পুরনো সেই দিনের কথা। লক্ষ্মণ ও দ্রাবিড়ের জুটির কুড়ি বছর পূর্ণ হল। ছবি - বিসিসিআই
ঠিক কুড়ি বছর আগের কথা। ২০০১ সালের ১৪ মার্চ ক্রিকেট বিশ্ব এক অবিশ্বাস্য জুটির সাক্ষী থেকেছিল। ইডেনে এই দিনেই পুরোটাই ব্যাট করেছিলেন ভি ভি এস লক্ষ্মণ এবং রাহুল দ্রাবিড়। সেটা ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন। তৃতীয় দিনের শেষে লক্ষ্মণ ১০৯ রানে এবং দ্রাবিড় ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ভারতের রান ছিল ৪ উইকেটে ২৫৪। চতুর্থ দিন পুরোটা ব্যাট করেন লক্ষ্মণ এবং দ্রাবিড়। লক্ষ্মণ ২৭৫ রানে ও দ্রাবিড় ১৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সারা দিনে যোগ হয় ৩৩৫ রান।
স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রান করার পর ভারতের প্রথম ইনিংস মাত্র ১৭১ রানে শেষ হয়ে যায়। ২৭৪ রানে পিছিয়ে ছিল ভারত। যদিও সেই ইনিংসেও ৫৯ রান করেছিলেন লক্ষ্মণ। তাই লক্ষ্মণ ছন্দে থাকায় তাঁকে ফলো অন করা ইনিংসে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়। বরাবর তিন নম্বরে ব্যাট করা দ্রাবিড়কে ছয় নম্বরে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। শেষ ইনিংসে লক্ষ্মণ যখন ব্যাট করতে নামেন তখন ভারতের ১ উইকেটে ৫২ রান। এরপর একে একে ফিরে যান সচিন ও সৌরভ। তবে লক্ষ্মণ দমে যাননি। দ্রাবিড়কে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ঐতিহাসিক জুটি। পঞ্চম উইকেটে ৩৭৬ রান যোগ করেন দুজন। লক্ষ্মণ থামেন ২৮১ রানে। দ্রাবিড় ফেরেন ১৮০ রানে। বাকিটা ইতিহাস। দুই ব্যাটসম্যানের লড়াকু ইনিংসের পাশাপাশি হরভজন সিংহও ছিলেন দারুণ ছন্দে। প্রথম ইনিংসে হ্যাটট্রিক করেন ভাজ্জি। দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন ৭৩ রানে ৬ উইকেট। ফলে ১৭১ রানে সেই টেস্ট জিতে সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত।
লক্ষ্মণ ও দ্রাবিড়ের সেই জুটির জন্যই শুধু ইডেন টেস্ট নয়, চেন্নাই টেস্টে জিতে সিরিজও পকেটে পুরেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতীয় দল। একই সঙ্গে হায়দরাবাদির সেই ইনিংস নাকি ভারতীয় ক্রিকেটের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এমনটাই মনে করেন সৌরভ।
সেই টেস্টের প্রসঙ্গ উঠলেই অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়া এখনও আফসোস করেন। বলেন, “টেস্টে ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম দাপুটে ইনিংস। একজন ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে বারবার এমন ইনিংস দেখতে ইচ্ছে করে। এমন ইনিংস দেখার জন্য অনেক মাইল হেঁটে যাওয়া যায়। কিন্তু বিপক্ষ দলের অধিনায়ক হিসেবে এমন ইনিংস দেখা খুবই যন্ত্রণার। সেই যন্ত্রণা এখনও আমাকে কষ্ট দেয়। চতুর্থ দিন বল লাট্টুর মত ঘুরলেও শেন ওয়ার্নকে অনায়াসে খেলেছিল লক্ষ্মণ। এমনকি বাকিদেরও দুজন অনায়াসে খেলে দেয়। ফলে আমার পক্ষে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।”