লড়াকু: প্রত্যাবর্তনেই বড় রান করে আত্মবিশ্বাসী ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন গত বছর জানুয়ারিতে। তার পর থেকে ভারতীয় দলের জার্সি পরা হয়নি। কিন্তু আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভারতীয় জার্সিতে প্রত্যাবর্তন হতে চলেছে তাঁর। তার আগে ক্যারিবিয়ান সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে দুরন্ত ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ভারতীয় ‘এ’ ব্যাটিং বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে মুক্ত করলেন।
চার দিনের বেসরকারি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২২৮ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’। জবাবে ১৩৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে সমস্যায় পড়ে ঋদ্ধিদের দল। ৩১ রান করে হনুমা বিহারী যখন ফিরে যাচ্ছে, তখন স্কোরবোর্ড বলছে ১৬৮-৫। সেখান থেকে শিবম দুবের সঙ্গে ১২৪ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফেরান বাংলার উইকেটকিপার। দ্বিতীয় দিনের শেষে ৭১ রান করে ফিরে যান শিবম। কিন্তু ঋদ্ধি উইকেট কামড়ে পড়েছিলেন। তৃতীয় দিন সকালে আউট হন ঋদ্ধি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজে আঙুলে চোট পেয়ে দেশে ফিরে আসার পরে আইপিএলের কয়েকটি ম্যাচ খেলেন। সেখানেও চোট পান ঋদ্ধি। আঙুলে চোটের পাশাপাশি কাঁধে চোট পেয়ে প্রায় ৯ মাস মাঠের বাইরে থাকতে বাংলার উইকেটকিপারকে। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে বাংলার হয়ে ফেরেন তিনি। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়েও শেষের চারটি ম্যাচ খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে তাঁর ম্যাচ প্র্যাক্টিস বলতে আইপিএলের কয়েকটি ম্যাচ। সেই সঙ্গে ক্লাব ক্রিকেটে কালীঘাটের হয়ে একটিমাত্র লিগের খেলা।
ম্যাচ না থাকলেও অনুশীলনের সঙ্গে কখনও আপস করতেন না ঋদ্ধি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে প্রাক্তন ক্লাব মোহনবাগান মাঠে দিনের পর দিন ফিজিক্যাল ট্রেনিং করে নিজেকে তৈরি করেছেন। বাংলার ফিটনেস ট্রেনার সঞ্জীব দাসের সঙ্গে কাজ করে ফিটনেসের মাপকাঠি বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এমনকি নেট প্র্যাক্টিসের জন্য দীর্ঘদিন বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গিয়েছিলেন। তার ফলই হয়তো এই ম্যাচে পেলেন বাংলার উইকেটকিপার।
রান করার পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে দু’টি ক্যাচ ও একটি স্টাম্পিংও রয়েছে ঋদ্ধির। তাঁর এই প্রয়াসই বুঝিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের জন্য তিনি কতটা মরিয়া। অবশ্য মরিয়া হবেন নাই বা কেন। চোট সমস্যায় ভুগে ক্রিকেট জীবনের প্রায় একটি বছর হারিয়েছেন ঋদ্ধি। এখন সেই হতাশা দূর করার সময় হয়ে গিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পা রেখেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় উইকেটকিপার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’-র ২২৮ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩১২ রানে অলআউট ভারত ‘এ’। ৮৪ রানে পিছিয়ে ব্যাট করতে নেমে ৫১ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারায় ঋদ্ধিদের বিপক্ষ। ঘূর্ণি পিচে সেই শাহবাজ নাদিমই ভারতকে বেসরকারি টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। নাদিমের পাশাপাশি কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ও মায়াঙ্ক মার্কণ্ডের মতো তারকা স্পিনার খেলছেন ঋদ্ধিদের দলে। প্রথম ইনিংসে গৌতম উইকেট না পেলেও দুই উইকেট পেয়েছেন পঞ্জাব লেগস্পিনার মার্কণ্ডে। কিন্তু অভিজ্ঞতায় তাঁদের হারিয়ে দিয়েছেন নাদিম। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেট পেয়েছেন ঝাড়খণ্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার।