ফের ছয় বাঙালির ভাটনগর সম্মান

তাপসবাবু একা নন, এ বছর ১২ জন ভাটনগর পুরস্কার প্রাপকের মধ্যে ছ’জনই বাঙালি। যাকে সাত বছর পরে ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি’ বলছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৮
Share:

তাপসকুমার মাজি, অনিন্দ্য সিংহ, শঙ্কর ঘোষ, সুবিমল ঘোষ ও সৌমেন বসাক (বাঁ-দিক থেকে)

কার্বন ডাই-অক্সাইড বা মিথেন পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক। জলবায়ু বদলের ক্ষেত্রেও তা অন্যতম উপাদান। সেই ‘দুষ্ট’ গ্যাসগুলিকেই কী ভাবে ধাতু দিয়ে শুষে নিয়ে তাকে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তারই পথ বাতলেছেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। তার জন্য এ বার বেঙ্গালুরুর ‘জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানী তাপসকুমার মাজি পেলেন দেশের বিজ্ঞান গবেষণার সেরা স্বীকৃতি, শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার।

Advertisement

তাপসবাবু একা নন, এ বছর ১২ জন ভাটনগর পুরস্কার প্রাপকের মধ্যে ছ’জনই বাঙালি। যাকে সাত বছর পরে ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি’ বলছেন অনেকে। ২০১২ সালে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারের তালিকাতেও ছ’জন বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী রসায়নে তাপসবাবু, গণিতে নীনা গুপ্ত, পদার্থবিজ্ঞানে অনিন্দ্য সিংহ ও শঙ্কর ঘোষ, জীববিজ্ঞানে সৌমেন বসাক, ভূবিজ্ঞানে সুবিমল ঘোষ ২০১৯ সালে দেশের বিজ্ঞান গবেষণায় সেরা পুরস্কার পেয়েছেন।

এই আনন্দেও অনেকের আক্ষেপ, এ বছরের প্রাপকদের মধ্যে একমাত্র নীনাদেবীই রাজ্যে গবেষণারত। তিনি বরাহনগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) রাশিতত্ত্ব ও গণিত বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। বেথুন কলেজের এই প্রাক্তনী ইতিমধ্যেই ‘জারিস্কি ক্যানসেলেশন প্রবলেম’-এর সমাধান বাতলে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। রুশ গণিতজ্ঞ অস্কার জারিস্কির নামাঙ্কিত এই গাণিতিক সমস্যা সাত দশক ধরে অমীমাংসিত ছিল। দেশের নতুন প্রজন্মের গণিতজ্ঞদের মধ্যে অগ্রগণ্য নীনাদেবী পেয়েছেন রামানুজন পুরস্কারও।

Advertisement

নোবেলজয়ী পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান তাঁর কণা-পদার্থবিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণায় যে-‘ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম’ সৃষ্টি করেছিলেন, তার শেষে ‘ইনফিনিটি’ বা অসীম ছিল উত্তর। কিন্তু ‘অসীম’-কে এড়িয়ে বীজগাণিতিক উপায়ে ‘ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম’ সমাধানের পথ বাতলেছেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের বিজ্ঞানী অনিন্দ্য সিংহ। তিনি বলছেন, ‘‘নতুন ধরনের উত্তরও মিলছে।’’ এই গাণিতিক ব্যাখ্যাই এ বার পদার্থবিজ্ঞানে সেরার শিরোপা এনে দিয়েছে ডন বস্কো স্কুল, যাদবপুর ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনিন্দ্যবাবুকে। পদার্থবিজ্ঞানে বাঙালির ‘ঐতিহ্য’ সুবিদিত। সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের পদার্থবিদ শঙ্কর ঘোষও। তিনি এ বার ভাটনগর পুরস্কার পেয়েছেন।

ইমিউনোলজি, ক্যানসার এবং পরজীবী সংক্রান্ত গবেষণায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজির বিজ্ঞানী সৌমেন বসাক ইতিমধ্যেই পরিচিত নাম। কলকাতা ও ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান দিয়েগোর এই প্রাক্তনী এ বার ভাটনগর পুরস্কার পেলেন। বম্বে আইআইটি-র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সুবিমল ঘোষ জলবায়ু বদল, বর্ষার আঞ্চলিক ভেদ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য গবেষক মহলে পরিচিত। সেই সংক্রান্ত গবেষণাতেই দেশে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement