জয়ের উচ্ছ্বাস প্যাট কামিন্সের। ছবি: আইসিসি।
নেদারল্যান্ডসকে রেকর্ড রানের ব্যবধানে হারাল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের জোড়া শতরানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ৮ উইকেটে ৩৯৯ রান। জবাবে নেদারল্যান্ডসের ইনিংস শেষ হল ২১ ওভারে ৯০ রানে। অস্ট্রেলিয়া জিতল ৩০৯ রানে। এক দিনের ক্রিকেটে রানের ব্যবধানে জয়ের বিশ্বরেকর্ড রয়েছে ভারতের। ৮ রানের জন্য বেঁচে গেল রোহিত শর্মার দলের সেই নজির।
এক দিনের ক্রিকেটে সব থেকে বড় ব্যবধানে (রানের নিরিখে) জয়ের রেকর্ড ভারতের। গত ১৫ জানুয়ারি তিরুঅনন্তপুরমে শ্রীলঙ্কাকে রোহিতেরা হারিয়েছিলেন ৩১৭ রানে। ভারতের ৫ উইকেটে ৩৯০ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয়েছিল ৭৩ রানে। তবে এক দিনের বিশ্বকাপে এটাই সব থেকে বেশি রানে জয়ের নজির। আগের রেকর্ডটিও ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছিল ২৭৫ রানে।
টস জিতে দিল্লির ২২ গজে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করেন ওয়ার্নার। অন্য ওপেনার মিচেল মার্শ (৯) রান না পেলেও অবিচল ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। ৯৩ বলে তাঁর ১০৪ রানের ইনিংসে রয়েছে ১১টি চার এবং ৩টি ছক্কা। এই নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠ শতরান করে সচিন তেন্ডুলকরের নজির ছুঁলেন তিনি। ভাল খেললেন স্টিভ স্মিথ মার্নাস লাবুশেনরাও। স্মিথ করলেন ৬৮ বলে ৭১ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৯টি চার এবং ১টি ছয়। লাবুশেন করলেন ৪৭ বলে ৬২ রান করলেন। নিজের ইনিংসটি সাজালেন ৭টি চার এবং ২টি ছয় দিয়ে। তবে অস্ট্রেলিয়ার রানকে প্রতিপক্ষের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেলেন ম্যাক্সওয়েল।
ভারতের জামাই দিল্লির মাঠে ব্যাট হাতে কার্যত ঝড় তুললেন। ৪৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে গড়লেন নতুন রেকর্ড। শুরুতে খুব একটা আক্রমণাত্মক ছিলেন না ম্যাক্সওয়েল। প্রথম ২০ বলে করেছিলেন ৩৪ রান। পরের ২০ বলে শতরানে পৌঁছে যান। ৯টি চার এবং ৮টি ছক্কা মারেন তিনি। অস্ট্রেলিয়াকে ৩৯৯ রানে পৌঁছে দেন ম্যাক্সওয়েলই। বিশ্বকাপে সব থেকে কম বলে শতরান করার রেকর্ড করেছিলেন এডেন মার্করাম। ১৮ দিনের মধ্যে সেই মাঠেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ম্যাক্সওয়েল। ৪০ বলে করলেন শতরান।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের দাপটে তৈরি হল একটি লজ্জার নজিরও। সেটি করলেন নেদারল্যান্ডসের বোলার বাস ডি লিড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১০ ওভার বল করে দিলেন ১১৫ রান। এক দিনের ক্রিকেটের একটি ম্যাচে এত রান এর আগে কোনও বোলার দেননি। লিড ভাঙলেন অস্ট্রেলিয়ার মিক লুইসের রেকর্ড। লুইস ২০০৬ সালের ২২ মার্চ জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১১৩ রান দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই তিনিও ১১৩ রান দিয়েছিলেন। এ দিন নেদারল্যান্ডসের সফলতম বোলার লোগান ভ্যান বিক ৭৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন।
জয়ের জন্য ৪০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিলেন নেদারল্যান্ডসের ব্যাটারেরা। কেউই উইকেটে দাঁড়াতে পারলেন না। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে সর্বোচ্চ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংহের ২৫ রান। ২৫ বলের ইনিংসে ৬টি চার মারেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের আর কোনও ব্যাটার বলার মতো কিছু করতে পারেননি। জাম্পা ৪ উইকেট নিলেন মাত্র ৮ রান খরচ করে। ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট মিচেল মার্শের। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক। ৯০ রানে নেদারল্যান্ডসের ইনিংস শেষ হওয়ায় ৩০৯ রানে ম্যাচ জিতল অস্ট্রেলিয়া।