গত বারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাতকে কোণঠাসা করে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালের দিকে এক ধাপ এগিয়ে রইল বাংলা। জয়পুরে কোয়ার্টার ফাইনালে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে ৩০৭ রানে এগিয়ে মনোজ তিওয়ারিরা।
পার্থিব পটেলদের ২২৪ রানে অল-আউট করে নায়ক হয়ে উঠলেন তিন পেসার— অশোক ডিন্ডা, ঈশান পোড়েল ও বোড্ডুপল্লি অমিত। অন্য দিকে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির মুখে ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন। মরসুমের তৃতীয় সেঞ্চুরি থেকে মাত্র সাত রান দূরে এই ডান-হাতি ওপেনার।
তৃতীয় দিনের শুরুতে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান রুজুল ভট্টকে বোল্ড করে দেন বাঁ-হাতি বঙ্গ স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিক। তার পরে ঠিক পাঁচ রানের মধ্যে বাকি তিন উইকেট হারায় গুজরাত। প্রদীপ্ত ছাড়া বাকি ন’টি উইকেটই নেন বাংলার পেসাররা। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া ঈশান পোড়েল এই ইনিংসে ৬৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। রঞ্জি ট্রফিতে তিন ম্যাচে এই নিয়ে ১৩ উইকেট পেলেন বাংলার এই প্রতিশ্রুতিমান পেসার।
রঞ্জি ট্রফি রাউন্ড-আপ
• জয়পুরে: প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল-বাংলা ৩৫৪ ও ১৭৭-১ (অভিমন্যু ৯৩ ব্যাটিং, ঋত্বিক ৪০ ব্যাটিং) বনাম গুজরাত ২২৪ (ভার্গব মেরাই ৬৭, অশোক ডিন্ডা ৩-৪৮)।
• বিজয়ওয়াড়ায়: দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল- মধ্যপ্রদেশ ৩৩৮ ও ৪৭-২ বনাম দিল্লি ৪০৫ (কুনাল চান্ডেলা ৮১, ধ্রুব শোরে ৭৮)।
• সুরতে: তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল- বিদর্ভ ২৪৬ ও ৭৭-১ বনাম কেরল ১৭৬ (রজনিশ গুরুবানী ৫-৩৮)।
• নাগপুরে: চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল- মুম্বই ১৭৩ ও ১২০-৩ (সূর্যকুমার যাদব ৫৫ ব্যাটিং) বনাম কর্নাটক ৫৭০ (শ্রেয়স গোপাল ১৫০ ন.আ.,সি এম গৌতম ৭৯, শিবম দুবে ৫-৯৮)।
বাংলার ভাল ফলের জন্য অবশ্য বোলারদের বোঝাপড়ার ওপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন ঈশান। একজন উইকেট তোলার জন্য ঝাঁপালে অন্য দিকের বোলার বিপক্ষের রান আটকে সহায়তা করবেন, এমন পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছেন তাঁরা। তৃতীয় দিনের খেলার শেষে জয়পুর থেকে ঈশান বললেন, ‘‘আমাদের বোলাররা নিজেদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া রেখে চলেছি। একজন উইকেট নিলে অন্য জন মেডেন ওভার করে তাঁকে সাহায্য করেছে।’’
তৃতীয় দিনের শেষে জয়পুরের সোয়াই মানসিংহের উইকেট কিছুটা মন্থর হয়ে পড়লেও তার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি পীযুষ চাওলা, সিদ্ধার্থ দেশাইরা। সেই উইকেটেই গুজরাতের দুই নির্ভরযোগ্য স্পিনারকে সহজেই খেললেন বাংলার সফল ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন (৯৩) ও ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় (৪০)। বাংলার বোলাররা বিপক্ষের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেন, তা বজায় রাখেন ব্যাটসম্যানরাও।
প্রথম ইনিংসে ১২৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির মুখে এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। তিনি অবশ্য সেঞ্চুরির কথা চিন্তা না করে ব্যবধান বাড়ানোর ওপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন। জয়পুর থেকে অভিমন্যু বলেন, ‘‘তৃতীয় দিনের শেষে উইকেটের গতি কমে যাওয়ায় ব্যাট করতে কিছুটা অসুবিধে হচ্ছে। তাই আমি আর ঋত্বিক ওদের খারাপ বলগুলো কাজে লাগিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেছি।’’ চতুর্থ দিনের পরিকল্পনার কথা জিঞ্জাসা করা হলে তিনি যোগ করেন, ‘‘চতুর্থ দিনে আরও রান তুলে গুজরাতের সামনে বড় টার্গেট দেওয়াটাই এখন আমাদের লক্ষ্য।’’