ফাইনালে ওঠার উচ্ছ্বাস। মুসেত্তিকে হারিয়ে বিশেষ কায়দায় উল্লাস জোকোভিচের। ছবি: পিটিআই।
স্ট্রেট সেটে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছেন নোভাক জোকোভিচ। ঘাসের কোর্টে দাপট দেখিয়েছেন তিনি। অথচ তাঁর উইম্বলডনে খেলা নিয়েই অনিশ্চয়তা ছিল। প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার তিন-চার দিন আগেও তিনি জানতেন না যে উইম্বলডনে খেলতে পারবেন। নিজেই সে কথা জানিয়েছেন নোভাক।
ইটালির লোরেঞ্জো মুসেত্তিকে স্ট্রেট সেটে (৬-৪, ৭-৬, ৬-৪) হারিয়ে জোকোভিচ বলেন, “উইম্বলডন শুরু হওয়ার আট দিন আগে আমি লন্ডনে এসেছিলাম। প্রতিযোগিতা শুরুর তিন-চার দিন আগেও আমি জানতাম না, খেলতে পারব কি না। কিন্তু নাম তুলিনি। সূচি তৈরি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলাম।”
অনুশীলন তাঁকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। তার পরেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। জোকোভিচ বলেন, “অনুশীলনে বিশ্বের প্রথম সারির কয়েক জন প্লেয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকটা সেট খেলেছিলাম। তাতে বুঝতে পেরেছিলাম, শুধু উইম্বলডনে নামা নয়, অনেক দূর যেতে পারব। অনেকটা আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম। ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নেমেছিলাম। তার জন্য আমার দলকেও অনেক ধন্যবাদ।”
ছোট থেকেই উইম্বলডনের ঘাসের কোর্টে খেলার ও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন জোকোভিচ। সেই স্বপ্নের কথাও জানিয়েছেন তিনি। ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক বলেন, “আমি অনেক বার বলেছি যে ছোট থেকেই উইম্বলডনে খেলা ও জেতার স্বপ্ন দেখতাম। সাত বছর বয়সে মাথার উপর দিয়ে বোমারু বিমান উড়ে যেতে দেখেছি। তখনও বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী কোর্টে খেলার স্বপ্ন দেখেছি। উইম্বলডন ট্রফির গুরুত্ব আমার কাছে সবচেয়ে বেশি। আমি যখনই ঘাসের কোর্টে নামি, টেনিসকে কৃতজ্ঞতা জানাই।”
গত বারও উইম্বলডন ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন জোকোভিচ ও কার্লোস আলকারাজ়। সে বার হারতে হয়েছিল জোকোভিচকে। এ বারও নিজের সেরাটা দেবেন বলে জানিয়েছেন জোকোভিচ। ডান হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করিয়ে উইম্বলডন খেলতে এসেছেন তিনি। অথচ, অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের ঘাসের কোর্টে অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে জোকোভিচকে। কোর্টের মধ্যে নড়াচড়াতেও অস্ত্রোপচারসুলভ কোনও আড়ষ্টতা নেই। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অনায়াসে পৌঁছে যাচ্ছেন। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে প্রতিপক্ষকে গোটা কোর্টে দৌড় করিয়ে বেদম করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল খেলতে নামা ২২ বছরের প্রতিপক্ষকে ভুল করতে বাধ্য করেছেন। নেটের কাছে ড্রপ শট খেলে মুসেত্তিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। সব মিলিয়ে জোকোভিচ চেনা ফর্মে।
এ বার প্রতিটি ম্যাচ জেতার পরে র্যাকেটকে নিয়ে ভায়োলিন বাজানোর কায়দার উল্লাস করেছেন জোকোভিচ। তাঁর মেয়ে সদ্য এই বাজনা শিখছে। সেই কারণেই এই ধরনের ভঙ্গিতে উল্লাস করছেন তিনি। সেন্টার কোর্টে প্রতিপক্ষের সমর্থন বেশি থাকলেও ম্যাচে তার কোনও প্রভাব পড়ছে না। রবিবার আরও এক বার ভায়োলিন বাজিয়ে উল্লাস করার লক্ষ্যে নিজেকে তৈরি করছেন জোকোভিচ।