উইকেট নেওয়ার পর ভারতের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।
প্রথমে ব্যাট করে ৩৯৭ রান তোলার পর অনেকেই মনে করেছিলেন, খুব সহজেই জিতবে ভারত। কিন্তু উল্টো দিকে ছিল গত বারের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা নিউ জ়িল্যান্ড। ম্যাচ তাই একেবারেই এক পেশে হয়নি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হল ভারত এবং নিউ জ়িল্যান্ডের। শেষ পর্যন্ত যদিও জিতল ভারতই। ৩২৭ রানে শেষ হয়ে গেল নিউ জ়িল্যান্ড। এই জয়ের পিছনে ছিল কোন কোন কারণ?
টসে জয়
ওয়াংখেড়েতে বলা হয় টস জিতলে ব্যাট করো আর ম্যাচ জিতে নাও। রোহিত শর্মা বুধবার সেটাই করলেন। ওয়াংখেড়েতে টস জিতলেন রোহিত। ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেটা ভারতকে অনেকটাই সাহায্য করল। সেমিফাইনালের মতো বড় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে বড় রান তুলে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয় ভারত। সেই চাপ মাথায় নিয়ে নিউ জ়িল্যান্ড লড়াই করলেও জিততে পারেনি।
রোহিত-শুভমন জুটি
ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন রোহিত। মাত্র ২৯ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। সেই সময় শুভমন এক দিকে ধরে রেখেছিলেন। তাঁরা দু’জনে মিলে ৮.২ ওভারে ৭১ রান তুলে দেন। সেই শুরুটা ভারতের বড় রান তোলার ভিত গড়ে দেয়। রোহিত চারটি চার এবং চারটি ছক্কা মারেন। ৪৭ রানের মধ্যে ৪০ রান বাউন্ডারি মেরে করেন রোহিত। ভারত অধিনায়কের এই ইনিংসই শুরুটা করে দেয় ভারতের জন্য।
বিরাট-শ্রেয়সের শতরান
প্রথমে বিরাট কোহলি এবং তার পর শ্রেয়স আয়ার, দু’জনেই শতরান করলেন। বিরাট এক দিনের ক্রিকেটে ৫০তম শতরানের ইনিংসে খেললেন ১১৩টি বল। করলেন ১১৭ রান। বিরাটের ইনিংস ছিল মাপা। তিনি চেষ্টা করেন শেষ পর্যন্ত থাকতে। বাউন্ডারি নয়, দৌড়ে রান নিয়েই ইনিংস গড়তে চান বিরাট। এ দিনও সেটাই করলেন তিনি। শ্রেয়স ৬৭ বলে শতরান করেন। তিনি দ্রুত রান না তুললে ভারত ৩৯৭ রান তুলতে পারত না। তাই বিরাটের ধৈর্য ধরে গড়া ইনিংসের মতোই গুরুত্বপূর্ণ শ্রেয়স ঝড়।
শামির সাত উইকেট
ভারতের জয়ের পিছনে বড় কারণ অবশ্যই শামি। তাঁর হাতেই নিউ জ়িল্যান্ডের উইকেট পড়া শুরু এবং তাঁর হাতেই শেষ। ডেভন কনওয়ের উইকেট নিয়ে কিউইদের প্রথম ধাক্কাটা তিনিই দিয়েছিলেন। শুরুতে ২ উইকেট হারানোর পরেও লড়ছিলেন উইলিয়ামসন। তিনি ১৮১ রানের জুটি গড়েন ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে। সেই জুটিও ভাঙেন শামি। শেষ উইকেটটিও নিলেন তিনি। নিউ জ়িল্যান্ডের পুরো ইনিংস জুড়েই দাপট দেখালেন বাংলার পেসার।
রোহিতের নেতৃত্ব
ভারত অধিনায়কের হাতে মাত্র পাঁচ জন বোলার। নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারেরা পাল্টা মারে চাপ তৈরি করে দিয়েছিলেন। রোহিতকে সেই সময় বোলার পরিবর্তন করতে হয়েছে যথেষ্ট বুদ্ধি করে। কখনও মাঝের ওভারে শামিকে এনেছেন, কখনও বুমরাকে। স্পিনারেরা সাফল্য না পেলেও তাঁদের ১০ ওভার করাতে হয়েছে হাতে ষষ্ঠ বোলার না থাকায়। পেসারদের সঙ্গে স্পিনারদের মিশিয়ে যে আক্রমণ তিনি তৈরি করলেন তা শেষ করে দেয় নিউ জ়িল্যান্ডকে।