Aditi Jaiswal

Aditi Jaiswal: বিশ্বকাপের সঙ্গে এশিয়ান গেমসকেও পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন অদিতি

করোনা অতিমারিতে দু’বছর আগে লকডাউনের সময়ে শীতলাতলার রাস্তায় একা অনুশীলন করতেন অদিতি। পথচলতি কেউ কেউ পুলিশের ভয় দেখাতেন তাঁকে।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৭
Share:

একাগ্র: লক্ষ্যভেদের অনুশীলনে মগ্ন অদিতি জয়সওয়াল। নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় তিরন্দাজির আসরে ‘বাংলার বধূ’ দীপিকা কুমারীকে পিছনে ফেলে উত্থান বাংলার মেয়ের। বাগুইআটির শীতলাতলার কলেজ পড়ুয়া অদিতি জয়সওয়াল এখন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত জুন মাসে কলম্বিয়াতে হতে যাওয়া তিরন্দাজি (স্টেজ ফোর) বিশ্বকাপের জন্য। বলছেন, ‍‘‍‘বিশ্বকাপে চমক দেওয়ার চেয়েও নিষ্ঠা সহকারে নিজের সেরাটা তুলে ধরতে চাই।’’

Advertisement

করোনা অতিমারিতে দু’বছর আগে লকডাউনের সময়ে শীতলাতলার রাস্তায় একা অনুশীলন করতেন অদিতি। পথচলতি কেউ কেউ পুলিশের ভয় দেখাতেন তাঁকে। সেই মেয়ে এখন জাতীয় তিরন্দাজি দলের হয়ে কয়েক মাসের মধ্যে বিশ্বকাপে নামতে চলেছেন।

বাড়িতে বাবা, মা ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠরত দাদা রয়েছেন। বাবা রাজকুমারবাবু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মা উমাদেবী গৃহবধূ। কী ভাবে তিরন্দাজিতে আগমন? অদিতি বলেন, ‍‘‍‘ছোট বেলায় খুব ছটফটে ছিলাম। মা আমাদের দুই ভাই-বোনকে নিয়ে গিয়েছিলেন সাইয়ে। দাদা তিরন্দাজি করত। কিন্তু দাদাকে দেখে আমি নিজেই একদিন তির-ধনুক হাতে তুলে নিই,’’ ২০১৩ সালে অদিতি সাইয়ে তিরন্দাজি শুরু করেছিলেন। সেই সময়ে সেখানে অলিম্পিক্স ও বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বাঙালি তিরন্দাজ ভাই-বোন দোলা ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনুশীলন করতেন। তাঁদের দেখেই দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামার ইচ্ছা তৈরি হয় অদিতির। স্কুল স্তরে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে পদকপ্রাপ্তির পরে তা আরও বেড়ে যায় বলে জানালেন কোরীয় তিরন্দাজ কুবেন চ্যাং-এর ভক্ত অদিতি। তাই ২০১৭ সাল থেকে রিকার্ভ বিভাগেই মন দিয়ে অনুশীলন শুরু করেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে অর্থশাস্ত্র নিয়ে পাঠরত এই ছাত্রী। গত দেড় বছর ধরে দোলা ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিরন্দাজি অ্যাকাডেমিতেই নিচ্ছেন আধুনিক পাঠ। কী ভাবে জাতীয় দলের দরজা খুলল? জম্মুতে সম্প্রতি জাতীয় তিরন্দাজির আসর বসেছিল। সেখানেই অদিতি ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন। এই প্রতিযোগিতা থেকেই হয়েছে জাতীয় দল নির্বাচন। যেখানে ৩২ জনের মধ্যে প্রথম ১২ তিরন্দাজ ও দেশের সেরা চার জন প্রতিযোগীকে নিয়ে চলে ট্রায়াল। সেখান থেকে আট জন বাদ যান। এই আট জনকে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলানো হয়। সেখানে প্রথম হওয়া চার জন সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমসের জন্য। বাকি চার জন চতুর্থ বিশ্বকাপে যাবেন। সেই দলে রয়েছেন বাংলার মেয়ে অদিতি। যিনি ট্রায়ালে মহিলাদের ক্রমপর্যায়ে উপরের দিকে থাকা তিরন্দাজ দীপিকাকে পিছনে ফেলেছেন পয়েন্ট সংগ্রহে।

Advertisement

কোচ রাহুল বলছেন, ‍‘‍‘অদিতির বড় গুণ ও হাওয়ার বিরুদ্ধেই তির ছোড়ে ভাল। জম্মুতেও প্রশংসা পেয়েছে। উল্টোডাঙার পুলিশ মাঠে ও রবীন্দ্র সরোবরে ওকে অনুশীলন করিয়ে আরও পোক্ত করছি।’’ অদিতি বলছেন, ‍‘‍‘রাহুলদা ও দোলাদিদির কাছে অনুশীলন করে ৩০-এর মতো স্কোর বেড়েছে। আমার পাউন্ডেজ (তির ছোড়ার সময়ে কনুইয়ের অবস্থানের সূচক) ৩৮। বিশ্বকাপের আগে তা ৪০ করতে হবে। লক্ষ্য ৪২ করা। তার জন্য ধ্যান-সহ সাত ঘণ্টা অনুশীলন করছি। বিশ্বকাপের পরে ফের আর এক বার ট্রায়াল হবে এশিয়ান গেমসের জন্য। তার জন্যও প্রস্তুতি জারি আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement