৬ উইকেট নিয়েছেন বোলান্ড ছবি: টুইটার থেকে।
স্কোরবোর্ডে তাঁর নামের পাশে লেখা ৪ ওভারে ১ মেডেন, ৭ রান, ৬ উইকেট। মাত্র ১৯ বলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ২১ বলে ৬ উইকেট গিয়েছে তাঁর ঝুলিতে। অভিষেক টেস্টে একের পর এক রেকর্ড করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ডান হাতি জোরে বোলার স্কট বোলান্ড। অথচ কিছু দিন আগেও তিনি জানতেন না বক্সিং ডে টেস্টে ব্যাগি গ্রিন পরে নামবেন। বাকিটা এখনও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে তাঁর।
জন্মসূত্রে বোলান্ড আদি অস্ট্রেলীয়। তাঁর আগে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের হয়ে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে এক মাত্র জেসন গিলেসপি আদি অস্ট্রেলীয় ছিলেন। ছোট থেকে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ততটা ভালবাসা ছিল না। ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির বাইরেই খেলতেন। যখন ঠিক করেন ক্রিকেটকেই পেশা করবেন, তখন তাঁর বয়স ১৮ বছর।
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে বোলান্ড সুযোগ পেয়েছেন ৩২ বছর বয়সে। তাও সরাসরি প্রথম একাদশে সুযোগ হয়নি। জশ হ্যাজলউড চোটের কারণে বাদ পড়ায় পরিবর্ত হিসাবে নেওয়া হয় তাঁকে। মেলবোর্ন টেস্টে বোলান্ডের সুযোগ পাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাঁর শারীরিক গঠন ও মেলবোর্নে তাঁর খেলার অভিজ্ঞতা। এই মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯১ উইকেট নিয়েছেন তিনি, যা অন্যদের থেকে অনেক বেশি। হাসিব হামিদদের বোলান্ড যে ভাবে আউট করলেন তাতে বোঝা গেল এই পিচে কী ভাবে বল করতে হয় তা তিনি বেশ ভাল ভাবে জানেন।
অস্ট্রেলিয়ার এক দিনের ও টি২০ দলে অবশ্য বোলান্ড সুযোগ পেয়েছিলেন আরও কয়েক বছর আগে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম এক দিনের ম্যাচ খেলেন ২০১৬ সালে। টি২০ অভিষেকও সে বছরই। খেলেছেন ১৪টি এক দিনের ম্যাচ ও ৩টি টি২০। কিন্তু ২০১৬ সালের পরে আর জাতীয় দলে সুযোগ মেলেনি। অপেক্ষা করেছেন মেলবোর্ন স্টার্সের হয়ে বিগ ব্যাশ খেলা বোলান্ড। একের পর এক মরসুমে ভাল বল করেছেন। বিগ ব্যাশে তাঁর পারফরম্যান্সই তাঁকে ফিরিয়ে এনেছে জাতীয় দলে।
ঘরের মাঠে ম্যাচের সেরা হয়েছেন। টেস্টের ইতিহাসে তৃতীয় দ্রুততম হিসেবে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। টেস্টে এক ইনিংসে সব থেকে কম রান খরচ করে (৭ রান) পাঁচ উইকেট নেওয়া বোলার হয়েছেন তিনি। তাঁর আগে এই রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার চার্লস টার্নারের (১৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট) দখলে।
ম্যাচ শেষে বোলান্ড বলেন, ‘‘ম্যাচের আগের দিন সন্ধ্যায় জানতে পারি আমি খেলব। আমি জানতাম লড়াইটা কঠিন হবে। কিন্তু দর্শকদের সমর্থন আমাকে বাড়তি তাগিদ দিয়েছিল। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। জানতাম তৃতীয় দিনেই ম্যাচ জিতে যাব। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হবে সেটা বুঝতে পারিনি।’’