গেমস হবে কি না সিদ্ধান্ত দ্রুতই, বলে দিলেন কো

করোনা-আতঙ্ক ক্রমশ টোকিয়ো অলিম্পিক্স গেমসের উপরে ছায়া ফেলতে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৩:৫৭
Share:

বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার প্রেসিডেন্ট এবং কিংবদন্তি অ্যাথলিট সেবাস্তিয়ান কো।—ছবি রয়টার্স।

অলিম্পিক্স নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় চলে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার প্রেসিডেন্ট এবং কিংবদন্তি অ্যাথলিট সেবাস্তিয়ান কো। করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্বের বহু অ্যাথলিট এবং ফেডারেশন টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কো বলেছেন, ‘‘আগামী কয়েক দিন বা সপ্তাহের জন্য অলিম্পিক্স নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি হয়ে পড়বে।’’ যোগ করেন, ‘‘গত সপ্তাহেও বলেছি, যে কোনও মূল্যে অলিম্পিক্স নির্ধারিত সময়ে করতেই হবে এমন কথা নেই। অ্যাথলিটদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারটাও মাথায় রাখা জরুরি।’’

Advertisement

করোনা-আতঙ্ক ক্রমশ টোকিয়ো অলিম্পিক্স গেমসের উপরে ছায়া ফেলতে শুরু করেছে। এবং তা এতটাই যে, টোকিয়ো অলিম্পিক্স গেমসের কর্তারাও নাকি চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার।

এত দিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা, জাপান সরকার এবং গেমসের কর্তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে যাচ্ছিলেন, ২৪ জুলাই থেকে শুরু অলিম্পিক্স ঠিক সময়েই হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের অলিম্পিক সংস্থা এখন দাবি তুলছে, গেমস পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। যে দাবির সামনে টোকিয়োর সংগঠকেরা এখন বিকল্প রাস্তা নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন বলে খবর।

Advertisement

রবিবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টোকিয়ো গেমসের সঙ্গে জড়িত দুটি সূত্র পরিষ্কার বলেছে, অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। অলিম্পিক মশাল ইতিমধ্যেই জাপানে পৌঁছে গিয়েছে। যে মশাল দেখতে শনিবার ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার, হাজার মানুষ। যা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। সমস্যা হল, অলিম্পিক্সের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজার-হাজার কোটি টাকার স্পনসরশিপ। এখন পর্যন্ত অলিম্পিকক্সের প্রস্তুতিতে খরচ হয়েছে এক হাজার কোটি ডলারের উপরে। ঘরোয়া স্পনসরশিপ বাবদ জাপানের পাওয়ার কথা তিনশো লক্ষ ডলার। অলিম্পিক্স পিছিয়ে গেলে তাই বিশাল ধাক্কা খাবে জাপান। এ দিকে, আইওসি-র এক্সিকিউটিভ বোর্ড এ দিন জানিয়েছে যে তারা অ্যাথলিটদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং এ’ব্যাপারে পরিকল্পিত পরিকল্পনা ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। যে কারণে উঠে এসেছে বিকল্প ভাবনা। সংগঠক কমিটির সঙ্গে জড়িত এক কর্তা বলেছেন, ‘‘আমাদের এখন বলা হয়েছে, গেমস পিছিয়ে দেওয়ার কথা মাথায় রেখে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করতে। যে কারণে আমরা প্ল্যান এ, বি, সি, ডি তৈরি করে রাখছি। গেমস পিছিয়ে গেলে, তা আবার কবে করা সম্ভব, এই ব্যাপারটাও হিসেবের মধ্যে রাখতে হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অন্য কোন সময় অলিম্পিক্স করলেও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমবে, সেই হিসাবটাও মাথায় রাখা হচ্ছে। সরকারি ভাবে অবশ্য এই নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। তবে গেমস পিছনোর একটা ভাবনা যে শুরু হয়েছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে আর একটা ব্যাপারে। জানা গিয়েছে, আইওসির তরফে নাকি প্রত্যেকটি সদস্য দেশের জাতীয় অলিম্পিক কমিটির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, তাদের নিজেদের দেশে ক্রীড়াবিদদের প্রস্তুতি কতটা ধাক্কা খাচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে।

সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘কোভিড ১৯ এবং টোকিয়ো ২০২০ অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি’— এই শিরোনামে বেশ কিছু প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে জাতীয় অলিম্পিক সংস্থাগুলোর কাছে। যেখানে প্রধান প্রশ্নই ছিল— ‘‘কোভিড ১৯-এর কারণে যে সব জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে আপনাদের অ্যাথলিটদের প্রস্তুতিতে কী কী সমস্যা হচ্ছে?’’ মার্কিন সাঁতার সংস্থা শুক্রবারই গেমস বাতিলের দাবি তুলেছে। জানা গিয়েছে, মার্চের শেষে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসবে সংগঠক কমিটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement