রক্ষাকর্তা বুফন। ছবি: গেটি ইমেজেস।
বায়ার্ন মিউনিখ-২ (মুলার, রবেন)
জুভেন্তাস-২ (দিবালা, স্তেফানো)
বিশ্বের দুই সেরা গোলকিপার একে অপরের মুখোমুখি— বুফন বনাম ন্যয়ার। যে টাগ অব ওয়ার-টা দেখতে মেসিদের ম্যাচও সরিয়ে জুভেন্তাস-বায়ার্ন দেখতে টিভির সামনে বসেছিলাম মঙ্গলবার রাতে।
মাঠে বল গড়ানোর আগেই চমক। টানেলে যখন দু’দল দাঁড়িয়ে, টিভি ক্যামেরা ফোকাস করল দুই সুপারস্টার গোলকিপারকে। দেখলাম ন্যয়ারের কাছে গিয়ে বুফন প্রথমে হাত মেলাল। তার পর যার হাত ধরে মাঠে নামবে সেই খুদের সঙ্গে জুড়ে দিল গল্প। ন্যয়ার তখন গম্ভীর। মনঃসংযোগে ব্যস্ত।
নিজে গোলকিপার বলেই জানি, কিপার যখন এতটা খোশমেজাজে তখন তার টিমও মাঠে চাপমুক্ত থাকে। জুভেন্তাস যে গুয়ার্দিওয়ালার বার্য়ানকে মাঠে ছেড়ে কথা বলবে না, তখনই মন বলছিল। আর প্রথমার্ধে বুফন যা খেলল, দেখে ভাবছিলাম ন্যয়ারের চেয়ে ন’বছরের বড় হয়েও বুফন (৩৮ বছর) কী ভাবে এই অসাধারণ ফিটনেস ধরে রেখেছে! ফিটনেসই ওকে এই মারকাটারি ফর্ম ধরে রাখতে সাহায্য করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। ভিদালের শট ঝাঁপিয়ে সেভ করে লড়াইটা শুরু করেছিল বুফন। সেটাই পরে প্রেরণা হয়ে দাঁড়াল ওর টিমের কাছে। পিছন থেকে সারাক্ষণ গাইড করে গেল সতীর্থদের। প্রথমার্ধেই বুফনকে তিনটে অব্যর্থ গোল সেভ করতে দেখলাম। তাই দু’টো গোল খেলেও পাল্টা দু’গোল দিতে পেরেছে বুফনের জুভেন্তাস। আর যে দু’টো গোল খেয়েছে জুভেন্তাস, তাতে গোলকিপারের কিছু করার ছিল না। বরং স্কোরার মুলার আর রবেনের কৃতিত্ব বেশি। রবেনেরটা তো ওর ট্রেডমার্ক গোল!
ম্যাচটা কোনও দল যে জেতেনি তার একটা বড় কারণ বায়ার্ন কিপার ন্যয়ার। ফুটবলে গোলকিপার হল লাস্ট লাইন অব ডিফেন্স এবং ফার্স্ট লাইন অব অ্যাটাক। আমার কিন্তু ইদানীং ন্যয়ারকে দেখে মনে হয় ও প্রথমটায় যত বেশি মনোযোগী তার চেয়েও যেন বেশি মন দ্বিতীয়টায়। আর সেটাই কখনও কখনও বুমেরাং হচ্ছে ওর আর ওর দলের কাছে। জুভেন্তাসের বিরুদ্ধেও হল। স্তেফানোর গোলের সময় ন্যয়ার কেন এগিয়ে এসে বলটাকে ডেঞ্জার জোন থেকে ক্লিয়ার করল না সেটাই বুঝলাম না। ন্যয়ারের বলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরি হওয়াতেই বুফনের দলের ২-২ করা।
তবে আমার দুই ভীষণ প্রিয় গোলকিপারের কাউকেই মুখ চুন করে যে মাঠ ছাড়তে হয়নি, সেটা বরং স্বস্তিই দিয়েছে। গুয়ার্দিওয়ালার মতো ধুরন্ধর কোচের ডিফেন্স কিন্তু বিপক্ষের কাউন্টার অ্যাটাকের সামনে কেঁপে যাচ্ছে! এই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে লাম, আলাবারা দু’গোলে এগিয়ে থাকার সময়েও ওদের ডিফেন্সকে বেশ কয়েকবার কাঁপতে দেখলাম। ঘরের মাঠ মিউনিখে ফিরতি ম্যাচে বায়ার্নকে যেটা ভোগাতে পারে। তা সে ন্যয়াররা অ্যাওয়ে ম্যাচে যতই জোড়া গোল দিয়ে আসুক না কেন বুফনদের।