ফাইল চিত্র
২৪ মার্চ: অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কতটা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে, তা নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট টমাস বাখ। কারণ, তাঁর এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে মানুষের জীবন।
২৪ জুলাই থেকে ৯ অগস্ট হওয়ার কথা ছিল অলিম্পিক্স। মঙ্গলবার অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরে সাংবাদিকদের বাখ বলেছেন, ‘‘মানুষের জীবন রক্ষার ব্যাপারটাই আমাদের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে।’’ এর আগে আইওসি বারবার বলে এসেছিল, গেমস পিছনোর ভাবনা তাদের নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করে তারা। বাখ জানিয়েছেন, যে-ভাবে বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে আর কোনও রাস্তা তাঁদের সামনে ছিল না। বাখ বলেছেন, ‘‘আমরা একমত হই যে, এই পরিস্থিতিতে অলিম্পিক্সকে পিছিয়ে দিতে হবেই। তবে পরের বছর গ্রীষ্মের মধ্যেই তা করে ফেলতে হবে।’’
আইওসি এবং সংগঠকরা এখন অন্য সমস্যার মুখে পড়বেন। ৩৩টি খেলার নতুন করে সূচি তৈরি করতে হবে, গেমস ভিলেজ বানাতে হবে, হোটেল সংরক্ষণ করতে হবে। বাখের কাছে অলিম্পিক্সের নতুন তারিখ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘দু’ঘণ্টা আগে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখনই আমার পক্ষে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। যে কারণে আমরা বলেছি চার সপ্তাহ সময় লাগবে এই প্রশ্নের উত্তর বার করতে। শুধু একটা প্রশ্নই নয়, আমাদের সামনে আরও অনেক প্রশ্ন আছে।’’ বাখ জানিয়েছেন, আইওসির কমিশন ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে নতুন তারিখ ঠিক করার ব্যাপারে। অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ার হতাশা সত্ত্বেও একটি সমীক্ষা বলছে, জাপানের ৭০ শতাংশ মানুষ এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত।
অলিম্পিক্স বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী আবে বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে সেরা পরিবেশের মধ্যে পারফর্ম করার সুযোগ পাবে অ্যাথলিটরা। দর্শকরাও নিরাপদ পরিবেশের মধ্যে অলিম্পিক্স উপভোগ করতে পারবেন।’’
অলিম্পিক্সের পাশাপাশি পিছিয়ে গিয়েছে প্যারালিম্পিক্সও। আন্তর্জাতিক প্যারালিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু পার্সনস বলেছেন, ‘‘পিছিয়ে দেওয়াটাই একমাত্র রাস্তা ছিল। মানুষের স্বাস্থ্যই সবার আগে বিবেচ্য। এই অতিমারির মধ্যে অলিম্পিক্স হওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষের জীবনের চেয়ে খেলাটা কোনও ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করা।’’ আইওসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ব্রিটিশ অলিম্পিক সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অ্যান্ডি অ্যানসন বলেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমরা কোনও ভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারতাম না। অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়াটাই ঠিক সিদ্ধান্ত।’’ ব্রিটেনের পাঁচ বারের অলিম্পিক্স পদকজয়ী স্যর স্টিভ রেডগ্রেভ বলেছেন, ‘‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মুখে অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়াটাই ছিল একমাত্র পথ। ঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।’’