—প্রতীকী চিত্র।
আনুমানিক চার লক্ষ বছর আগে বরফশূন্য ছিল গ্রিনল্যান্ড। তুন্দ্রা অঞ্চল তখন ছিল রোদ ঝলমলে, সবুজ অরণ্যে ঢাকা। পশুপাখি-পতঙ্গের বাস ছিল সেই সবুজে। সমুদ্রের জলস্তর এখনের তুলনায় ২০ থেকে ৪০ ফুট বেশি ছিল। গোটা পৃথিবীর বহু দেশ, যা কি না এখন লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘর, সে সময় সমাধিস্থ ছিল সমুদ্রগর্ভে। বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আগেই জানতেন, কয়েক লক্ষ বছর আগে কোনও এক সময়ে গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর প্রায় সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঠিক কখন, তা জানা ছিল না। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নতুন গবেষণায় গ্রিনল্যান্ডের প্রায় ১ মাইল পুরু বরফের চাদরের তলায় লুকিয়ে থাকা মাটির স্তর (ঠান্ডাযুদ্ধের সময়ে সংগৃহীত) পরীক্ষা করে তাঁরা নির্দিষ্ট সময়কাল জানতে পেরেছেন। সময়টা হল— প্রায় ৪ লক্ষ ১৬ বছর আগের। প্রায় ১৪ হাজার বছর ধরে বরফশূন্য অবস্থায় ছিল গ্রিনল্যান্ড। সে সময়ে পৃথিবী ও পৃথিবীবাসী আদিম মানুষ এক জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই সময়কাল, তার ব্যাপ্তি, তীব্রতা ও প্রভাব বিশ্লেষণ করে বোঝা সম্ভব হবে, আধুনিক মানুষ ভবিষ্যতের জন্য কোন পৃথিবী তৈরি করছে।
১৯৬৬ সালের জুলাই মাসে আমেরিকান বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর ফুঁড়ে মাটির স্তর সংগ্রহ করেছিলেন। ‘ক্যাম্প সেঞ্চুরি’ নামে একটি অখ্যাত সেনাঘাঁটিতে এই কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছিল। বরফের নীচ পর্যন্ত পৌঁছনোর পরে হিমশীতল পাথুরে মাটির ভিতরে আরও ১২ ফুট গভীর গর্ত খোঁড়েন ইঞ্চিনিয়াররা। সংগ্রহ করা হয়েছিল মাটি। ১৯৬৯ সালে সেই মাটি বিশ্লেষণ করে জিয়োফিজিসিস্ট উইলি ডান্সগার্ড ব্যাখ্যা করেছিলেন, কী ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটেছিল অতীতে। আভাস দিয়েছিলেন, গত ১ লক্ষ ২৫ হাজার বছরে প্রকৃতি কী ভাবে বারবার বদলেছে।