(বাঁদিকে) রায়ান উলফ এবং অ্যাডাম জনসন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
খেলতে খেলতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আইস হকি খেলোয়াড় অ্যাডাম জনসনের। ২৯ বছরের খেলোয়াড়ের ঘাড় কেটে যায় স্কেটের ব্লেডে। দর্শকদের সামনেই লুটিয়ে পড়েন নটিংহ্যাম প্যান্থার্সের রক্তাক্ত জনসন। তাঁকে বাঁচাতে বরফের উপরেই চিকিৎসা শুরু করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তবু শেষ রক্ষা করা যায়নি। তাঁর মৃত্যু গভীর নাড়া দিয়েছে ক্রীড়াবিশ্বকে।
খেলার মাঠে দুর্ঘটনা নতুন নয়। তবে এমন রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে করতে মৃত্যুর মতো দৃশ্য অভাবনীয়। মানতে পারছেন না জনসনের বাগদত্তা রায়ান উলফ। শোকে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন তিনি। আগামী গ্রীষ্মেই তাঁদের বিয়ে করার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই স্বপ্নের মৃত্যু। বেশ কিছু দিন ধরে তাঁরা এক সঙ্গেই থাকতেন। সমাজমাধ্যমে জনসনের সঙ্গে নিজের একাধিক ছবি অনুগামীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন উলফ, সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘আমার মিষ্টি মিষ্টি দেবদূত। আমি চিরকাল তোমার অভাব অনুভব করব। আর সারা জীবন তোমাকে ভালবেসে যাব।’’
আইস হকির বরফের কোর্টের উপর রক্তাক্ত জনসনের চিকিৎসার সময় দু’দলের খেলোয়াড়েরা গোল করে তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যেন একটা ঘর তৈরি করা হয়েছিল। দর্শকদের সামনে জনসনের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। খেলোয়াড়েরাও দর্শকদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সতীর্থ এবং প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন উলফ। তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। জনসনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
জনসন নেই মানতে পারছেন না রিলি টুফতে। জনসনের সঙ্গে কলেজ স্তরে খেলেছেন তিনি। রিলি বলেছেন, ‘‘বিশ্বাস করতে পারছি না। এমন দুর্ঘটনার কথাই ভাবা যায় না। জনসন নেই, এটা ভাবতেই চাইছি না। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে আমরা এক সঙ্গে খেলতাম। ওর মতো বন্ধু কেউ নেই আমার।’’
প্রাথমিক ভাবে শোক প্রকাশের ভাষা খুঁজে পায়নি জনসনের ক্লাবও। মৃত্যুর সংবাদ জানানোর বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে নটিংহ্যাম প্যান্থার্সের ওয়েবসাইটে ভেসে ওঠে শোকবার্তা। তাতে লেখা হয়, “আমাদের দল জনসনের অভাব অনুভব করবে। ওকে আমরা ভুলতে পারব না। ৪৭তম জার্সি পরে খেলত। ভাল খেলোয়াড়ের পাশাপাশি ভাল মানুষও ছিল। জনসনের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। ওর কাছের মানুষদের সকলের জন্যই কঠিন সময়। আমরা স্তম্ভিত।” জনসনের প্রাক্তন ক্লাব অন্টারিয়ো রেন। তারা লিখেছে, ‘‘আমাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। জনসন আমাদের প্রাক্তন ফরোয়ার্ড। সরকারি ভাবে ও হয়তো শনিবার মারা গিয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে জনসন সব সময় বেঁচে থাকবে। আমরা জানি না এমন কঠিন সময়ে কী ভাবে ওর পরিবারকে সমবেদনা জানানো উচিত।’’
জনসনের মৃত্যু স্তম্ভিত করে দিয়েছে ইংল্যান্ডের ক্রীড়ামহলকে। সব খেলার সংস্থা, ক্লাব শোকপ্রকাশ করেছে। অনেকে জনসনের স্মরণ সভা আয়োজন করার কথা বলেছেন।