মুম্বইয়ে লঞ্চডুবির পর পুলিশের উদ্ধার অভিযান। ছবি: পিটিআই।
স্টিয়ারিংয়ের গোলযোগই প্রাণ কেড়েছে ১৫ জন যাত্রীর। মুম্বইয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় এ বার এমনটাই দাবি করল নৌবাহিনীর সূত্র। এর পরেই নৌবাহিনীর ওই স্পিডবোটচালকের বিরুদ্ধে অবহেলা, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা ইত্যাদি-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর মুম্বই উপকূলে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া থেকে এলিফ্যান্টা যাওয়ার পথে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চের সঙ্গে নৌসেনার স্পিডবোটের সংঘর্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ৯৮ জনকে। প্রাথমিক ভাবে নৌসেনার তরফে জানানো হয়, ওই স্পি়ডবোটটির ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হচ্ছিল। সেই সময়েই দ্রুতগতির স্পিডবোটটি ‘নীলকমল’ নামে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চে গিয়ে ধাক্কা মারে। এ বার নৌসেনার এক সূত্র জানাল, স্পিডবোটের স্টিয়ারিংয়ে আগে থেকেই প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। তার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
দুর্ঘটনার সময়ে স্পিডবোটে ছ’জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের মৃত্যু হয়েছে। সেই দু’জনেরই এক জন জানিয়েছেন, স্পিডবোটটি প্রস্তুতকারক দলের অংশ ছিলেন তিনি। ওই স্পিডবোটে গোড়া থেকেই কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। এমনকি, বুধবার স্পিডবোটটির ইঞ্জিন পরীক্ষার সময়েও বোটে থাকা সকলে আগে থেকেই জানতেন স্টিয়ারিংয়ে গোলযোগের কথা। ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতেও দেখা যাচ্ছে, যাত্রিবাহী লঞ্চের খুব কাছাকাছি চলে আসার মূহূর্তেও স্পিডবোটের চালক প্রাণপণ চেষ্টা করছেন নৌকার অভিমুখ ঘোরানোর। কিন্তু সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। সম্ভবত স্টিয়ারিংয়ে ত্রুটির কারণেই এই বিপত্তি। তা ছাড়া, মহারাষ্ট্র মেরিটাইম বোর্ডের নথি বলছে, ওই লঞ্চটিতে ৬ জন কর্মী এবং ৮৪ জন যাত্রীকে বহন করার অনুমতি ছিল। কিন্তু বুধবার লঞ্চটিতে শতাধিক যাত্রী ওঠেন। দুর্ঘটনার পরেই ওই লঞ্চের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কী ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে এখনও তদন্ত চালাচ্ছে মুম্বই পুলিশ। পাশাপাশি নৌসেনাও একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তকারী দল গঠন করে পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।