জয়ী: পদক গলায় প্রলয় বন্দোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স মিটে (আমন্ত্রণমূলক) জীবনের সেরা পারফরম্যান্স করে চারটি ইভেন্টে সোনা জিতলেন কোচবিহারের প্রলয় বন্দোপাধ্যায়। কোচবিহার শহরের ৬৬ বছরের ‘তরুণ’ প্রলয়, দেশে-বিদেশে প্রবীণদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আগেও বহু পদক জিতেছেন। কিন্তু চারটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে, চারটিতেই সোনা জয়, আগের সব সাফল্যকে ছাপিয়ে গিয়েছে। প্রতিযোগিতায় সবমিলিয়ে পাঁচটি পদক জিতে পুরুষদের বিভাগে ‘চ্যাম্পিয়ন’ খেতাবও পেয়েছেন প্রলয়।
ছত্তীসগড়ের রায়পুরে ১৪-১৬ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা হয়। তবে এমন সাফল্যের মধ্যেও তিনি উদ্বেগে রয়েছেন বাড়ি ফেরা নিয়ে। বুধবার, কলকাতা থেকে কোচবিহারে ফেরার ট্রেন টিকিট রয়েছে। কিন্তু ট্রেন পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার জেরে, সেটা আদৌ সম্ভব হবে কিনা সেটাই ভাবাচ্ছে তাঁকে। মঙ্গলবার রায়পুর থেকে ফোনে প্রলয় বললেন, “আজ রাতেই বাসে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হচ্ছি। বুধবার, পদাতিকের টিকিট আছে। ঠিকঠাক বাড়ি ফেরাটাই এখন মাথায় ঘুরছে।”
রায়পুরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সফল প্রবীণ ক্রীড়াবিদদের নিয়ে আমন্ত্রণমূলক ওই প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল। ছত্তীসগড় মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স অ্যাসোসিয়েশন ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেল ঙ্গানা, ওড়িশা, হরিয়ানা, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের মতো ১৪টি রাজ্য থেকে প্রতিযোগীরা বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেন। রাজ্য দলের হয়ে তাতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পান কোচবিহারের প্রলয়। ১০০ মিটার, ২০০ মিটার দৌড়, হাইজাম্প ও ১০০ মিটার হার্ডলস রেসের ব্যক্তিগত ইভেন্টে নামেন তিনি। চারটি ইভেন্টেই সোনা জেতেন। ১০০ মিটারে জীবনের সেরা সময় করেন। প্রলয় বললেন, “বাংলাদেশে ১৪.৩ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড় শেষ করে সোনা জিতেছিলাম। এবারে ১৪.১ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করতে পেরে ভাল লাগছে। হাইজাম্প, দুশো মিটার দৌড়ের পারফরম্যান্সেও অনেক উন্নতি করতে পেরেছি। এটাও তৃপ্তির।” দলগত ভাবে বাংলার চার সদস্যের রিলে রেসেও রুপো জয়ী দলের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
কোচবিহার মাস্টার্স স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমেন ভট্টাচার্য বলেন, “জীবনের সেরা পারফরম্যান্স করেছেন প্রলয়। আমরা দারুণ খুশি। ফিরলেই ওঁকে সংবর্ধনা দেব। আমরাও ওঁর ঠিকমতো ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছি।” বয়সের বাধা উপেক্ষা করার রসায়ন নিয়ে প্রশ্ন করায় প্রলয় বলছেন, “সময়মতো কাজ করা, ঘুমনো, খাওয়াদাওয়া জরুরি। ফিটনেস ধরে রাখার জন্য দরকার নিয়মিত অনুশীলন। বরাবর এই সব ব্যাপারে কোনও আপোস করিনি। গত কয়েকমাসে ছ’কেজি ওজন কমিয়েছি। তা ছাড়া এখনও জেতার খিদেটা ছাড়তে পারিনি।’’