শেখ ওয়াশিম। নিজস্ব চিত্র।
ক্রিকেটের শখ ছোটবেলা থেকেই। তবে পাড়ার মাঠের শখের ক্রিকেট নয়, বরং পেশাদার হওয়াই ছিল স্বপ্ন। এ বার তাঁর সামনেই স্বপ্নপূরণের হাতছানি। বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে সেই স্বপ্নের উড়ানে গোয়ায় পাড়ি দেবেন শেখ ওয়াশিম। দিল্লির অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি দলের জার্সিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে দেখা যাবে গোয়ায়।
বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত এলাকা চিনপাইয়ের নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিম মাধ্যমিকের পর সিউড়ির ডিএসএ ময়দানে কোচিং নেওয়া শুরু করেন। বাবা শেখ শামিম পেশায় গাড়িচালক। টেনেটুনে সংসার চলে। তবে সংসারে সচ্ছলতা না থাকলেও ছেলের ক্রিকেটে ভাটা পড়তে দেননি।
সম্প্রতি দিল্লির রোহিনী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গেম চেঞ্জার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ওয়াশিম। ২১ জানুয়ারি সেই টুর্নামেন্টে খেলতে দিল্লির পথে রওনা দেন। দু’দিন পর নিজের পারফরম্যান্সের জেরে গেম চেঞ্জার-এ জয়ী হন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। এর পরই তাঁর কাছে ফোন আসে। গোয়ায় টি-টোয়েন্টি সিসিএল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হওয়ার খবর পান ফোনেই। এই সাফল্যে পর স্বভাবতই আপ্লুত ওয়াসিম। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছা ছিল। আর সেই ইচ্ছাপূরণ করারও সুযোগ এসে গিয়েছে। এ জন্য বাবা-মা এবং মাসির বিশেষ অবদান রয়েছে।’’
ওয়াসিমের বাবা বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গাড়িচালক। ছেলের হাতের সামনে এমন সুবর্ণ সুযোগ আসায় আনন্দাশ্রু ধরে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘এমন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ছেলে খেলার সুযোগ পাওয়ায় গর্বিত। প্রত্যেক বাবা-মা-ই যেন ছেলেমেয়েকে এগিয়ে যেতে সুযোগ দেন।’’
গোয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা শুরু হতে বাকি মাত্র ২৭ দিন। সেখানেই ওয়াসিম খেলবেন দিল্লি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। ওয়াশিম জানেন, গোয়ায় তাঁর পারফরম্যান্সের জেরে খুলে যেতে পারে জাতীয় স্তরের অন্যান্য প্রতিযোগিতার দরজাও। সেই আশাতেই স্বপ্নের উড়ানে পাড়ি দিতে চলেছেন!