়াহির বলেন, ‘‘অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলে খেলার পর পন্থ প্রথম যখন দিল্লিতে যোগ দিয়েছিল, তখন অধিনায়ক ছিলাম। ছোট থেকে দেখছি ওকে। পন্থকে নিয়ে আমি আশাবাদী।’’ দলের মিডল অর্ডারে এ বার বাঁহাতি বেশি। প্রথম একাদশ তৈরি করতে কি সমস্যা হবে? জ়াহিরের বক্তব্য, ‘‘আমি এ ভাবে দেখি না। বাঁহাতি না ডানহাতির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটীয় দক্ষতা। এ ভাল বাঁহাতি বোলার সব ব্যাটারকেই সমস্যায় ফেলতে পারে। আবার এক জন ভাল বাঁহাতি ব্যাটার সব বোলারকেই সমান ভাবে সামলাতে পারে। তা ছাড়া বাঁহাতি ক্রিকেটার দলে বেশি থাকলে, খানিকটা সুবিধা কিন্তু পাওয়া যায়।’’
গত নিলামে ২৭ কোটি টাকা দিয়ে পন্থকে কিনেছিলেন লখনউ কর্তৃপক্ষ। আইপিএলের ইতিহাসে তিনিই সব চেয়ে দামি ক্রিকেটার। লোকেশ রাহুল, ক্রুণাল পাণ্ড্য এবং নিকোলাস পুরানের পর চতুর্থ ক্রিকেটার হিসাবে লখনউকে নেতৃত্ব দেবেন পন্থ।