উত্তেজনা: ক্ষিপ্ত সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। সোমবার মহমেডান মাঠে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মহমেডান ০ • রেনবো ০
কোচ বদল হলেও বদলাল না মহমেডান স্পোর্টিং। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের তিন ম্যাচ পরেও জয়ের মুখ দেখল না সাদা-কালো শিবির।
জিততে না পারায় বদলায়নি মহমেডান মাঠের আবহও। সোমবার রেফারি প্রতীক মণ্ডলের একটি সিদ্ধান্তকে নিয়ে উত্তাল হল মাঠ। বৃষ্টির মতো জলের বোতল পড়ল মাঠে। সঙ্গে ইট, কাঠের টুকরো। রেড রোডের দিকের গ্যালারিতে মহমেডানের ক্ষিপ্ত সমর্থকদের সামাল দিতে যখন পুলিশ লাঠি, ঢাল নিয়ে হাজির, মাঠ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত, তখন ইডেনের দিকের গ্যালারিতে আরও বড় ঝামেলা শুরু হয়ে যায়।
প্রেস বক্স থেকে দেখা যায় গাছের ডাল, ক্রিকেট বল হাতে নিয়ে ফেন্সিং টপকে রেনবো রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে যেতে উদ্যত হচ্ছেন আর এক দল মহমেডান সমর্থক। ওই সময় রেনবো কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী হঠাৎ রেগে গিয়ে মাঠের পাশের জালে লাথি মারায় গন্ডগোল তীব্র আকার নেয়। প্রশান্ত বলতে থাকেন, ‘‘আমি মহমেডানের হয়ে চার বছর খেলেছি। আমাকে এ ভাবে গালাগালি করছে।’’ তাতেও ইটবৃষ্টি থামেনি। বরং তা আরও বাড়ে। গ্যালারিতে লাঠি নিয়ে উঠে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় নয় মিনিট। মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন ফুটবলারেরাও। এর পরে খেলা ফের শুরু হয়।
মহমেডান-সাদার্ন সমিতি ম্যাচেও ঝামেলা হয়েছিল। পুলিশের সামনেই আক্রান্ত হয়েছিলেন রেফারি। এ দিন অবশ্য পুলিশ কোনও ঝুঁকি নেয়নি। খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেফারিদের ঘিরে গাড়িতে তুলে দেয়।
বৃষ্টির মধ্যে মহমেডান মাঠের অবস্থা এ দিন ছিল খাটালের চেয়েও খারাপ। বল গড়াচ্ছে না। দুই গোল পোস্টের সামনেই কাদায় বল আটকে যাচ্ছিল বারবার। এই অবস্থাতেই খেলা চলতে থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের সাতাশ মিনিটে হঠাৎ-ই রেনবোর পেনাল্টি বক্সে জটলার মধ্যে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন মহম্মদ আমিরুল। তাঁকে ট্যাকল করেন রেনবোর স্টপার আগুও রিচার্ড। জল-কাদার মধ্যে পড়ে যান আমিরুল। পেনাল্টির দাবিতে সরব হন মহমেডানের আর্থার কোসি, তীর্থঙ্কর সরকাররা। রেফারি খেলা চালিয়ে যেতে বলায় গ্যালারিতে গন্ডগোল শুরু হয়। চতুর্থ রেফারির দিকে তেড়ে যান টিডি দীপেন্দু বিশ্বাস-সহ পুরো মহমেডান রিজার্ভ বেঞ্চ। তখনই রেনবোর কোচ ও ফুটবলারদের সঙ্গে শুরু হয় তর্কাতর্কি।
এমনিতে ময়দানের প্রায় সব মাঠের হালই এখন খারাপ। বৃষ্টিতে প্রতি বছরই এমন হয়। অন্য দুই প্রধানের চেয়ে মহমেডান মাঠের হাল যেন একটু বেশিই খারাপ। প্রেসবক্স ভাঙাচোরা। সেখানে যেতে হয় জমা জলের মধ্যে দিয়ে। মাঠেরও একই অবস্থা। পা ডুবে যাচ্ছে কাদায়। দু’প্রান্ত ছাড়া মাঠের প্রায় সব জায়গায় জল। শারীরিক শক্তি প্রয়োগ, বল তুলে বিপক্ষের বক্সে ফেলে গোল করার চেষ্টা করলেন ফুটবলারেরা।
দু’দলই গোলের সুযোগ পেয়েছিল। মহমেডানের আমিরুল ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে পারলেন না। রেনবোর কাজিম অ্যামোবি একা মহমেডান গোলকিপার প্রিয়ান্ত সিংহকে পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ। তবে রেনবোর হয়ে দারুণ খেললেন স্টপার রিচার্ড।