উচ্ছ্বাস: দলের দুরন্ত জয় দেখে উচ্ছ্বসিত জার্মান সমর্থকেরা। গেটি ইমেজেস।
এ বারের ইউরো ২০২০ শুরুর আগে ওয়াকিম লো-র প্রশিক্ষণাধীন জার্মান দলের সাফল্য নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই সন্দিহান ছিলেন। প্রতিযোগিতায় প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হারের পরে যা আরও বাড়ে। কিন্তু শনিবার রাতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের পর্তুগালের বিরুদ্ধে জার্মানদের ৪-২ জয়ের পরে সে সব অনুমান ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যদিও জার্মান কোচ লো এ সব নিয়ে ভাবতে নারাজ। তাঁর মতে, আগ্রাসী মনোভাবেই পর্তুগালকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তাঁর দল।
সাংবাদিকদের পর্তুগাল ম্যাচের পরে লো বলেন, ‘‘প্রথম ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে হারের পরেই আমরা ঠিক করে নিয়েছিলাম, পরের ম্যাচে অন্য ভাবে আক্রমণ করতে হবে পর্তুগাল রক্ষণকে। যা আমরা সহজেই করতে পারব।’’ কী ছিল সেই রণনীতি? লো-র কথায়, ‘‘আক্রমণে যাওয়া ছাড়াও বল তাড়া করে পর্তুগিজদের প্রতি মুহূর্তেই বুঝিয়ে দিতে হবে ম্যাচটা আমরা জিততে নেমেছি।’’ ইউরোতে এ বার প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই গ্রুপ ‘এফ’-কে ‘মারণ গ্রুপ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। যে গ্রুপে রয়েছে গত বারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, জার্মানি ও হাঙ্গেরি। গ্রুপের প্রথম দু’ম্যাচের পরে চার পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। জার্মানি ও পর্তুগাল দু’জনের পয়েন্ট তিন। হাঙ্গেরির পয়েন্ট এক। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে গেলে জার্মানির সামনে এখন পাঁচটি অঙ্ক রয়েছে। কারণ, এই গ্রুপ থেকে তৃতীয় হওয়া দলের সামনেও খুলতে পারে নক-আউটের দরজা। কারণ, সেরা চার তৃতীয় স্থানাধিকারী দলকে নকআউটে জায়গা দেওয়া হবে।
থোমাস মুলারদের ম্যাচ বাকি রয়েছে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে। ১)শেষ ম্যাচে ফ্রান্স যদি পর্তুগালের বিরুদ্ধে না হারে এবং জার্মানি হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে জেতে তা হলে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে নক-আউটে যাবে ইউরোতে তিন বারের চ্যাম্পিয়নেরা। ২) যদি শেষ ম্যাচে ফ্রান্স জেতে এবং জার্মানি ড্র করে, তা হলেও পরের রাউন্ডে যেতে পারবে জার্মানি। ৩) শেষ ম্যাচে যদি জার্মানরা জেতে এবং ফ্রান্স না জিততে পারে, তা হলে গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে যাবে। ৪) যদি ফ্রান্স হারে এবং জার্মানি শেষ ম্যাচে ড্র করে, তা হলে গ্রুপে তৃতীয় হবে জার্মানি। ৫) যদি জার্মানি ও পর্তুগাল দু’জনেই হারে, তা হলেও জার্মানি গ্রুপে তৃতীয় হবে।
পর্তুগালকে হারানোর ম্যাচে মুলারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জার্মান কোচ। এ দিকে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের শেষ ম্যাচে খেলতে হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে। যারা গ্রুপে চার পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে শীর্ষে। দু’ম্যাচের পরে তিন পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে পর্তুগাল।
প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে গেলে পর্তুগালের সামনে তিনটি রাস্তা এ রকম: ১) শেষ ম্যাচে ফ্রান্সকে হারালেই নকআউটের রাস্তা খুলে যাবে। ২) যদি ফ্রান্সের বিরুদ্ধে পর্তুগাল ড্র করে এবং হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে জার্মানি হারে। ৩) যদি পর্তুগাল জেতে এবং জার্মানি জিততে না পারে, তা হলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নকআউটে যাবে গত বারের ইউরো সেরারা। পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘নিজেদের রণনীতি সংগঠিত করেই নেমেছিলাম আমরা। শুরুটা ভালই ছিল। তবে জার্মানি বেশি ইতিবাচক ফুটবল খেলেছে। আমাদের প্রতি-আক্রমণগুলো থেকে তৈরি হওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত।’’