সাইনা নেওয়াল। —ফাইল চিত্র।
ব্যাডমিন্টন থেকে অবসর নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন সাইনা নেওয়াল। বাতের সমস্যায় ভুগছেন লন্ডন অলিম্পিক্সে পদকজয়ী খেলোয়াড়। আর কিছু দিন অপেক্ষা করতে চান। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অবসর নিতে পারেন তিনি।
বেশ কিছু দিন ধরে কোর্টের বাইরে সাইনা। কোনও প্রতিযোগিতায় খেলছেন না। অনুশীলনও করছেন না। কেন হঠাৎ ব্যাডমিন্টন থেকে দূরে সরে গিয়েছেন লন্ডন অলিম্পিক্সে পদকজয়ী? প্রাক্তন শুটার গগন নারাংকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের সমস্যার কথা বলেছেন সাইনা। দেশের প্রাক্তন এক নম্বর মহিলা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘আমার হাঁটুর অবস্থা ভাল নয়। বাতের সমস্যা রয়েছে। কার্টিলেজের অবস্থা বেশ খারাপ। প্রতি দিন আট-ন’ঘণ্টা পরিশ্রম করা সম্ভব নয় এই পরিস্থিতিতে। এই অবস্থায় বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করা সম্ভব? মনে হচ্ছে, এটা আমাকে এ বার মেনে নিতে হবে। কারণ দিনে দু’ঘণ্টা অনুশীলন করে সর্বোচ্চ পর্যায় লড়াই করা যায় না। প্রত্যাশিত ফল পাওয়াও সম্ভব নয়।’’
প্যারিস অলিম্পিক্সে ভারতের সেফ দ্য মিশনের সঙ্গে কথা বলার সময় বেশ হতাশ শুনিয়েছে সাইনাকে। গত বছর সিঙ্গাপুর ওপেনের পর সাইন কোনও প্রতিযোগিতায় খেলেননি। আর খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন না সাইনা। খেলোয়াড়জীবন টেনে নিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে করছেন না সাইনা।
হায়দরাবাদের বাসিন্দা বলেছেন, ‘‘অবসরের কথা ভাবতে শুরু করেছি। একটু হতাশ লাগছে। খেলাটা আমাদের কাছে সাধারণ মানুষের কাজের মতোই। এমনিতেই খেলোয়াড়দের কাজের জীবন ছোট হয়। ন’বছর বয়সে খেলা শুরু করেছিলাম। আগামী বছর আমার বয়স হবে ৩৫। সেই অর্থে অনেক বছর ধরেই খেলছি। আমি আমার খেলা নিয়ে গর্বিত। শরীর আমাকে যথেষ্ট সঙ্গ দিয়েছে। যা যা অর্জন করতে পেরেছি, তাতে আমি খুশি। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। এই বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই। তখন পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।’’
অলিম্পিক্স পদক ছাড়াও ২০১০ এবং ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন সাইনা। নিজের খেলোয়াড়জীবন নিয়ে আক্ষেপ নেই তাঁর। সাইনা বলেছেন, ‘‘ছোটবেলায় সকলেরই স্বপ্ন থাকে অলিম্পিক্সে খেলার। ওই পর্যন্ত যাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রস্তুতি নিতে হয়। পরিশ্রম করতে হয়। যখন বোঝা যায়, সেই পর্যায়ে পৌঁছনো আর সম্ভব নয়, তখন হতাশ লাগে। মানসিক ভাবে খেলা চালিয়ে যেতে চাইলেও সম্ভব হয় না। কারণ শরীর সঙ্গ দেয় না। পারফরম্যান্স ভাল হয় না। চোট সমস্যা তৈরি করে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘জীবনে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। তিনটি অলিম্পিক্সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। সব সময় নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। খেলোয়াড়জীবন নিয়ে আমি খুশি।’’