ভরসা: আকাশের গতিতে আস্থা রাখছে বাংলা শিবির। ফাইল চিত্র
ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে ১০ জানুয়ারি নিউজ়িল্যান্ড উড়ে যাচ্ছেন ঈশান পোড়েল। বুধবার তাঁকে ছাড়াই নাগপুর রওনা হল বাংলা।
রঞ্জি ট্রফির প্রথম তিন ম্যাচে চার ইনিংসে ১২ উইকেট ঈশানের ঝুলিতে। দলের একটি জয় ও দু’টি ড্রয়ের নেপথ্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাই গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন বিদর্ভের বিরুদ্ধে নামার তিন দিন আগে ঈশানের অভাব অনুভব করছেন বাংলার কোচ।
বিমানবন্দরে বসে আনন্দবাজারকে ফোনে অরুণ লাল বলেন, ‘‘ঈশানকে ছাড়া বিপক্ষের ২০টি উইকেট নেওয়া কঠিন। আমাদের পেস বিভাগের সব চেয়ে বড় ভরসা ও। আকাশ দীপ ও মুকেশ ভাল বল করছে। কিন্তু ঈশানকে প্রত্যেকটি দল ভয় পেতে শুরু করেছে।’’ যোগ করেন, ‘‘এক দিক থেকে আমি গর্বিতও। বাংলা থেকে ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা ওর রয়েছে। সেই লক্ষ্যে এক ধাপ করে এগিয়ে যাচ্ছে ঈশান।’’
ঈশানের পরিবর্তে বাংলার পেস বিভাগ সামলানোর দায়িত্ব আকাশ দীপের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত দু’টি ম্যাচ খেলেছেন। দুই ইনিংস বল করে তাঁর উইকেটসংখ্যা ৯। ইতিমধ্যেই রঞ্জি ট্রফির গতিময় পেসারদের তালিকায় উপরের দিকে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তরুণ পেসারের পারফরম্যান্সই বিদর্ভের বিরুদ্ধে ভরসা বাংলার। অরুণের কথায়, ‘‘ঈশান না থাকায় বাংলার পেস বিভাগ সামলাতে হবে আকাশকে। জীবনের তৃতীয় রঞ্জি ট্রফি ম্যাচেই ওর উপরে বড় দায়িত্ব থাকছে। বড় জায়গায় খেলার স্বপ্ন থাকলে এ ধরনের চাপ সামলাতেই হবে। নাগপুর থেকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে ফেরার লক্ষ্যেই আজ রওনা দিচ্ছি।’’
নাগপুরের পিচে ঘাস থাকবে কি না, তা এখন থেকেই বলতে পারছেন না অরুণ। এ মরসুমে বিদর্ভে যে দু’টি ম্যাচ হয়েছে, তাতে যে দল আগে ব্যাট করেছে, তারা সাফল্য পেয়েছে। প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ৬০ রানে রাজস্থানকে হারিয়েছে বিদর্ভ। দ্বিতীয় ম্যাচে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট পেয়েছে তারা। তাই নাগপুরের পিচ থেকে যে পেসাররা ইডেনের মতো সুবিধা পাবেন না, তা ধরে নেওয়াই যায়। তবুও তরুণ পেসার গোলাম মোস্তাফাকে আজ, বৃহস্পতিবার প্রথম অনুশীলনে দেখে নেওয়া হবে। কোচ সন্তুষ্ট হলে এবং উইকেটে ঘাস থাকলে বিদর্ভের বিরুদ্ধেই অভিষেক হতে পারে এই ডান-হাতি পেসারের।
তরুণদের জায়গা দেওয়া হলেও, বাংলা দল অশোক ডিন্ডাকে ফেরাতে নারাজ। প্রথম কারণ ফিটনেস সমস্যা। দলের অনেকেই জানিয়েছেন, মরসুমের দু’মাস আগে যে ফিটনেস ট্রেনিং শুরু হয়েছিল, তাতে ডিন্ডার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল না। ডিন্ডা নিজের ফিটনেসের মাপকাঠি বাড়াতে পারেননি। ডিন্ডাকে না ফেরানোর দ্বিতীয় কারণ, তিনি নাকি ড্রেসিংরুমে শৃঙ্খলা বজায় রাখছেন না।
দলের অনেকেরই ধারণা, অভিজ্ঞ পেসার দলে থাকলে আকাশ দীপের এ বারও রঞ্জি অভিষেক হত না। প্রশ্ন উঠছে, ‘ডিন্ডার কি তা হলে এটাই শেষ মরসুম?’ শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই ১১৬ ম্যাচ খেলে তাঁর উইকেটসংখ্যা ৪২০। গত দশ বছরের মধ্যে আট বারই বাংলার সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হিসেবে মরসুম শেষ করেছেন। তাঁর মতো ক্রিকেটারের বাংলার হয়ে যাত্রা এ ভাবে থেমে যেতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।