সতীর্থদের সঙ্গে উল্লাস তিতাসের। ছবি: টুইটার।
এশিয়ান গেমসে সোনা জিতে ইতিহাস তৈরি করেছে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল। সোমবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে তারা। সেই জয়ে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছেন বাংলার বোলার তিতাস সাধু। ৪ ওভারে ৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ম্যাচের পর তিতাস জানিয়েছেন, শান্ত থাকা এবং পরিকল্পনা কাজে লাগানোর ফলেই এসেছে সাফল্য।
তিতাস বলেছেন, “মাঠে নেমে কী করতে হবে সে ব্যাপারে পরিষ্কার পরিকল্পনা আমাদের মাথায় ছিল। প্রথম ওভার থেকেই আমরা আত্মবিশ্বাস পেয়ে যাই। ইনিংস বিরতির মাঝেই আমরা ঠিক করেছিলাম মাথা ঠান্ডা রেখে নামব এবং যে পরিকল্পনা করেছি সেটাই কাজে লাগাব। যে ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছি তাতে প্রমাণ হল যে আমরা ভুল করিনি।”
দেশের হয়ে সোনা জিতে উল্লসিত বাংলার জোরে বোলার। ফাইনালের মতো মঞ্চে আরও এক বার জ্বলে উঠল তাঁর বোলিং। সেই প্রসঙ্গে তিতাসের মন্তব্য, “আমাদের সামনে সোনা জেতার একটা দারুণ সুযোগ ছিল। আমরা সেটা কাজে লাগাতে পেরেছি। এর থেকে ভাল কিছু আর হয় না। আমরা গর্বিত এবং কৃতজ্ঞ।”
তাঁর সংযোজন, “এশিয়ান গেমসে সোনা জেতা বিশেষ অনুভূতি। কারণ এশিয়ান গেমসে সোনা জেতার সুযোগ সব সময় পাওয়া যায় না। গোটা এশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে হয়। এখানে ক্রিকেটার হিসাবে নয়, গোটা দেশের প্রতিনিধি হিসাবে খেলতে নামি।”
চিনের মাটিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অনুভূতি প্রসঙ্গে তিতাস বলেছেন, “সত্যি বলতে, গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। গোটা স্টেডিয়ামের সামনে সবার সঙ্গে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। গোটা দেশকে এই সাফল্য উৎসর্গ করছি।”
ভারতের সিনিয়র দলে এত তাড়াতাড়ি সুযোগ পাবেন, ভাবেননি তিতাস। এশিয়ান গেমসের দলে ডাক পেয়ে যে কিছুটা বিস্মিত হয়েছিলেন, সে কথা নিজেই জানিয়েছিলেন। সুযোগ কাজে লাগাতে অবশ্য ভুল করলেন না তিনি। ভারতের সোনা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে হরমনপ্রীতদের সাজঘরে স্থায়ী জায়গা করে নেওয়া বার্তা দিয়ে রাখলেন।
প্রথম ওভারে দীপ্তি শর্মা ১২ রান দেওয়ায় তৃতীয় ওভারে তিতাসকে আক্রমণে আনেন হরমনপ্রীত। প্রথম বলেই তিতাস আউট করেন অনুষ্কা সঞ্জীবনীকে (১)। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে তিতাস সাজঘরে ফেরান তিন নম্বরে নামা ভিষ্মি গুণরত্নেকে (শূন্য)। বল করতে এসেই মেডেন-সহ ২ উইকেট নিয়ে ভারতকে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দেন তিতাস। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের পঞ্চম ওভার এবং নিজের দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে প্রতিপক্ষকে আবার ধাক্কা দেন তিতাস। এ বার তাঁর শিকার শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চামারি আটাপাট্টু (১২)। তিতাসের দাপটে ১৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। একাধিক ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া না হলে তিতাসের উইকেট সংখ্যা আরও বাড়ত।