ধাক্কা: স্বপ্নের অভিষেক জেমিসনের। নিলেন কোহালির উইকেটও। এপি
নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পরে ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল মেনে নিলেন, তাঁদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন করে তুলেছিল টেস্টে অভিষেক ঘটা নিউজ়িল্যান্ডের কাইল জেমিসনের বল হাতে ‘অনবদ্য’ ধারাবাহিকতা।
১৪ ওভার বল করে ৩৮ রানে তিন উইকেট নেন জেমিসন। তিনি প্যাভিলিয়নে ফেরান চেতেশ্বর পুজারা (১১), বিরাট কোহালি (২) ও হনুমা বিহারীকে (৭)। বড় রান পাননি ওপেনার পৃথ্বী শ-ও। টিম সাউদির বলে তিনি আউট হন ১৬ রানে।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অজিঙ্ক রাহানে (৩৮ ব্যাটিং) ছাড়া মায়াঙ্কই (৩৪) প্রথম দিন নিউজ়িল্যান্ড বোলারদের আক্রমণের সামনে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সফল হয়েছেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনের শেষে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ১২২। অজিঙ্কের সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন ঋষভ পন্থ। তিনি অপরাজিত রয়েছেন ১০ রানে। উইকেটকিপার হিসেবে এই টেস্টে যে ঋদ্ধিমান সাহার চেয়ে ঋষভ পন্থ এগিয়ে, তা আনন্দবাজারেই প্রথম লেখা হয়েছিল।
ভারতীয় দলের এই ব্যাটিং বিপর্যয় নিয়ে প্রথম দিনের শেষে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছিল কারণ বেশ ভাল গতিতেই হাওয়া বইছিল। ব্যাটসম্যানদের জন্য যা সোজা নয়। বিশেষ করে প্রথম দিন এমন একটা পিচে।’’ যোগ করেন, ‘‘ব্যাটসম্যান হিসেবে কখনই এমন পিচে মনে হবে না থিতু হতে পেরেছি।’’
মায়াঙ্ক প্রশংসা করেন জেমিসনের বোলিংয়ের। তাঁর কথায়, ‘‘জেমিসন ঠিক জায়গায় বলটা রাখছিল। ভাল বাউন্সও পাচ্ছিল। নতুন বল দারুণ ভাবে ব্যবহার করেছে। তা ছাড়া উইকেট থেকেও বোলিং করতে গিয়ে ও সাহায্যও পাচ্ছিল।’’
এই পরিবেশে ঠিক কী ভাবে খেলতে হবে, সে ব্যাপারটা মাথায় রাখার উপরে বেশি জোর দিতে চান মায়াঙ্ক। ‘‘এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ব্যাট করতে নামার সময় কী রকম পরিবেশে আমরা খেলছি সেটা খেয়াল রাখতে হয়।’’ ওপরের সারির পাঁচ ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ার পরে প্রথম ইনিংসে দল কত রান তুলতে পারে তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি মায়াঙ্ক। তবে তার আশা, অজিঙ্ক রাহানে দীর্ঘ সময় ক্রিজে থাকতে পারবেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেবেন ঋষভ পন্থও।
যাঁকে নিয়ে ভারতীয় শিবিরে এত প্রশংসা, সেই জেমিসন বলছেন, ‘‘বিরাটের উইকেট পাওয়াটা বড় প্রাপ্তি। বিশ্বের সর্বত্র রান করেছে বিরাট। সঙ্গে পুজারাকেও দ্রুত ফেরানোয় বাড়তি প্রেরণা পেয়েছিলাম।’’ যোগ করেন, ‘‘উচ্চতার কারণে অতিরিক্ত বাউন্স পেতে সুবিধা হয়েছে। ব্যাটসম্যানেদের বিরুদ্ধে দ্বৈরথে খাটো লেংথের বল আমার একটা বড় অস্ত্র।’’
অভিষেক টেস্টেই ছেলের এই আগুনে বোলিং দেখে উচ্ছ্বসিত কাইলের বাবা মিচেল। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ উচ্চতার জন্য এক সময়ে স্কুলে বন্ধুদের হাসি-মস্করার পাত্র হত কাইল। তখন ছেলে খুব মুষড়ে পড়ত। কাইলকে বলেছিলাম, তুমি একদিন এই উচ্চতার কারণেই নিউজ়িল্যান্ডের গর্বের কারণ হবে। সেটা আজ বাস্তব হল। দুঃখ এটাই ওর মা শেরিল মাঠে আসতে পারেনি।’’