সৌরভ অধ্যায় বাড়ানোর উপর জোর, শ্রীনি কি আইসিসিতে

জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের এই সভায় যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, তার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সংবিধানে কিছু বিষয়ের পরিমার্জন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৬
Share:

নজরে: বোর্ডের সংবিধানে পরিবর্তন চান সৌরভ। ফাইল চিত্র

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দায়িত্ব নেওয়ার পরে আজ, রবিবার প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। যেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

Advertisement

জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের এই সভায় যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, তার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সংবিধানে কিছু বিষয়ের পরিমার্জন। এ ছাড়াও আগের মতো ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির ধাঁচে নতুন কমিটি গড়ার জন্যও আলোচনা হওয়ার কথা। পাশাপাশি আইসিসি-তে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে কে প্রতিনিধিত্ব করবেন তা নিয়েও আলোচনা হবে।

এ ছাড়াও, আজ সভায় যে প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে তা হল, বোর্ডের পদাধিকারীদের ‘কুলিং অফ’ নিয়মের পরিমার্জন, বোর্ড সচিবের ক্ষমতা বৃদ্ধি। এ ছাড়াও, যদি ক্রিকেট প্রশাসনের স্বার্থে বোর্ড সংবিধানে কিছু সংশোধন করে তা হলে আদালত যেন রায়দান থেকে বিরত থাকে, তা নিয়েও আলোচনা হবে।

Advertisement

নির্বাসনের যন্ত্রণা ভোলানো ট্রিপল সেঞ্চুরি, ওয়ার্নারের স্ত্রী শোনালেন মহাত্মা গাঁধীর কথা

অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দীর্ঘ ৩৩ মাস ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসকদের কমিটি (সিওএ)।

এই মুহূর্তে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়াদ নয় মাস। এর আগে ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনকে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত লোঢা কমিটি বেশ কিছু সংষ্কারের নির্দেশ দিয়েছিল। যদি রবিবারের বৈঠকে বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশের কিছু পরিমার্জন করতে পারে, তা হলে মেয়াদ বাড়তে পারে বোর্ড প্রেসিডেন্টের। ইতিমধ্যে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়ে পারে, তা নিয়ে যে সূচি প্রকাশ করেছে ভারতীয় বোর্ড, সেখানে বোর্ডের বর্তমান সংবিধানে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন করার জন্য প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদিত বোর্ডের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের কোনও পদাধিকারী বোর্ড বা রাজ্য সংস্থায় তিন বছর করে দু’টি মেয়াদ কাটালে তার পরে তাঁকে তিন বছরের জন্য ‘কুলিং অফ’-এ যেতে হবে। কিন্তু বোর্ডের বর্তমান প্রস্তাব ‘কুলিং অফ’-শুরু হোক কোনও পদাধিকারী বোর্ড বা রাজ্য সংস্থায় একটানা ছ’বছর কাজ করার পরে। যদি এই প্রস্তাব বোর্ড সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশের সমর্থন পেয়ে পাস হয়ে যায়, তা হলে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও সচিব জয় শাহের মেয়াদ বাড়তেও পারে।

বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল শনিবার সংবাদসংস্থাকে জানান, সংবিধানে যে সব সংশোধন বা পরিমার্জনের কথা বলা হয়েছে, তা বোর্ডের পরিকাঠামো দৃঢ় করার জন্যই। আর তা কার্যকর হবে সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদন করলে। তাঁর কথায়, ‘‘সত্তরোর্ধ্বদের নিয়ে যে নিয়ম রয়েছে, তা সংষ্কারের কথা বলছি না আমরা। তা বহাল থাকুক। আমাদের বক্তব্য, কেউ যদি সাফল্যের সঙ্গে রাজ্য সংস্থা পরিচালনা করেন, তা হলে তাঁকে কুলিং অফ-এ পাঠিয়ে প্রশাসনের ছন্দ নষ্ট করা হবে কেন? এ ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটকে আরও সমৃদ্ধ করা যায়, আর তা যদি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে হয়, তা হলে তো ভালই হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে প্রস্তাবিত সংস্কার এই বার্ষিক সাধারণ সভায় পাস হবে, তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনা হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের যুক্তি জানাব। আমাদের কী কী প্রশাসনিক অসুবিধা হতে পারে বা কী কী সুবিধা হতে পারে ক্রিকেট প্রশাসন পরিচালনার জন্য, তা ব্যাখ্যা করা হবে সুপ্রিম কোর্টে। যদি সর্বোচ্চ আদালত আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে, তখন সংবিধানের সংষ্কার হবে আনুষ্ঠানিক ভাবে।’’

এ ছাড়াও গত তিন বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও আইসিসি-র সংঘাত তীব্র হয়েছে। আইসিসির কাছে বকেয়া রয়েছে ভারতীয় বোর্ডের। এই সব কিছুই হয়েছে, সৌরভ প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ৩৩ মাস প্রশাসকদের কমিটি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনা করার সময়ে। কিন্তু সৌরভের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বোর্ড রবিবারের বৈঠকে আলোচনার প্রস্তাব রেখেছে, আইসিসিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করুন কোনও অভিজ্ঞ ব্যক্তি। সে ক্ষেত্রে সত্তরোর্ধ্বদের ক্রিকেট প্রশাসন থেকে দূরে রাখার যে নিয়ম রয়েছে, তা শিথিল করা হোক। এই প্রস্তাব পাস হয়ে গেলে প্রাক্তন ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের আইসিসিতে যাওয়ার রাস্তা তৈরি হতে পারে। বোর্ডও এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্বার্থের জন্যই এমন কোনও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে আইসিসিতে পাঠানো হোক যাঁর জনসংযোগ ও আইসিসির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।’’

এ ছাড়াও বোর্ডের একটা বড় অংশ চান সচিবের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হোক। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, বোর্ডের সিইও ন’সদস্যের অ্যাপেক্স কাউন্সিলের শীর্ষে থাকেন। বোর্ডের বর্তমান কর্তারাও চান, সচিবের ক্ষমতা বাড়ুক। সিইও তাঁর কাছেই রিপোর্ট করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement