প্রতীকী ছবি।
কানপুরে প্রথম টেস্টের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে নজিরবিহীন বিতর্কে জড়িয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন ক্রিকেটারদের খাদ্যতালিকায় শুধু হালাল করা মাংস রাখা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর। গরু বা শুয়োরের মাংস রাখা হয়নি খাদ্যতালিকায়। গোটা ঘটনায় অনেক মহলেই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে কারণ এ ভাবে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে কখনও খাদ্যতালিকায় বিধিনিষেধ চেপেছে বলে শোনা যায়নি।
এই নির্দেশের কথা জানাজানি হওয়ার পরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিতর্কও শুরু হয়েছে। সব চেয়ে বড় কথা, কী ভাবে এই নির্দেশ ভারতীয় দলের কাছে পৌঁছল, তা নিয়েও পরিষ্কার ধারণা দিতে পারছেন না কেউ। ভারতীয় বোর্ডের তরফে রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। বিভ্রান্তি দূর করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি বোর্ডের তরফে।
তবে ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগতে শুরু করেছে। বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র এবং আইনজীবী গৌরব গয়াল টুইট মারফত এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘ক্রিকেটারেরা যা ইচ্ছে খেতে পারেন। কিন্তু ভারতীয় বোর্ডকে কে অধিকার দিয়েছে হালাল করা মাংস খাওয়ার নির্দেশ দিতে? এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা এটা হতে দেব না। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।’’
এ দিকে, নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে নামার আগেই বড় ধাক্কা ভারতীয় শিবিরে। চোট পেয়ে দু’ম্যাচের সিরিজ় থেকে ছিটকে গেলেন দুরন্ত ছন্দে থাকা কে এল রাহুল। তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে সূর্যকুমার যাদবকে।
কানপুরে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে চলা প্রথম টেস্টের আগে মঙ্গলবার দু’দলই অনুশীলন করল গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে। অনুশীলনের পরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘বাঁ-পায়ের পেশিতে চোট লাগায় দু’টেস্টের সিরিজ় থেকে ছিটকে গিয়েছেন কে এল রাহুল। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে সুস্থ হওয়ার জন্য রাহুল এখন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাবে থাকবেন।’’ জানা গিয়েছে, ইডেনের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগেই পায়ের অস্বস্তির কথা বলেন রাহুল। তার পরে তিনি কলকাতা থেকেই বেঙ্গালুরু ফিরে যান। সূর্যকুমার দলের সঙ্গে কানপুর চলে আসেন। সূর্যকুমারকে যদিও আগেই টেস্ট দলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, তখন থেকেই রাহুলের অস্বস্তির কথা জানত দল এবং নির্বাচকেরা।
এই টেস্ট সিরিজ়ে খেলছেন না রোহিত শর্মা। প্রথম টেস্টের পরে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বিরাট কোহালি। প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অজিঙ্ক রাহানে। রাহুল ছিটকে যাওয়ার অর্থ হল, ওপেন করতে খুব সম্ভবত দেখা যাবে মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং শুভমন গিলকে। মাঝের সারিতে চেতেশ্বর পুজারা এবং রাহানে থাকছেন। ছ’জন ব্যাটার খেললে শ্রেয়স আয়ার এবং সূর্যকুমার— দু’জনেরই খেলার সম্ভাবনা থাকবে। না হলে দৌড়ে এগিয়ে শ্রেয়স।
বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডকে ঘূর্ণি পিচে টেস্ট সিরিজ়ে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। কানপুর কী নিয়ে অপেক্ষা করছে, এটাই এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রে। নিউজ়িল্যান্ড তো ইতিমধ্যেই তিন স্পিনার খেলানোর ভাবনা শুরু করেছে। কেন উইলিয়ামসনদের কোচ গ্যারি স্টিড এ দিন বলেছেন, ‘‘ভারতের মাটিতে চার পেসার আর এক অনিয়মিত স্পিনার নিয়ে খেলার কোনও জায়গা নেই। আমরা তিন স্পিনারেও খেলতে পারি। কানপুরের পিচ দেখার পরে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
টেস্ট শুরুর আগে কি কানপুরের পিচ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কথা বলবেন এক বার? নিউজিল্যান্ড কোচের সহাস্য জবাব, ‘‘আমার মনে হয় সেই এক্তিয়ার নেই।’’ তবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পিচে যে ভাবে বল ঘুরেছিল, অতটা এ বার ঘুরবে না বলেই মনে করেন নিউজ়িল্যান্ডের কোচ। স্টিডের মন্তব্য, ‘‘ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওই সিরিজটায় একটা কেন্দ্রেই পর পর দু’টো টেস্ট হয়েছিল। এখানে দুটো টেস্ট হবে দু’টো কেন্দ্রে। তাই অতটা বল ঘোরার সম্ভাবনা কম।’’