এই ‘রোভার’ই অনুসন্ধান চালাবে মঙ্গলের মাটিতে। ছবি: নাসার সৌজন্যে
‘৭ মিনিটের আতঙ্ক’ অতিক্রম করে মঙ্গলের মাটিতে সফল অবতরণ করল নাসার মার্স রোভার ‘পারসিভিয়ারেন্স’। ইতিমধ্যেই সেই সঙ্কেত এসে পৌঁছেছে লস এঞ্জেলে্সের জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি(জেপিএল)-তে। প্রাথমিক ভাবে নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি 'পারসিভিয়ারেন্স'-এর এবং খুব শীঘ্রই মঙ্গলের মাটিতে ‘অভিযান’ শুরু করবে সে।
প্রায় সাত মাসের যাত্রা শেষে এই সপ্তাহেই মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে ‘পারসিভিয়ারেন্স’। পৃথিবী থেকে প্রায় ২০৪০ লক্ষ কিলোমিটার দূরের মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করেছে বলে সঙ্কেত পেয়েছেন জেপিএল-এর বিজ্ঞানীরা। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল শেষ ৭ মিনিট, যাকে নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, '৭ মিনিটের আতঙ্ক'। সেটাও কাটানো গিয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে পাওয়া সঙ্কেত থেকে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
কেমন সেই আতঙ্ক? 'পারসিভিয়ারেন্স'-এর মধ্যে রয়েছে একটি ৬ চাকার অনুসন্ধান যান। মঙ্গলপৃষ্ঠের ছবি তোলা, মাটির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা, সেই সব ছবি ও তথ্য পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি রয়েছে ওই গাড়িতে। মঙ্গলের মাটিতে প্রচণ্ড গতিতে আছড়ে পড়ার সময় যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য ওই যানটিকে একটি ‘ক্যাপসুলে’র মধ্যে ঢুকিয়ে মঙ্গলযানের সঙ্গে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ৭ মাসের যাত্রার পর মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছেছে 'পারসিভিয়ারেন্স'। শেষ ৭ মিনিটের মধ্যে ওই যান-সহ ক্যাপসুলটি আছড়ে পড়ে ধীরে ধীরে একটি জায়গায় থেমে যাওয়ার কথা।
এই সময়কেই ‘৭ মিনিটের আতঙ্ক’ বলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই সময়টাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং সবচেয়ে জটিল বলে ব্যাখ্যা করেছেন জেপিএল-এর অবতরণ বিভাগের বিজ্ঞানী আল চেন। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠকে আল চেন বলেন, ‘‘সাফল্য কখনওই নিশ্চিত নয়। এটা 'পারসিভিয়ারেন্স'-এর ক্ষেত্রে আরও সত্যি। কারণ, আমরা সবচেয়ে বড়, ভারী ও সবচেয়ে জটিল মঙ্গলযান তৈরি করেছি। সেটাও এমন জায়গায় অবতরণ করাতে যাচ্ছি, যেখানে আগে কেউ কখনও কোনও মহাকাশযান নামানোর চেষ্টা করেনি।’’
এর পর ওই ক্যাপসুল খুলে ভিতর থেকে ৬ চাকার যানটি বেরিয়ে তার অনুসন্ধানের কাজ শুরু করবে। এখন তারই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।