প্রত্যয়ী: বাংলা দল নিয়ে এখনও স্বপ্ন দেখছেন অরুণ। ফাইল চিত্র
কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই নিয়ম বদলে দিয়েছিলেন। মরসুম শুরু হওয়ার তিন মাস আগে থেকে চালু করেছিলেন ট্রেনিং। অনেকেই আপত্তি জানিয়েছেন। কিন্তু অরুণ লাল শোনেননি। বলেছিলেন, ‘‘তুমি যখন কোচ হবে, নিজের মতো দল চালিয়ো। আমাকে আমার মতো চালাতে দাও।’’
মরসুম শুরু হওয়ার আগে ফিটনেসে জোর দিয়েছিলেন। শেষ দিন পর্যন্ত চোট নিয়ে কোনও সমস্যা দেখা যায়নি। ফাইনালের পরে হারের যন্ত্রণায় যখন বিদ্ধ দল। ড্রেসিংরুমে ঢুকে প্রত্যেককে জড়ো করে শুরু করেন মরসুমের শেষ ক্লাস। প্রায় এক ঘণ্টার ক্লাস নেন। অরুণ। কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়া আকাশ দীপ, অর্ণব নন্দীরা বেরিয়ে আসেন হাসিমুখে। কী বললেন তিনি? কী এমন কাজ করল তাঁর টোটকা যে কান্নায় ভেঙে পড়া শিবির বেরিয়ে এল হাসিমুখে?
অরুণ বললেন, ‘‘ওরা যে কত বড় ক্রিকেটার, তা প্রমাণ করে দিয়েছে। বাংলা প্রমাণ করেছে ৩৭টি দলের মধ্যে ওরা সেরা। প্রত্যেক পরিস্থিতির জন্য তৈরি ছিল ওরা।’’ যোগ করেন, ‘‘বাংলা পেল আকাশ দীপ, শাহবাজ আহমেদের মতো ক্রিকেটারদের। ওদের বললাম, এ বার তোরা ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের মন জিতে নিয়েছিস। পরের বার জিততে হবে ট্রফি। আমি নিশ্চিত। ওরা পারবেই।’’
চতুর্থ দিনের শেষ পর্যন্ত অরুণ জানতেন, ম্যাচ তাদের মুঠোয়। ঠিক কোন মুহূর্তে মনে হয়েছিল হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে ম্যাচ? অরুণের উত্তর, ‘‘অনুষ্টুপ আউট হওয়ার পরেই মনে হয়েছিল, এখান থেকে জেতা কঠিন। তবুও আকাশ খারাপ ব্যাট করে না। কিছুটা আশা ছিল। একই ওভারে ও আউট হওয়ার পরে বুঝে গিয়েছিলাম আর হবে না।’’
অনুষ্টুপ নিজেও বললেন, ‘‘আমার উইকেটটাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত। প্রচণ্ড চেষ্টা করেছি। এখন বুঝতে পারছি, শট বাছাইয়ে ভুল ছিল। সাধারণত মিডল স্টাম্পের বল ফ্লিক করতে চলে যাই না। কিন্তু কী মনে হল।’’ আরও বলেন, ‘‘তবে এ বারের রঞ্জি থেকে বাংলার ক্রিকেটে অনেক প্রতিভা উঠে এসেছে। রাজ্যের ক্রিকেটের জন্য অবশ্যই এটি ইতিবাচক একটি দিক।’’ হতাশ ঋদ্ধি, মনোজও। ঋদ্ধির কথায়, ‘‘প্রথম ফাইনাল খেলেছি। জেতার খিদে নিয়ে নেমেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আর পারলাম না। খারাপ লাগছে।’’
অন্য দিকে প্রথম রঞ্জি ট্রফি জিতে চেতেশ্বর পুজারা জানিয়ে দিলেন, ‘‘ভারতের হয়ে সিরিজ জেতার মুহূর্ত সব সময়েই এগিয়ে রাখব। দেশের চেয়ে আগে কিছু হয় না। কিন্তু রঞ্জি জয়ের অনুভূতিও অসাধারণ।’’
শেষ দিনেও পিচ নিয়ে বিতর্ক থামল না। পুজারা নিজেও বলছিলেন, ‘‘পিচ প্রচণ্ড মন্থর। সহজে ব্যাটসম্যনেরা রান করতে পারছিল না।’’ অনুষ্টুপেরও একই মত। ‘‘এই পিচে দাঁড়িয়ে থাকলে রান আসে। কিন্তু শট খেলা যায় না।’’
সূত্রের খবর, পিচ তৈরির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বোর্ডকে চিঠি পাঠাতে চাইছে সিএবি।