শুরু হয়ে গিয়েছে লা লিগা। শনিবার রাতে নামছেন লিয়োনেল মেসিরা। বার্সেলোনা খেলবে মায়োরকার বিরুদ্ধে। কিন্তু, ফুটবল নয়, আপাতত সে দেশে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতায় জারি করা নির্দেশিকা নিয়েই চলছে চর্চা। যেন ফুটবল নয়, যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেসিরা!
হোটেল থেকে বাসে করে মাঠে আসার সময় দলের প্রত্যেক সদস্যকে মুখাবরণ এবং গ্লাভস পরে থাকতে হবে। ড্রেসিংরুমেও সব সময় এগুলি পরে থাকতে হবে। একমাত্র ওয়ার্ম-আপ করার সময় এবং ম্যাচের মধ্যে মুখাবরণ এবং গ্লাভস খোলা যাবে।
মাঠে এসে একটি দরজা দিয়েই দলের সকলকে ঢুকতে হবে। প্রবেশের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হবে, যাতে ভিড় এড়ানো যায়। প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে।
গোলের পরে উৎসব করার সময় সতীর্থদের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে বা যথাসম্ভব শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। একে অন্যের সংস্পর্শে এসে উৎসব নিষিদ্ধ।
ফুটবলারদের প্রত্যেকের নিজস্ব জলের বোতল থাকবে। বোতলটি তিনি ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও ফুটবলারের চোট লাগলে সেই ফাঁকে কারও হাত থেকে বোতল নিয়ে জল পান করা যাবে না।
কিক-অফের আগে ফুটবলটিকে জীবাণুমুক্ত করা হবে। বলবয়দের কাছেও ‘ডিসইনফেক্ট্যান্ট স্প্রে’ থাকবে। যখনই মাঠের বাইরে বল আসবে, তারা সেই স্প্রে দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে বলটিকে মাঠে ফেরত দেবে। বল-বয়দের প্রত্যেককে গ্লাভস ও মুখাবরণ পরে থাকতে হবে।
অতিরিক্ত ফুটবলারদের যে ‘বিব’ (জার্সির উপরে হাতকাটা যে পোশাক পরেন) দেওয়া হবে, তা এক জনেরটা অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না।
রিজার্ভ বেঞ্চে যাঁরা বসবেন, তাঁদের প্রত্যেকের গ্লাভস এবং মুখাবরণ পরা বাধ্যতামূলক। শুধু প্রথম দলের কোচকে এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়া যেতে পারে।
ম্যাচ শুরুর আগে অধিনায়কদের মধ্যে বা রেফারিদের সঙ্গে করমর্দনের প্রথা বন্ধ। একে অন্যকে স্বাগত জানাতে শারীরিক দূরত্বের নিয়ম মানতে হবে।
টসের সময়ে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানো যাবে না। দুই অধিনায়ক, রেফারি— প্রত্যেকের মধ্যে ২ মিটারের ব্যবধান থাকবে। ছবিও তোলা যাবে না।
টানেল দিয়ে মাঠে আসার আগে প্রত্যেককে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আবার মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগেও স্যানিটাইজ়ার লাগিয়ে নিতে হবে।
টানেলের মধ্যে আগের মতো সারিবদ্ধ ভাবে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানো যাবে না। মাঠে নামার সময়ে দু’দলের পাশাপাশি হাঁটার প্রথাও বন্ধ। আগে-পরে সারিবদ্ধ ভাবে শারীরিক দূরত্ব মেনে মাঠে নামবেন ফুটবলাররা।
বিরতিতে জার্সি খুলে জীবাণুমুক্ত করার নির্দিষ্ট স্থানেই তা রাখতে হবে। স্নানের জন্য ‘শাওয়ার’ ব্যবহারেও বিধিনিষেধ থাকবে।
ম্যাচের পরে অনলাইন সাংবাদিক সম্মেলন হবে। ‘মিক্সড জোন’ (যেখানে ম্যাচের পরে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন সাংবাদিকেরা) বলে কিছু থাকবে না।
রেফারিদের জন্যও নিয়ম থাকছে। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষায় ফল ‘নেগেটিভ’ হতে হবে। তাঁদের আলাদা ড্রেসিংরুম থাকবে।
স্টেডিয়ামে তিনটি ‘জোন’ করা হচ্ছে। ‘গ্রিন জোন’ সব চেয়ে স্পর্শকাতর। যা মূলত ফুটবলারদের প্রবেশ-পথ, ড্রেসিংরুম এবং মাঠ। ‘ব্লু জোন’ সাংবাদিকদের অঞ্চল বা ডিরেক্টরদের বক্স। ‘রেড জোন’ কার পার্কিং, টিমবাস রাখার জায়গা।