তিতাস সাধু। —ফাইল চিত্র
এশিয়ান গেমসে দ্বিতীয় সোনা জিতল ভারত। এ বার মহিলা ক্রিকেটারেরা দেশকে সোনা এনে দিলেন। মহিলাদের ক্রিকেটের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারালেন হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মন্ধানারা। ব্যাট হাতে ভাল খেললেন মন্ধানা ও জেমাইমা রদ্রিগেজ। বল হাতে দাপট দেখালেন বাংলার তিতাস সাধু। শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডারকে একাই আউট করেন তিনি। সেই ধাক্কা সামলাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। আনন্দবাজার অনলাইনের ২০২২ সালের ‘বছরের বেস্ট’ পুরস্কার পেয়েছিলেন তিতাস। সেই তিতাসের হাত ধরেই সোনা এল ক্রিকেটে।
ফাইনালে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত। নিলম্বিত থাকায় কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি। ফাইনালে দলে ফেরেন হরমন। ব্যাট করতে নেমে তাড়াতাড়ি দলের ওপেনার শেফালি বর্মার উইকেট হারায় ভারত। অপর ওপেনার মন্ধানা ভাল খেলেন। তাঁকে সঙ্গ দেন তিন নম্বরে নামা জেমাইমা। দু’জনে মিলে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন।
মন্ধানা ও জেমাইমার মধ্যে ৭৩ রানের জুটি হয়। দেখে মনে হচ্ছিল, ১৩০ রানের কাছাকাছি যেতে পারবে ভারত। কিন্তু ৪৬ রান করে মন্ধানা আউট হওয়ার পরেই খেই হারায় ভারতের ব্যাটিং। মিডল অর্ডার রান পায়নি। বাধ্য হয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে ৪২ রানে আউট হন জেমাইমা। ব্যাট হারতে ব্যর্থ অধিনায়ক হরমনপ্রীত। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান করে ভারত।
জবাবে প্রথম ওভারেই ১২ রান করেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। ভারতীয় সমর্থকদের মনে চাপ বাড়ার আগেই অবশ্য ভারতকে খেলায় ফেরান তিতাস। নিজের প্রথম ওভারেই দুই উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে আতাপাত্তুকে আউট করে শ্রীলঙ্কাকে বড় ধাক্কা দেন বাংলার তিতাস। সেখান থেকে অনেক চেষ্টা করেও আর ফিরতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।
ধাক্কা সামলে জুটি বাঁধেন হাসিনি পেরেরা ও নীলাক্ষি ডি সিলভা। প্রতি ওভারে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। জরুরি রান রেট বাড়তে থাকায় তা ছাড়া কোনও উপায়ও ছিল না। পেরেরাকে বেশি আক্রমণাত্মক দেখাচ্ছিল। এই জুটির হাত ধরে ৫০ পার হয় শ্রীলঙ্কার। বড় শট মারতে গিয়ে ২৫ রান করে আউট হন পেরেরা।
আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে তিতাসের (বাঁ দিকে) হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র।
ভারতের স্পিনারদের বিরুদ্ধে রান করা কঠিন হচ্ছিল। বল ঘুরছিল। ফলে জরুরি রান রেট বাড়ছিল। তার মধ্যেই নীলাক্ষি কয়েকটি বড় শট খেলেন। বল হাতে দীপ্তির দিন ভাল যায়নি। ভারতের উপর কিছুটা চাপ বাড়ায় তিতাসের হাতে বল তুলে দেন হরমনপ্রীত। দু’বার ক্যাচের সুযোগ থাকলেও কোনও ফিল্ডার না থাকায় উইকেট পাননি তিতাস। নিজের ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শেষ ৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার জিততে দরকার ছিল ৪০ রান। পূজা বস্ত্রকর আউট করেন নীলাক্ষিকে। উইকেট পড়তে থাকায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছিল শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ৯৭ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস। ১৯ রানে ম্যাচ জিতে সোনা জেতে ভারত।
দ্বিতীয় সোনা জয়ের ফলে পদক তালিকায় উন্নতি হয়েছে ভারতের। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২টি সোনা, ৩টি রুপো ও ৬টি ব্রোঞ্জ, অর্থাৎ মোট ১১টি পদক নিয়ে হংকংয়ের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। পদক তালিকার শীর্ষে চিন। ৩২টি সোনা, ১৩টি রুপো ও ৫টি ব্রোঞ্জ, অর্থাৎ মোট ৫০টি পদক জিতে ফেলেছে তারা।