অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। —ফাইল চিত্র
আট বছর আগে ইনস্টাগ্রামে তার ছবি দিয়ে অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস লিখেছিলেন, ‘সব থেকে ভাল বন্ধু।’ সেই বন্ধু সাইমন্ডসের শেষ সময় পর্যন্ত পাশে থাকল। যেমন থেকেছিল রিচার্ড গেয়ারের হাচিকো।
১৪ মে প্রাণ হারান সাইমন্ডস। গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। সেই সময় সাইমন্ডসের দুই পোষ্য ছিল তাঁর সঙ্গে। দুর্ঘটনা ঘটার সময় কাছেই ছিলেন ওয়েলন টাউনসন এবং তাঁর বান্ধবী বাবেথা নেলিমান। সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যান তাঁরা। গাড়ি থেকে অর্ধেক শরীর বেরিয়ে ছিল সাইমন্ডসের। তাঁকে বার করার চেষ্টা করেন। বাবেথা বলেন, “আমরা পৌঁছে দেখি একটা গাড়ি উল্টে গিয়েছে। তার মধ্যে আটকে রয়েছে একজন।” গাড়িতে তখনও গান বাজছে আর চিৎকার করছে একটি কুকুর। হিলার প্রজাতির সেই কুকুরটি সাইমন্ডসকে ছেড়ে যেতে নারাজ। বাবেথারা সাইমন্ডসের কাছে যেতে গেলেও চিৎকার করতে থাকে সে।
সাইমন্ডসের হিলারের সঙ্গে মিশে গেল হাচিকো। ১৩ বছর আগে মুক্তি পায় ‘হাচি: অ্যা ডগস টেল’ নামে একটি সিনেমা। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি সেই সিনেমাতে পার্কার উইলসনের জন্য অপেক্ষা করেছিল তার পোষ্য হাচি। উইলসনের সঙ্গে বাড়ি থেকে রোজ স্টেশনে যেত সে। উইলসন ট্রেন ধরে কাজে চলে গেলে বাড়ি ফিরে আসত হাচি। আবার উইলসনের ফেরার সময় হলে স্টেশনে পৌঁছে অপেক্ষা করত, একসঙ্গে বাড়ি ফিরবে বলে। এক দিন উইলসন কাজে গেলেন। কিন্তু সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন। ট্রেনে করে ফিরলেন না উইলসন। স্টেশনে অপেক্ষায় থাকল হাচি। নিজের শেষ দিন পর্যন্ত উইলসনের ফেরার অপেক্ষায় স্টেশনে ছিল হাচি। এখানে যেমন সামন্ডসের পাশে ছিল তাঁর হিলার।
ওয়েলন কোনও মতে গাড়ি থেকে বার করেন সাইমন্ডসকে। সেই সময় জ্ঞান ছিল না অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটারের। পুলিশকর্মী গ্যাভিন ওটস বলেন, “ওই সময় যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব সব করেছিলেন ওয়েলনরা। আপৎকালীন পরিষেবা চেয়ে ০০০-তে ফোনও করেন ওঁরা।” কিন্তু কোনও ভাবেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি সাইমন্ডসকে।
যত সময় যাবে ধীরে ধীরে সাইমন্ডসের স্মৃতি বিস্মৃত হবে মানুষের মন থেকে। শুধু ভুলবে না তাঁর হিলার। হয়তো সাইমন্ডসের ফেরার অপেক্ষায় এখনও কোথাও বসে রয়েছে সে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।